খবর ২৪ ঘণ্টা, বিনোদন ডেস্ক: আপনি কি জানেন, আপনার পছন্দের নায়িকারা যারা এখনও সিঙ্গেল তাঁরা কীরকম লাইফ পার্টনার চায়? কলকাতা ২৪x৭ ডট কমের পক্ষ থেকে জনপ্রিয় বেশকিছু অভিনেত্রীকে করা হয়েছিল ১০টি প্রশ্ন৷ সেই প্রশ্নগুলির কী উত্তর দিলেন তাঁরা? আজ, সরাসরি কথা বলেছিলেন আমাদের প্রতিনিধি জয়দীপ চৌধুরী ও শুভায়ন রায় জনপ্রিয় অভিনেত্রী অদ্রিজা রায়, অনিন্দিতা বোস, ঋতুপর্ণা বসাক, গীতশ্রী রায়৷ যদিও এদের মধ্যে বেশকয়েকজনই কিন্তু মিঙ্গেল৷ তুবও তার কাছে ভ্যালেন্টাইন ডে-এর গুরুত্ব কতটা দেখে নিন
১. ১৪ ফেব্রুয়ারি এই দিনগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন কোনটি তোমার কাছে এবং কেন?
অদ্রিজা রায়: অবশ্যই ১৪ তারিখ৷ কারণ ওই দিনটাতে গিফট পাওয়া, ঘুরতে যাওয়া৷ লুকিয়ে প্রেম করা হয়৷ ফলে ১৪ ফেব্রুয়ারি খুবই স্পেশাল আমার কাছে৷যদিও এবারে ১৪ তারিখ এবং শিবরাত্রি একইদিনে পড়েছে৷ আগে খুব করতাম৷ এখন ব্যস্ততার মধ্যে কোনটাই পালন করা হয় না৷ এখন এতটাই ব্যস্ত হয়ে গেছি যে ভিডিও কল করেই গোলাপ দেখানো, চকলেট দেখানো হয়৷ ফলে খুব মিস করি পুরানো দিনগুলোকে৷
অনিন্দিতা বোস: সত্যি কথা বলতে গেলে এই কয়েকটাদিন আমি কোনদিনই সেরকমভাবে সেলিব্রেট করিনি৷ তবে যেদিন আমি আমার পার্টানারের কাছে কোয়্যালিটি টাইম স্পেন্ড করব সেটাই আমার কাছে বেস্ট ডে৷যদি এই দিনগুলোর মধ্যে পারফেক্ট ডে বলতে হয় তাহলে ১৪ই ফেব্রুয়ারি বলব৷
গীতশ্রী রায়: অবশ্যই ১৪ই ফেব্রুয়ারীর গুরুত্বটা বেশী৷ কারন ওই দিনের একটা ঐতিহাসিক গুরুত্ব একটা আছে৷ তাছাড়া ভালোবাসা একটা স্বাভাবিক জিনিস৷ তার জন্য একটা নির্দিষ্ট দিন বলে কিছু হয়না৷ যেদিন ইচ্ছা ভালোবাসাই যায়৷ ওই বিষয়টাই অনেক স্বাভাবিক৷
ঋতুপর্ণা বসাক: ১৪ ফেব্রুয়ারিটাই প্রাসঙ্গিক৷ বাকিগুলো একটু বেশিই ন্যাকামো লাগে৷
২. যদি তোমায় বলা হয় পরিবারের লোকজন ছাড়া ডিনার ডেটের জন্য তোমার প্রিয় মানুষকে বেছে নিতে, তবে তুমি কাকে বেছে নেবে?
অদ্রিজা রায়: যাকে ভালোবাসি তাকে৷
অনিন্দিতা বোস: সৌরভ দাস অথবা রায়ান গসলিক৷
গীতশ্রী রায়: যদি তিনি বেঁচে থাকতেন তাহলে অড্রি হেপবার্নের সঙ্গে যেতাম৷ নাহলে কঙ্গনা রানাওয়াত বা আমির খানের সঙ্গে যেতে চাইবো
ঋতুপর্ণা বসাক: আমার বেস্টফ্রেন্ড আয়াঙ্কা৷
৩. এমন কোনদিনও হয়েছে তুমি কাউকে ফোন করার আগে তাকে কি বলবে না বলবে তা তুমি প্র্যাকটিস করেছো? এবং কেন?
অদ্রিজা রায়: হেসে..হ্যাঁ, এটা প্রচুরবার হয়েছে৷ ছোটবেলায় যখন লুকিয়ে প্রেম করতাম৷ তখন একটা নার্ভাসনেশ কাজ করত৷ বাবা, কাকার ফোন থেকে লুকিয়ে কথা বলতাম৷ প্রথমবার কথা বলতে গেলে কি বলব৷ এমনকি রেকর্ডার অন করে শুনতাম কেমন লাগছে ভয়েসটা৷যদিও বড়বেলাতেও হয়েছে তবে প্রেমের ক্ষেত্রে নয়, কাজের ক্ষেত্রে৷
অনিন্দিতা বোস- না ওটা কখনও হয়নি৷ আমি খুব হনেস্ট পার্সান৷সেরকম খুব একটা করিনি৷ যদিও কারোর ওপর রেগে থাকলে তাকে ঝাড়তে হলে একটু ভাবতে হয়েছে৷ফলে সাকসেসফুল ঝগড়া হয়৷
গীতশ্রী রায়: না সেরকম করিনি, তবে আগে যখন আমি রিলেশনসিপে ছিলাম, তখন যদি কখনও ঝগড়া হতো৷ সেই ঝগড়ার পর বেশকিছুদিন কথা বন্ধ থাকত৷ ঝগড়ার পরে যখন আবার ফোনে কথা হত, সেই সময় ফোন ধরার আগে বেশকিছুক্ষন ভাবতাম কি বলবো৷এমনিতেই আমার ছোট থেকেই খুব ইগো৷ আমি নিজে যেচে কোনদিনও প্রপোজ করিনি৷ কোন ছেলের দিকে তাকাতে ইচ্ছে হলেও বেশিক্ষন তাকাতাম না৷
ঋতুপর্ণা বসাক: হ্যাঁ, একদম৷ কোনদিনও ঝগড়া করার আগে আমি ভেবেচিন্তে রিহার্স করে ঝগড়া করতে গেছি কিন্তু শেষ অবধি সব ওলটপালট হয়ে গেছে৷
৪. ধরো কোনদিনও তোমার টেডি বিয়ার হঠাৎ কথা বলতে শুরু করল এবং তোমার যেকোন একটা প্রশ্নের উত্তর দেবে তুমি তার কাছে কি জানতে চাইবে?
অদ্রিজা রায়: অতীতে এমন কোন ঘটনা নেই যা বদলাবো৷তবে ভবিষ্যত জানতে চাইবো এবং যাতে বর্তমানের মতোই ভালো চলে তাই আশা করব৷
অনিন্দিতা বোস: হেসে…আমি অস্কার অ্যাওয়ার্ড কবে পেতে পারবো৷
গীতশ্রী রায়: অবশ্যই ভবিষ্যত৷ আমি জানতে চাইবো আমার বাবা, মা, ভাই এবং আমি এই চারজন কতদিন একসঙ্গে খাকবো৷ আর যদি ভবিষ্যত বদলানো যেত তাহলে নিশ্চই তাদেরকে আমি সারাজীবন আমি পাশে চাইবো৷ আমি আমার পরিবার ছাড়া কিছু ভাবতে পারিনা৷
ঋতুপর্ণা বসাক: আমার ভবিষ্যত জানতে চাইবো
৫. শৈশবের ‘ইনফেচুয়েশন’ এর পর এখন জীবনের ‘লাভ’ ও ‘এফ্যেকেসন’ কতটা গুরুত্ব পায়?
অদ্রিজা রায়: ভালোবাসা একদমই ম্যাচিওর একটা জিনিস৷ বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এটার গুরুত্ব বোঝা যায়৷ কারন ছোটবেলায় কোন একটা ছেলের সঙ্গে ঘোরাফেরা করলেই মনে হতো সে আমার আসল ভালোবাসা, সেই আমার সবকিছু, তাকে ছাড়া আমি বাচবো না, সে ও আমাকে ছাড়া বাঁচবে না…এইসব৷ অন্তত আমাদের কাজের জায়গায় সম্পর্ক সবসময়ই ভাঙে৷প্রথম কয়েকদিন হয়তো মনে হয় সেই সবকিছু কিন্তু বেশকিছুদিন পরে আরও বেটার অপশন পেতে চায়, সময় দিতে পারে না, সন্দেহ চলে আসে৷কিন্তু সবকিছু পেড়িয়ে শেষপর্যন্ত যে বিয়ে করতে পারে বা নিজেদের ঠিক রাখতে পারে সেটাই আমার মনে হয় সত্যিকারের ভালোবাসা৷কিন্তু আমি যতটা পারি কাজের মাঝে আমার কাছের মানুষকে সময় দিতে চাই৷ সবসময় হয়তো হয় না ৷
অনিন্দিতা বোস: অবশ্যই খুবইইই গুরুত্বপূর্ণ রোল প্লে করে৷হয়তো টাকা ছাড়া বা ফেম ছাড়াও থাকতে পারবো কিন্তু এন্ড অফ দ্য ডে লাভ এবং এফ্যেকসন ছাড়া থাকতে পারবো না৷
গীতশ্রী রায়: আমার মনে হয় রিয়েল লাভ একবারই হয়৷ কিন্ত এটা নয় যে ফার্স্ট লাভই রিয়েল হতে হবে৷ আর এফ্যেকশন একটা অক্সিজেনের মতো৷ মানুষের ব্যবহারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷একটা মানুষের লুকসের থেকেও তার ব্যবহার, অ্যাটিটিউট আমাকে বেশি অ্যাট্রাক্ট করে৷
ঋতুপর্ণা বসাক: পাঁচ ছয় মাস আগে ছিলাম৷ কিন্তু এখন একদমই নয়৷ এখন পুরোপুরি নিজের কাজের ওপরেই ফোকাসড৷ ভোরবেলায় কলটাইম থাকে, রাতে বাড়ি ফেরার কোন নির্দিষ্ট টাইম থাকে না৷
৬. তোমার লাইফ পার্টনারের সঙ্গে তুমি কোন জিনিসটা ভাগ করে নিতে চাও ও এমন কি কিছু বিশেষ কিছু স্বপ্ন আছে যা তুমি তোমার ভালবাসার সঙ্গীর সঙ্গে করতে চাও?
অদ্রিজা রায়- সবকিছু৷
অনিন্দিতা বোস- আমার স্বপ্ন৷ আমার একটা রিট্যায়ার্ডমেন্ট প্ল্যানে আমি আমার মনের মানুষের সঙ্গে গোয়াতে একটা ভিলা কিনে থাকতে চাই৷
গীতশ্রী রায়- না, এখনও সেরকম ভাবিনি৷ জানি না কে আমার জীবনে ভবিষ্যতে আসবে৷ আগে আসুক তারপর ভাববো৷ ভবিষ্যতে ভালোবাসার জন্য সবকিছু করার পরেও যদি সে ছেড়ে চলে যায়৷ তখন যেন আমায় অনুশোচনা না করতে হয়৷
ঋতুপর্ণা বসাক- ফিলিংস৷ আমি কথা খুব কম বলি৷ আমার বিপরীতে যে আছে সে আমায় ফিল করুক বা বুঝুক৷
৭. যদি তোমার বাড়িতে আগুন লাগে তোমার ভালবাসার সঙ্গী ও পোষ্যকে বাঁচানোর পর এমন কোন একটা জিনিস তুমি বাঁচাবে?
অদ্রিজা রায়- খুব কঠিন প্রশ্ন…ফোন৷ ফোনের বাইরে কিছুই বুঝি না৷ আমার সমস্ত কাজের কন্ট্যাক্স আছে৷
অনিন্দিতা বোস- মানিব্যাগ, পুরো জগৎ থাকে ওর মধ্যে৷
গীতশ্রী রায়- বাবার থেকে পাওয়া আমার প্রথম গিফ্ট(ওয়াকম্যান)৷
ঋতুপর্ণা বসাক- টাকা এবং ড্রেস৷
৮. তোমার মধ্যে আছে এমন তোমার ভালবাসার মানুষের মধ্যে কোন পাঁচটি গুন দেখতে চাইবে?
অদ্রিজা রায়- খুব খোলামেলা মনের মানুষ হতে হবে… যেমনটা আমি, পরিবারের সঙ্গে হাসিখুশি থাকতে হবে, আমি পেটস্ খুবই ভালোবাসি৷… সেও যেন ভালোবাসে, ট্রাস্টেবেল, সারাজীবন আমার সঙ্গে থাকতে হবে এটা প্রমিস করতে হবে৷ এবং আমিও তাই করব৷
অনিন্দিতা- সততা, আন্ডারস্ট্যান্ডিং, একটু স্পেস চাই, অতিরিক্ত পসেসিভ হলে চলবে না, লাভিং হিউম্যান বিং থাকতে হবে, বড় মনের মানুষ হতে হবে৷
গীতশ্রী রায়- রেসপেক্ট, বন্ধুত্ব, লয়্যালিটি, ভালোবাসা, প্যাশন৷
ঋতুপর্ণা বসাক- বিশ্বাস, সততা, কেয়ারিং, এক্স ফেক্টর, গুড লুকিং৷
৯. যদি তুমি ৯০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকো এবং তোমায় যদি বর দেওয়া হয় যে হয় তোমার অতীতের ৬০ বছর ফিরিয়ে দেবে অথবা তোমায় ৩০ বছর বয়সে যেমন দেখতে ছিল এবং মানসিক অবস্থা ছিল সেটা ফিরিয়ে দেবে৷কোনটা তুমি চাও?
অদ্রিজা- নিঃসন্দেহে প্রথমটাই৷
অনিন্দিতা- অতীত দেখতে চাই৷
গীতশ্রী রায়- ৩০ বছরে যেমন দেখতে ছিলাম বা যেমন বডি ছিল সেটাই চাইবো৷ কারন ৯০ বছরে আমার ৩০ বছর বয়সী মানসিক চিন্তাভাবনা থাকতেই পারে কিন্তু লুক বা বডি তো থাকবে না ফলে সেটাই চাইবো৷
ঋতুপর্ণা বসাক- এটা খুবই চাপের প্রশ্ন… আমি আমার অতীতের একটা ঘটনা পরিবর্তন করতে চাই৷
১০. তুমি যদি কোনদিনও তোমার জীবন সঙ্গীকে বাছতে হয় তাহলে তুমি কাকে বেছে নেবে? যাকে তুমি বেশি ভালবাসবে তাকে? নাকি যে তার পরিবারের পর তোমায় ভালবাসবে তাকে?
অদ্রিজা রায়- কেউ আমাকে ফ্যামিলির পর ভালোবাসে তার কাছেই যাবো৷
অনিন্দিতা বোস- যাকে আমি খুব ভালোবাসি৷ হেসে….যে আমাকে ভালোবাসে তাকে আমি বন্ধু বানিয়ে নিই৷
গীতশ্রী রায়- খুব চাপের প্রশ্ন….এখন আমার সঙ্গে রিলেটেড এই প্রশ্নটা…তবুও আমার মনে হয় যে আমায় ফ্যামিলির পর ভালোবাসবে তাকেই আমি লাইফ পার্টনার হিসাবে পছন্দ করব৷
ঋতুপর্ণা বসাক- এটাতেই ফেঁসে রয়েছি এখনও…আমি যাকে ভালোবাসি তার কাছেই যাব৷
খবর ২৪ ঘণ্টা.কম/ জন