নাহিদ ইসলাম,নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাসের প্রভাবে যানবাহন ও জনশূন্য হয়ে রাজশাহী শহর। বন্ধ রয়েছে দোকানপাটসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিস ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
অন্যান্য সময়ে যেখানে প্রতিদিন শহরজুড়ে ছিল হাজারো মানুষের সমাগম, ফুটপাত ও বিভিন্ন মার্কেট এবং চায়ের দোকানে ছিল মানুষের আড্ডা। কিন্তু করোনা সচেতনতায় বদলে গেছে নগরীর এই চিরচেনা দৃশ্যপট। হঠাৎ কিছু মানুষের দেখা মিললেও যুক্তি ছাড়া মুক্তি মিলছে না তাদের।
অপ্রয়োজনে সড়কে ঘোরাফেরা করা মানুষদের তাৎক্ষণিক শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।পাড়া মহল্লয় কিছু খাবার দোকান ও ফার্মেসি খোলা থাকলেও সেখানে নেই কোনো জটলা। ফুরফুরে মেজাজে সময় কাটছে দোকানদাররা।খেলার মাঠ থেকে শুরু করে রাস্তা-ঘাট, সড়ক-মহাসড়কে কোথাও নেই হৈ-চৈ।
এ অবস্থায় সড়কে মানুষের উপস্থিতি নেই বললেই চলে, কমেছে সাধারণ যাত্রীর সংখ্যা। এতে বিপাকে পড়েছেন নগরীর সাধারণ রিকশাচালকরা। পেটের তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রিকশা নিয়ে বের হলেও, যাত্রী না পাওয়ায় এখন তাদের কোনও আয় নেই।
রিকশা চালকরা বলছেন, ‘পেটের তাগিদে তারা সড়কে বের হতে বাধ্য হচ্ছেন। কোথাও কোনও খাদ্যসামগ্রীও তারা পাচ্ছেন না। মাঝে মাঝে পেলেও তা দুই-তিন দিনের বেশি যায় না। এ অবস্থায় তাদের রাস্তায় নামা ছাড়া আর কোনো গতি নেই’।
বুধবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে নগরীর নওদাপাড়া আমচত্তরে কথা হয় বেশ কয়েকজন রিকশাচালকের সঙ্গে। তাদের একজন আশরাফুল। তিনি বলেন, স্ত্রী ও সন্তানসহ ছয় জনের পরিবার চালাতে হয়। আয় না করে বাসায় ফিরলে রাতে না খেয়ে থাকতে হবে। সে কারণে রাস্তায় রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। কিন্তু আমার মতো এমন বহু রিকশাচালক রয়েছেন, যাদের ঘরে কোনও খাবার নেই। রিকশার চাকা ঘুরলে আমাদের সংসারের চাকা ঘোরে। কিন্তু এখন কোনও যাত্রী নেই। সকাল ৭টার পর থেকে এখন পর্যন্ত (বেলা ১২টা) মাত্র ৮০ টাকা ভাড়া পেয়েছি।
এদিকে বিকেল ৫টার মহানগরীর উপশহর মোড়ে কথা হয় আরও কয়েকজন রিকশাচালকের সঙ্গে। তাদের একজন আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ঘরে বসে থাকলে পরিবার চালাবো কীভাবে? আমাদের তো ঘরে কোনও কিছুর স্টক নেই, সেই সামর্থ্যও নেই। তাই পেটের তাগিদে বের হয়েছি। সারা দিনে ১৫০ টাকা ভাড়া পেয়েছি। বলেন, এই যুগে এই টাকা দিয়ে কী হয়?
রিকশাচালক আরিফ হোসেন বলেন, করোনাভাইরাস তো আর ক্ষুধার জ্বালা বুঝে না। রিকশা না চালালে খাবো কী? আমি তো কোনও ত্রাণসামগ্রী পাইনি। অন্য কয়েকজন পেলেও তা দিয়ে দুই দিনও যায় না। সরকার যদি আমাদের জন্য বিকল্প কোনও ব্যবস্থা না করে বা বিশেষ সহযোগিতা না করে, তাহলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।
খবর২৪ঘন্টা/নই
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।