খবর২৪ঘণ্টা.কম: সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন দেয়াসহ তিন দফা দাবিতে ফের বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। তিন দফা দাবি হলো- মিথ্যা ও হয়রানিমূলক সকল মামলা প্রত্যাহার করা; আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা এবং পাঁচ দফার আলোকে কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কার করে প্রজ্ঞাপন দেয়া।
এ দাবিতে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় সারাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে এবং কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানা গেছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন।
তিনি জানান, জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট ঘোষণার দীর্ঘ পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও কোটা সংস্কারের কাক্সিক্ষত প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় ছাত্র সমাজ হতাশ ও বিক্ষুব্ধ। সরকারকে আবারো বলছি, ছাত্র সমাজকে রাজপথে নেমে প্রজ্ঞাপন আদায়ের দিকে ধাবিত করবেন না। সরকারের অনাগ্রহ ও উদাসীনতা যদি প্রজ্ঞাপন জারি আটকে রাখে তবে ছাত্রসমাজ রাজপথে নেমেই দাবি আদায় করতে বাধ্য হবে।
তিনি সরকারকে তিন দফা দাবি মেনে নিয়ে দ্রুত কোটা সংস্কার করে প্রজ্ঞাপন দেয়ার দাবি জানান। সেই সাথে সারাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের মঙ্গলবারের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান।
এদিকে একই দাবিতে পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর ফেসবুক লাইভে এসে নিজেদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। পাশাপাশি ছাত্রসমাজের দাবি মেনে নেয়া জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আমরা একদিকে যেখানে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের আর কোটায় বিশেষ নিয়োগ বাতিলের জন্য আন্দোলন করছি। অথচ রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার সিলেকশন কমিটির আন্ডারে সোনালী ব্যাংকে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে শুধু কোটাধারীদের জন্য। অথচ এ বৈসম্য, অনিয়মের সংস্কারের জন্য ছাত্রসমাজ আন্দোলন করছে আর তারা কোটায় নিয়োগ দিচ্ছে। এটা প্রমাণ করে ছাত্রসমাজের আন্দোলনকে তারা ভ্রুক্ষেপ করতেছে না। এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। আমরা মনে করি এটা ছাত্রসমাজের সাথে একটা তামাশার নিয়োগ। তাই আমরা দাবি করছি এই নিয়োগ যেন স্থগিত করা হয়। এর আগে ৪০তম বিসিএসের সার্কুলারে সেটাতে আগের কোটার নিয়মকে অনুসরণ করতে বলা হয়েছিল। আমরা চেয়েছি কোটার যৌক্তিক সংস্কারের জন্য যেন সেটা স্থগিত রাখা হয়।
১৮ এর ছাত্রসমাজ নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করেছে। যে কারণে সরকার এ আন্দোলনকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের কিছু দাবি মেনে নেয়া হলেও কোটা সংস্কার আন্দোলনের কোনো দাবি মেনে নেয়া হয়নি। সেজন্য বলছি ৮, ৯, ১১ এপ্রিল আপনারা যেমন সারা বাংলাদেশে জাগরণ সৃষ্টি করেছিলেন, গণজোয়ার সৃষ্টি করেছিলেন আবার সবাই সেভাবে সক্রিয় হন। পুলিশের ভয়ে, সন্ত্রসীদের হামলার ভয়ে আমরা যদি থেমে যাই তবে এ জাতি থেমে যাবে। নূর বলেন, এ আন্দোলন বৈসম্যের বিরুদ্ধে। তবে এ আন্দোলন থেকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য বিতর্কিত কথা ও কাজ না করতে নিষেধ করা হয়েছে।
আান্দোলনকারীদের দমন-পীড়ন করা হচ্ছে দাবি করে নূর বলেন, দাবি-দাওয়া বাস্তবায়নের আগে আমাদের দমন করা যাবে না। আমাদেরকে তো দমন করা লাগবে না। আমাদের দাবি মেনে নিন আমরা রাস্তা থেকে সরে যাব। তিনি বলেন, আমরা আগেও বলেছি এখনো বলছি সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। সাধারণ মানুষ রাজনীতিবিদদের মতো নোংরামি করে না। তারা যেটা মুখে বলে কাজে সেটা বিশ্বাস করে।
/জেএন