করোনায় বন্ধ থাকায় দীর্ঘ ২ বছর ২ মাস পর আজ রবিবার (২৯ মে) থেকে ফের চালু হলো ঢাকা-কলকাতা চলাচলকারী যাত্রীবাহী ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেস।
যাত্রীদের ইমিগ্রেশন-কাস্টমস সম্পন্ন করে আজ সকাল ৮ টা ১৫ মিনিটে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে ছেড়েছে ট্রেনটি। এরপর সীমান্তবর্তী দেশের সর্বশেষ স্টেশন চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনায় পৌঁছাবে দুপুর ১ টা ৪০ মিনিটে। এখানে ২০ মিনিট যাত্রা বিরতির পর দুপুর ২টায় সীমান্ত পেরিয়ে কলকাতার উদ্দেশে ছুটবে মৈত্রী। এরপর বিকেল ৪টায় কলকাতার চিতপুর স্টেশনে থামবে।
একইভাবে পরদিন সোমবার (৩০ মে) ভারতীয় সময় সকাল ৭টা ১০ মিনিটে চিতপুর স্টেশন থেকে ফিরতি ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করবে। বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ১০ মিনিটে সীমান্ত পেরিয়ে দর্শনা স্টেশনে এসে পৌঁছাবে। এখান থেকে সাড়ে ১০টায় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।
এভাবে বৃহস্পতিবার বাদে সপ্তাহে ৬ দিন ঢাকা-কলকাতার মধ্যে চলাচল করবে মৈত্রী এক্সপ্রেস। অর্থ্যাৎ রবিবারে ঢাকা থেকে কলকাতায় যাবে, ফিরবে সোমবার। মঙ্গল, বুধ, শুক্র ও শনিবার দুটি করে ট্রেন থাকবে। এই দিনগুলোতে একটি যাবে এবং আরেকটি আসবে। কেবল বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকবে ট্রেনটি।
দর্শনা স্টেশনে ২০ মিনিট যাত্রা বিরতি করবে কেবলমাত্র ইঞ্চিন, গার্ড, ক্রু পরিবর্তন ও যাত্রীদের বুফে খাবার সরবরাহের জন্য। এ ছাড়াও ঈশ্বরদী স্টেশনে ১৫ মিটি দাঁড়াবে ওয়াটারিংয়ের জন্য। আর ভারতের গেঁদে স্টেশনে ১০ মিনিট দাঁড়াবে স্কট বাহিনী (বিএসএফ)’র জন্য। তবে গেইট লক থাকবে ট্রেনটি। কোথাও কেউ উঠতে-নামতে পারবে না। ট্রেনের মধ্যেই বুফে খাবার সরবরাহ করা হবে।
২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল (পহেলা বৈশাখ) ঢাকা-কলকাতার মধ্যে যাত্রা শুরু করেছিল একমাত্র যাত্রীবাহী ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেস। সেই সময় দুই দেশের সীমান্তবর্তী দর্শনা ও গেঁদে রেলস্টেশনে যাত্রীদের ইমিগ্রেশন-কাস্টমস করা হতো। এরপর যাত্রীদের যাত্রা সময় কমানোর জন্য দুই দেশের রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর থেকে ইমিগ্রেশন-কাস্টমস সীমান্তবর্তী স্টেশন দর্শনা ও গেঁদের পরিবর্তে যাত্রা পয়েন্ট ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট ও কলকাতার চিতপুর স্টেশন থেকে শুরু করা হয়।
মৈত্রীর বহরে রয়েছে ১০টি কোচ। সব কোচগুলোই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। মৈত্রীর প্রতিটি যাত্রায় গড়ে ৪০০ যাত্রী আসা-যাওয়া করে থাকেন। যাত্রা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ যাত্রী আসা-যাওয়া করেছেন। বাংলাদেশ, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যাত্রীরা এ ট্রেনে ভ্রমন করেন।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, পূর্বনির্ধারিত ভাড়ায় এখনও বলবৎ রয়েছে। অর্থ্যাৎ ২০২০ সালের ১২ ফেব্রয়ারি মৈত্রী ট্রেনের ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করে দুই দেশের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ঢাকা থেকে কলকাতা ৫৩৮ কিলোমিটারের রেলপথে এসি সিটের ভাড়া ৩ হাজার ৬০৫ টাকা, এসি চেয়ারের ভাড়া ২ হাজার ৫৭০ টাকা। তবে ১ থেকে ৫ বছরের শিশুদের জন্য ৫০ শতাংশ ছাড় রয়েছে। এক্ষেত্রে পাসপোর্ট অনুসারে বয়স নির্ধারিত হবে।
এদিকে শুধুমাত্র কমলাপুর ও চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে মৈত্রী ট্রেনের টিকিট কাটা যায়। টিকিট কাটার সময় ভিসাসহ পাসপোর্টের মূল কপি দেখাতে হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে মৈত্রীতে ভ্রমণের সময় আরটিপিসিআরের ৭২ ঘন্টার করোনা নেগেটিভ সনদ অথবা দুই ডোজ করোনার টিকার সনদ লাগবে।
বিএ