প্রায় ২২ বছর আগে অভিনয় থেকে বিদায় নিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তি নায়িকা শাবানা। তিনি এখন পুরোপুরি পারিবারিক মানুষ। প্রবাস জীবনে নাতি-নাতনিদের সঙ্গে আড্ডা দিয়েই সময় কাটছে তার। তবে অভিনয় থেকে দূরে থাকলেও আজও বাঙালি দর্শকের হৃদয়ে গেঁথে আছেন তিনি। আজ (১৫ জুন) এই গুণী অভিনেত্রীর জন্মদিন।
১৯৫২ সালের এ দিনে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ডাবুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শাবানা। তার পারিবারিক নাম আফরোজা সুলতানা রত্মা। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় খুব বেশি এগোতে পারেননি। ঢাকার গেন্ডারিয়া হাই স্কুলে ভর্তি হলেও কিছুদিন পর স্কুল ত্যাগ করেন তিনি।
মাত্র আট বছর বয়সে সিনেমায় নাম লেখান শাবানা। এহতেশাম পরিচালিত ‘নতুন সুর’ নামের ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করেন তিনি। এরপর ‘চকোরী’ ছবিতে নায়িকা চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন শাবানা। বাংলা ও উর্দু ভাষায় নির্মিত ‘চকোরী’ ছবি ব্যবসা সফল হয়। এরপর থেকে শাবানাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
তিন যুগের অভিনয় জীবনে শাবানা অভিনীত সিনেমার সংখ্যা ২৯৯টি। ক্যারিয়ারে নাদিম, রাজ্জাক, আলমগীর, ফারুক, জসীম, সোহেল রানার সঙ্গে জুটি বেঁধে শাবানা উপহার দেন জনপ্রিয় অনেক সিনেমা।
শাবানার উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘চকোরী’, ‘ভাত দে’, ‘রাঙা ভাবি’, ‘অবুঝ মন’, ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘দোস্ত দুশমন’, ‘সত্য মিথ্যা’, ‘বাংলার নায়ক’, ‘ওরা এগারো জন’, ‘বিরোধ’, ‘আনাড়ি’, ‘সমাধান’, ‘জীবনসাথী’, ‘মাটির ঘর’, ‘লুটেরা’, ‘সখি তুমি কার’, ‘কেউ কারও নয়’, ‘পালাবি কোথায়’, ‘স্বামী কেন আসামি’, ‘দুঃসাহস’, ‘পুত্রবধূ’, ‘আক্রোশ’ ও ‘চাঁপা ডাঙার বউ’ ইত্যাদি।
অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে শাবানা দশবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। অন্যান্য পুরস্কারের মধ্যে আছে- প্রযোজক সমিতি পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কার, ললিতকলা একাডেমি পুরস্কার, আর্ট ফোরাম পুরস্কার, নাট্যসভা পুরস্কার, কামরুল হাসান পুরস্কার, নাট্য নিকেতন পুরস্কার ও কথক একাডেমি পুরস্কার।
এ ছাড়াও শাবানা মস্কো ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, রুমানিয়া ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালসহ আরও বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন।
১৯৭৩ সালে সরকারি কর্মকর্তা ওয়াহিদ সাদিককে বিয়ে করেন শাবানা। তাদের ঘরে রয়েছে দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ে সুমী ইকবাল, ছোট মেয়ে ঊর্মি সাদিক ও একমাত্র ছেলে নাহিন সাদিক। ২০০০ সাল থেকে সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে বসবাস করছেন তারা।
বিএ/