বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় ৪১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে দপ্তরী- কাম নৈশ প্রহরী নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকিউল ইসলাম ও স্থানীয় এমপির প্রেস সচিব জিল্লুর রহমানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন একই উপজেলার বালানগর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনে ছেলে সাগর আহম্মেদ নামের এক প্রার্থী।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদের বিরুদ্ধে সমন জারী করেছেন বলে জানা গেছে। মামলা নং-২১/২০১৮, তারিখ: ২৫/০২/২০১৮ইং।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, দপ্তরী- কাম নৈশ প্রহরী নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম, সদস্য সচিব ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দীকুর রহমান, বালানগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনসুর রহমান, বিদ্যালয়ের সভাপতি ওমর আলী, উপজেলা চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি আব্দুল জব্বার ও বালানগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
আদালতের মামলা সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রনালয় পরিপত্র জারী করলে, গত ২০১৫ সালের ২৩ মার্চে বাগমারায় ৪১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী- –কামনৈশ প্রহরী নিয়োগের জন্য স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রদান করা হয় । বিজ্ঞাপন অনুযায়ী উপজেলার বালানগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরীতে চাকুরীর জন্য একই গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাগর আহম্মেদ মুক্তিযোদ্ধার কোটায় আবেদন করেন। আবেদনের যাচাই-বাচাই শেষে চাকুরীর আবেদন কারীদের গত ১৭ ফেব্রুয়ারী/১৮ ইং তারিখে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেন। পরীক্ষায় ভাল করলেও নিয়োগ কমিটির সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধার কোটাকে অবমাননা করে সাগর আহম্মেদকে পরীক্ষায় দ্বিতীয় করেন এবং আলমগীর হোসেন নামের এক প্রার্থীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা গ্রহন করে তাকে পরীক্ষায় প্রথম করেন। পরীক্ষা শেষে ওই দিন রাতেই নিয়োগ কমিটির সদস্যরা গোপনে ফলাফল প্রকাশ করেন।
পরে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা দপ্তরী –কাম নৈশ প্রহরী নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সহযোগিতা কামনা করলে তিনি সাগর আহম্মেদকে পাত্তা দেননি। সাগর আহম্মেদের পিতা দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার ৪১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী-কাম নৈশ গ্রহরী নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। যাহা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা একান্ত দরকার বলে তিনি মনে করেন।
তিনি আরো বলেন, প্রতিটি চাকুরীর প্রাথীর কাছ থেকে নিম্নে ১০ লাখ ও উপরে ১৫ টাকা নেয়া হয়েছে। বর্তমানে দপ্তরী কাম নৈশ গ্রহরী নিয়োগে বাগমারায় কোটি কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করা হয়েছে। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মানা হয়নি মুক্তিযোদ্ধা কোঠা। তিনি অবিলম্বে তদন্ত করে ওই সকল দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন। এছাড়া বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আদালতের নিকট দ্রুত ন্যায় বিচারের দাবী জানিয়েছেন। আদালতের মামলার বিষয়টি তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেছেন। এছাড়াও আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা দপ্তরী-কাম নৈশ প্রহরী নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকিউল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মামলা দায়েরের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এব্যাপারে সদস্য সচিব, উপজেলা প্রাথমিক কর্মকর্তাকে আইনগত দিক খতিয়ে দেখার জন্য বলা হয়েছে। তিনি নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।