খবর২৪ঘণ্টা.কম, ডেস্ক: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কেন্দ্র থেকে পোলিং এজেন্ট বের করে দিচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, ‘সকালে ভোটগ্রহণ শুরু হলে বেশ কয়েকটি কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে।’
এছাড়া বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে গত রাতে হুমকি ধামকি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, আপনারা জানেন-আজ রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমরা বলেছিলাম- সেখানে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ইসি’র ভূমিকা রহস্যজনক।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেন মোহাম্মদ এরশাদ বর্তমান সরকারের মন্ত্রী পদ মর্যাদায় থাকলেও তিনি ৪দিন ধরে রংপুরে অবস্থান করছেন এবং দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত মতবিনিময় ও ক্যাম্পিংয়ের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। পাশাপাশি জাতীয় পার্টির আরেক নেতা ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গাও রংপুরে অবস্থান করে মিছিল মিটিং করেছেন, যা পুরোপুরি নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা র্নিলজ্জের মতো নির্বিকার থেকেছে।
রিজভীর দাবি, আসলে বর্তমান নির্বাচন কমিশনও আওয়ামী মহাজোটকে খুশী করারা কাজে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, এ নির্বাচন তার একটি উদাহরণ।
এছাড়া আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের নেতারাও প্রতিনিয়ত নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের মাধ্যমে নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তোলা হয়।
রিজভী বলেন, এরপরও নির্বাচন কমিশন তাদের বিরুদ্ধে কোনও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ১৯৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ১২৮টি ভোট কেন্দ্র অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলছে কমিশিন। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের সংখ্যা আরও বেশি। অথচ এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।
তিনি বলেন, আমরা শুরু থেকেই সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা বললেও ইসি সেনা মোতায়েন করেনি। বরং সেখানে আনসার সদস্যের নামে আজ নিয়োগ করা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের নেতাকর্মীদের। বলা হয়েছে- নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর যত সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে, বাস্তবে বেছে বেছে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের অনুসারী ক্যাডারদেরই নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আজ সকাল থেকে সেখানে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও গত দুদিন ধরে ক্ষমতাসীন দল ও জোটের তাণ্ডবে সেখানে ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছে। বিএনপি ও বিএনপি সমর্র্থিত ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে তারা যেন ভোট কেন্দ্রে না যায়। এছাড়া নির্বাচনী এজেন্টদেরও নানাভাবে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে। আজ সকালেও কয়েক জায়গায় প্রশাসনের ব্যক্তিদের সহায়তায় ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর খবরও আমরা পেয়েছি। সুতরাং রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন যে সুষ্ঠু ও অবাধ হবে কি না তা বড় সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।
বর্তমান সরকারের অধীনে অতীতে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বারবার রংপুর সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে গভীর সংশয় প্রকাশ করেছি এবং ইলেকশন কমিশনকে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হবার আহ্বান জানিয়েছি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সরকারের ইশারায় ঠুটো জগন্নাথের মতো নীরবতা পালন করেছে। বিরোধী দলগুলোর ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন বিমাতাসুলভ আচরণ করেছে। সব মিলিয়ে আজকে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপক্ষে হওয়ার ক্ষেত্রে আমরা আবারো গভীর সন্দেহ ও সংশয় প্রকাশ করছি।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ