নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্ব মহামারী করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেই স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে শিক্ষানগরী রাজশাহীর জনজীবন। লকডাউন শিথিলের পর রাজশাহী থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলাচলকারী দুরপাল্লার যানবাহন চলাচল শুরু করেছে। সেই সাথে ট্রেন চলাচলও শুরু হয়েছে। দূরপাল্লার পাশাপাশি রাজশাহী মহানগর থেকে আশেপাশের উপজেলার লোকাল রুটে চলাচলকারী বাসগুলোও চলাচল করছে। ৩১ মে থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচলের ঘোষণা থাকলেও ১ দিন পরে পহেলা জুন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হলেও বাসে যাত্রী উঠার ক্ষেত্রে তেমনভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানছেননা যাত্রীরা। রাজশাহী মহানগরীর মার্কেট ও
দোকানপাটগুলো খুলছে। এ ছাড়াও খুলছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। নগরের অভ্যন্তরে ছোট ছোট যানবাহনগুলো চলাচল করছে। রিক্সা ও অটোরিক্সায় মানা হচ্ছেনা স্বাস্থ্যবিধি। আগের মতোই তারা ৫/৬ জন যাত্রী তুলে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছুটছে। সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দোকানপাট ও মার্কেটগুলো খোলা থাকছে। তবে ওষুধের দোকান সার্বক্ষনিক খোলা থাকছে। বিভিন্ন সরকারী অফিস ও আদালতের কার্যক্রম চলছে। গত কয়েকদিনের তুলনায় বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে রোগীদের ভিড় বেড়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভিড় থাকছে রোগীদের। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এবং সরকারী-
বেসরকারী স্কুল ও কলেজগুলো বন্ধ থাকার রাজশাহীর ব্যবসার ওপর প্রভাব পড়েছে। অন্য সময়ের মতো এখন আর নগরের রাস্তা-ঘাটে তেমন ভিড় নেই। নগরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে আসা শিক্ষার্থীরা করোনা পরিস্থিতির কারণে নিজ নিজ বাড়িতে রয়েছে। লক্ষাধিকের উপরে রাজশাহী মহানগরীতে বাইরে থেকে শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থী না থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ১৭ মার্চ থেকে সরকারী-বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে দেয়া হয়। এরপর থেকে সরকারী ছুটি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সামাজিক দূরত্ব ও অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হওয়াদের ঘরে ফেরাতে পুলিশ ও র্যাব ও জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি মাঠে নামে সেনাবাহিনী। রাজশাহীতে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ১২ এপ্রিল। এরপর ১৪ এপ্রিল থেকে রাজশাহী জেলাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা
হয়। দীর্ঘ সময় সরকারী ছুটির পর লকডাউন শিথিল করে ৩১ মে থেকে সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মার্কেট ও দোকান খুলে দেয়া হয়। এ পর্যন্ত রাজশাহী জেলায় মোট ৭৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে ১৩ জন সুস্থ ও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা নিজ নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এরমধ্যেই স্বাভাবিক হতে শুরু করে রাজশাহীর জনজীবন।
এমকে