গ্যালারিভর্তি দর্শক। তাদের মুখে চিৎকার, গায়ে দুর্দান্ত ঢাকা ও কুমিল্লা ভিক্টোলিয়ান্সের জার্সি। এর মধ্যে নামের মতো মাঠের খেলায়ও দুর্দান্ত হয়ে উঠলো ঢাকা।
তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে ইমরুল কায়েসের জুটিতে বড় রানের স্বপ্ন দেখছিল তারা।
কিন্তু শেষদিকে তাসকিনের দুর্দান্ত বোলিং ও শরিফুলের হ্যাটট্রিকে বড় রান হয়নি তাদের। পরে ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়ে দলের জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন নাঈম শেখ।
শুক্রবার মিরপুরে বিপিএলের প্রথম ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সরকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে দুর্দান্ত ঢাকা। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রান করে কুমিল্লা।
পরে ওই রান ৩ বল হাতে রেখেই টপকে যায় ঢাকা। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি কুমিল্লার। নেতৃত্বের হাত বদল হওয়ার পর দলটির অধিনায়ক হন লিটন দাস। অধিনায়কত্বের প্রথম ম্যাচটা স্মরণীয় করতে পারেননি তিনি। ১৬ বলে ১৩ রান করে শ্রীলঙ্কার চতুরঙ্গা ডি সিলভার বলে ক্যাচ দেন তিনি।
এরপর বড় এক জুটি পায় কুমিল্লা। তাওহীদ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে কুমিল্লাকে তিনবার অধিনায়ক হিসেবে চ্যাম্পিয়ন করা ইমরুল কায়েস দলের হয়ে হাল ধরেন। ইমরুল হাফ সেঞ্চুরি তুলেন, সঙ্গে হৃদয়ের ব্যাটে বড় স্বপ্নই দেখছিল কুমিল্লা। কিন্তু হুট করেই ছন্দপতন হয় দলটি।
দুজনের ১০৭ রানের জুটি ভাঙে ১৯তম ওভারে এসে। তাসকিন আহমেদের বলে ক্যাচ দেন তাওহীদ হৃদয়। ওই ওভারেই তিনি ফেরান ইমরুলকেও। দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর শেষ ওভার করতে আসেন শরিফুল ইসলাম। শুরুটা ভালো হয়নি তারও। প্রথম বলে কোনো রান না দিলেও পরের দুটিতেই ছক্কা হজম করেন তিনি। কিন্তু চতুর্থ বলে এসে খুশদিল শাহ ক্যাচ দেন শর্ট থার্ডম্যানে দাঁড়ানো তাসকিনের হাতে। এরপর টানা দুই বলে ক্যাচ তুলে দেন রোস্টন চেজ ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। বিপিএলের ইতিহাসে সপ্তম হ্যাটট্রিক হয়ে যায় শরিফুলের।
লড়াই করার পুঁজি নিয়েও শেষ অবধি সেটি করতে পারেনি কুমিল্লা। মুশফিক হাসানের প্রথম তিন বল থেকেই দুই ছক্কা ও এক চারে ১৬ রান করে ফেলেন নাঈম শেখ। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ৬০ রান করে ঢাকা, তখনও কোনো উইকেট হারায়নি। সেটি যতক্ষণে হারায়, ততক্ষণে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণের অনেকটাই চলে এসেছে তাদের হাতে।
প্রথম ৯ ওভারেই ৭৭ রান তুলে ফেলা ঢাকার সামনে শেষ ১১ ওভারের দরকার ছিল আরও ৭৭ রান। মাঝে ৫ উইকেট হারালেও শেষ পর্যন্ত জয় পেতে কষ্ট হয়নি ঢাকার। ১৩তম ওভারে নাঈম শেখ ক্যাচ দেন তানভীর আহমেদের বলে। ৩ চার ও ৩ ছক্কার ইনিংসে ৪০ বলে ৫২ রান করেন নাঈম। আরেক ওপেনার দানুস্কা গুনাথিলাকা, তিনিও আউট হন তানভীরের বলে। ব্যাট হাতে গুনাথিলাকা ৪১ রান করলেও বলে খেলে ফেলেন ৪২টি।
১৬তম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের প্রথম বলেই ক্যাচ তুলে দেন ঢাকার ইরফান শুক্কুর। কিন্তু মিড অনে তার কাচ ফেলে দেন ফিল্ডার। ওই ওভারেই ক্রুসপুল (৫) বিদায় নেন উপরে তুলে মারতে গিয়ে। দৌড়ে এসে ক্যাচ নেন উইকেটকিপার লিটন। পরের দুই ওভারে মাত্র ১৩ রান নিতে পারেন সাইফ হাসান ও ইরফান শুক্কুর। ১৯তম ওভারে সাইফ হাসান (৭)-কে বিদায় করেন খুশদিল। ওভারে ৯ রান আসে। ফলে শেষ ওভারে মাত্র ৪ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ঢাকার সামনে। প্রথম বলেই ঢাকার অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেনকে রান আউটের সুযোগ ছিল বোলার মোস্তাফিজের সামনে। কিন্তু বল সময়মতো স্ট্যাম্পে লাগাতে পারেনি মোস্তাফিজ।
শেষ ওভারের প্রথম বলে লেগ বাই থেকে ১টি রান পায় ঢাকা। পরের বলেই অবশ্য ইরফানের (২৪) উইকেট তুলে নেন মোস্তাফিজ। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। তৃতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ঢাকার জয় নিশ্চিত করেন চতুরঙ্গা ডি সিলভা।
বিএ…