নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এক কোটি টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে প্রতারক চক্রের চার সদস্য পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। আটককৃতরা হলেন, গোপালগঞ্জ জেলার মোকসোদপুর গ্রামের ব্যাটকামারী গ্রামের মৃত গুনজর আলীর ছেলে মিজানুর রহমান (৩২), বামনডাঙ্গা বড়বাড়ী গ্রামের মৃত মাজেদের ছেলে বখতিয়ার হোসেন (৩১), ঘুনসি দক্ষিণপাড়া এলাকার মৃত ছহেদের ছেলে লুৎফর সরদার (৩৫) ও আফসার তালুকদারের ছেলে আলমগীর হোসেন (২৯)। নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, গত ৯ জুলাই দুপুর আনুমানিক আড়াইটার দিকে পাঠানপাড়ার মৃত আব্দুল রশিদের ছেলে কামরুল হাসান (৫৮) লক্ষীপুরে ওষুধ কিনতে যাওয়ার পথে জড়ুধষ ঈযবধঃরহম এৎড়ঁঢ় এর একটি প্রতারক চক্র ১০০ রিয়েল ও মোবাইল-০১৮৮৩-৬৯২৮৬১ নম্বর দিয়ে ভাঙ্গিয়ে তাদের আগামীকাল টাকা ফেরত দিতে বলেন। পরদিন দুপুর ১২টার দিকে সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট হাসান মানি চেঞ্জার লিমিটেডে সৌদি ১০০ রিয়েল ভাঙ্গানোর পর মোবাইলে ফোন করে জানালে প্রতারক চক্র তার বাড়িতে যায়। বাসায় গিয়ে কামরুল হাসান এর নিকট থেকে বাংলাদেশী নগদ ৮০০ টাকা নেয় এবং ৪০০ টাকা বাদীকে প্রদান করে।
এভাবে বিশ্বাস স্থাপন করেন। পরে প্রতারক চক্রটি বাদীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানায় তাদের নিকট বাংলাদেশী ৩,০০,০০০/-টাকা সমমূল্যের সৌদি রিয়েল আছে। ১৪ জুলাই দুপুর আড়াইটার দিকে হেতেমখাঁ কলাবাগানের ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এর সামনে পাকা রাস্তার উপর প্রতারক চক্র রুমালে বাধা পুটলি দিয়ে বাদীর নিকট ৩,০০,০০০/-টাকা নেয়। বাদী রুমালে বাধা পুটলিটি নিয়ে বাসায় চলে যান। পরবর্তীতে বাসায় এসে রুমাল দিয়ে বাধা পুটলি খুলে দেখেন সেখানে সবগুলো খবরের কাগজ। বাদী প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন। এরপর ১৬ জুলাই বিকেলে বোয়ালিয়া মডেল থানাধীন বর্ণালীর মোড়ের পিছনে অভিযান চালিয়ে পুলিশ প্রতারক চক্রের সদস্য আসামী আলমগীর হোসেনসহ চার সদস্যকে গ্রেফতার করে। তাদের গ্রæপের দুইজন সদস্য কৌশলে পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ৩টি সৌদি আরবের নোট, ও ২টি লাল রংয়ের গামছায় বিশেষ কায়দায় বাঁধা অবস্থায় কিছু পত্রিকার কাগজ (যা আসামীরা সৌদি রিয়েল এর ব্যান্ডিল হিসেবে প্রতারণার কাজে ব্যবহার জব্দ করে)
উদ্ধারপূর্বক হেফাজতে গ্রহণ করে। গ্রেফতার হওয়ার পর আসামীরা স্বীকার করে যে, চলতি মৌসুমে তাদের প্রতারকচক্রটি জনসাধারণের নিকট হতে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ১,০০,০০০,০০/-(এক কোটি) টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছেন। চক্রটি কখনো কখনো সোনার গহনা সদৃশ গহনা, সোনার বার সদৃশ বার প্রদর্শন করেও জনগণকে প্রতারিত করে থাকে। আসামীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তাদের ভাড়া বাসা থেকে তল্লাশী করে আলমগীর হোসেন এর ব্যাগ থেকে তার নিজ এ্যাকাউন্টের টাকা জমার রশিদ জব্দ করা হয়। আসামীগণ প্রতারণার মাধ্যমে সংগ্রহকৃত টাকা তাৎক্ষনিকভাবে আত্মীয়-স্বজন ও স্ত্রীর নিকট ব্যাংক ও বিকাশ এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা প্রেরণ করে থাকে।
আটক হওয়া প্রতারকদের বিরুদ্ধে ঢাকা, সিলেট, গোপালগঞ্জ, বরিশাল, ফেনী, কুমিল্লা, রংপুর, যশোর ও রাজশাহী জেলার বিভিন্ন থানায় চাঞ্চল্যকর ঘটনার প্রতারণা ও বিদেশী মুদ্রা জালিয়াতের মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আসামীদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এমকে