তানোর প্রতিনিধি :
রাজশাহীর তানোরে আলু চাষিরা হেকেম সীড্স বাংলাদেশ লিমিটেডের আলু বীজ নিয়ে বিপাকে পড়েছে। হেকেম সীড্সের বীজ নিয়ে অনেক আলু চাষীর গাছ ভাল ভাবে উঠেনি। অনেক আলু বীজ মাটির নিচে পচে গেছে। এঘটনায় কৃষকরা ক্ষতিপূরণের দাবিতে গতকাল শুক্রবার বিকালে তানোর পৌর এলাকার ধানতৈড় গ্রামের আলুর জমির মাঠে মানববন্ধন করেন।
ক্ষতিগ্রস্থ ধানতৈড় গ্রামের কৃষক জসিম মন্ডল, হাবিকবুর মন্ডল, আ: রশিদ, মিলন, মেছের আলী, মুসা কারিম, সফিকুল, কাশিম মন্ডল, হারুন, আফসার আলী, মতিউসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, আমরা এক কোল্ড ষ্টোরেজের বীজ নিয়ে গতবার আলু চাষ করেছি। আলু ভাল হয়েছিল। এবার হেকেম সীড্স বাংলাদেশ লিমিটেডের বীজ নিয়ে আলুর গাছ ভাল ভাবে উঠেনি। আমাদের জমির মাঠে ২৮০ বিঘা জমিতে হেকেমের আলুর বীজ লাগিয়ে সবারই ক্ষতিগ্রস্থর মধ্যে পড়েছি। পার বিঘা ২০ হাজার টাকা ধরলেও ৫৬ লাখ টাকা কৃষকদের ক্ষতি হবে।
হেকেম সীড্স বাংলাদেশ লিমিটেডের বীজ মার্কেটিং অফিসার রফিকুল ইসলাম আমাদের বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে তাদের আলু বীজ দিয়েছে। বিষয়টি আমারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। কৃষি অফিসের লোকজন আলুর জমি দেখে গেছেন। আলুর বীজের জন্য সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানান তারা।
অনেক কৃষক কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, গত মৌসুমে আলু করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি।
বাজারে আলুর দাম নেয়। আল্লাহর রহমনে এবার গতবারের আর্থিক ক্ষতি পুশিয়ে নিতে আশা করে আলু লাগিয়ে ছিলাম। এবার ক্ষতির মধ্যে পড়তে হবে। ভাল বীজের কথা বলে হেকেম সীড্স বাংলাদেশ লিমিটেডের লোকজন বীজের আলু পরিবর্তে খাওয়া আলু দিয়েছে। আমরা তাদের কথা বিশ্বাস করে সেই আলু জমিতে রোপন করেছি। পাশের জমির অন্য কোম্পানীর বীজ আলুর গাছ ভাল গজিয়েছে। কিন্তু আমাদের জমির আলুর গাছ ভাল ভাবে গজায়নি। আমরা এর বিচার চাই। আলুর ফলন তো কম হবে। ধার দেনা করে আলুর জমিতে টাকা খরচ করেছি। আলুর ফলন ভাল না হলে কিভাবে ধারের টাকা পরিশোধ করবো।
কৃষক জসিম মন্ডল বলেন, হেকেম সীড্স বাংলাদেশ লিমিটেডের আলুর বীজ ভাল দেয়নি। যার কারণে জমিতে আলুর গাছ ভাল ভাবে উঠেনি। হকেম সীড্স বাংলাদেশ লিমিটেডের কর্তৃপক্ষের এলাকার প্রতিনিধিকে (মার্কেটিং অফিসার রফিকুল ইসলাম) বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু তিনি বড় অফিসার জমি মাঠে আনবেন বলে আজ কাল করে দিন পার করছেন। আমরা সকল কৃষক মিলে উপজেলা নিবার্হী অফিসার ও কৃষি অফিসারকে লিখিত অভিযোগ করেছি।
হেকেম সীড্স বাংলাদেশ লিমিটেডের মার্কেটিং অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি আমার কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, হেকেম কোম্পনীর বীজ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা আমাদের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছে। আলু জমিতে
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ভাল ভাবে আলুর গাছ উঠেনি। ক্ষতিপূরণ দেবার জন্য আমরা কোম্পানী লোকজনদের সঙ্গে কথা বলবো। তাতে তারা রাজি না হলে আইন অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তানোর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা শওকাত আলী বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। কৃষি অফিসার ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলা হয়েছে।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে