খবর২৪ঘন্টা আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় কৃষি বিল পাস করাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। এর জেরে আট এমপিকে চলতি সংসদ অধিবেশনের বাকি দিনগুলোর জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এম বেঙ্কইয়া নাইডু ওই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। খবর আনন্দবাজারের।
যাদের বরখাস্ত করা হয়েছে তারা হলেন- তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন ও দোলা সেন; কংগ্রেসের রাজীব শতাভ, রিপুন বরা ও সৈয়দ নাসির হুসেন; সিপিএমের কে কে রাগেশ ও এলাম আরাম করিম এবং আম আদমি পার্টির সঞ্জয় সিং।
এসময় রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এম বেঙ্কাইয়া নাইডু ডেপুটি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে বলেন, ‘ওই এমপিরা সামগ্রিকভাবে সভার অসম্মান করেছেন। ডেপুটি চেয়ারম্যানকে লক্ষ্য করে কটু মন্তব্য করেছেন। সেজন্য সংসদ অধিবেশনের বাকি সময়ের জন্য তাদের সাসপেন্ড করা হচ্ছে।’
তৃণমূলের রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান শাসক দলের মর্জিমতো কাজ করেছেন। তিনি কোনো আইনেরই তোয়াক্কা করেননি। তার আচরণ নজিরবিহীন এবং বেআইনি। যেভাবে আট এমপিকে সাসপেন্ড করা হয়েছে, তা হলো ভবিষ্যতে তাদের কণ্ঠরোধ করার প্রয়াস। এই যদি আমাদের দেশের সংসদীয় গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি হয়, তাহলে এ দেশ নিশ্চিতভাবে সংখ্যাধিক্যতার শিকার হতে চলেছে।’
তৃণমূলের লোকসভার সদস্য সৌগত রায় এমপি বলেন, ‘যেভাবে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হলো, তা সাংসদদের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করার শামিল। এটি একটি অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত। ভোট না করে যেভাবে কেবলমাত্র ধ্বনি ভোটে রাজ্যসভায় কৃষি বিল পাস করানো হয়েছে, ওই সাংসদরা তারই প্রতিবাদ করেছিলেন।’
‘কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আগে তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তা দেয়া হয়নি। যেভাবে আমাদের সদস্যদের সাসপেন্ড করা হলো তা গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও আচার ব্যবহারের বিরুদ্ধে। ওই সিদ্ধান্তে আমরা গভীরভাবে দুঃখিত’ বলেন সৌগত রায়।
গতকাল রবিবার রাজ্যসভায় কৃষিক্ষেত্রে সংস্কার সংক্রান্ত দুটি বিলকে বিরোধীরা সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো এবং ভোটাভুটির দাবি জানান।
কিন্তু রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিং ওই দাবি না মানায় বিরোধীরা ডেপুটি চেয়ারম্যানের আসনের সামনে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং রুল বুক ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ।
তারা এ সময় ‘তানাশাহি নেহি চলেগা’ (একনায়কতন্ত্র চলবে না) স্লোগান দেন এবং ডেপুটি চেয়ারম্যানের মাইক কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত এমপিদের বিরুদ্ধে আজ শাস্তি ঘোষণা করেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এম বেঙ্কইয়া নাইডু।
খবর২৪ঘন্টা/নই