খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ঝুঁকি থাকলেও এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার সকালে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকীতে বনানীতে তার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর এ কথা বলেন তিনি।
গত বছরের শেষ দিন চীনের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়। এরপর বিশ্বের দেড় শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাসটি। প্রাণঘাতী ভাইরাসটির কারণে গোটা বিশ্বে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশেও তিনজন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর আরও ১৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এদের মধ্যে সত্তোরর্ধ্ব এক ব্যক্তি মারা যান।
বাংলাদেশের করোনা যেন ভয়াবহ আকার ধারণ করতে না পারে, সেজন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।
সকালে জিল্লুর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আমরা ঝুঁকিতে আছি এটা নিঃসন্দেহে বলা চলে। কিন্তু আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু এখনও আমাদের দেশে হয়নি। সেই রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। আমাদের এখানে ১৮ জন এই পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে, এর মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তারপরেও ঝুঁকি আছে, কারণ এটা সারাবিশ্বে মহামারী ভাইরাসে পরিণত হয়েছে, যাতে বিশ্ব আতঙ্কিত।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘যেটা চীন থেকে ইউরোপ ও আমেরিকাসহ সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে, সেই ভাইরাসের ঝুঁকি থেকে আমরা মুক্ত থাকবো সেটা বলা যায় না। তবে আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই ভাইরাস মোকাবেলায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে করোনা মোকাবেলায়। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের সর্বাত্মক প্রয়াস, সম্মিলিত উদ্যোগে করোনা যত বড় শত্রুই হোক, আমরা এই শত্রুকে পরাজিত করবো।’
এ সময় উপনির্বাচন পেছানোর জন্য বিএনপির দাবির প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুলরা কখন কি বলেন, তারা সবকিছুতেই রাজনীতির ইস্যু খুঁজে বেড়ান। নির্বাচনের বিষয়টা সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার। এই সময়ে তারা যদি নির্বাচন পেছাতে চান, সেটা তাদের বিষয়। এখানে সরকারের কোনো করণীয় নাই। নির্বাচন কমিশন সরকার নিয়ন্ত্রণ করে না, তাদের সিদ্ধান্ত তারাই নেন। ফখরুল সাহেব নির্বাচন পেছানোর প্রস্তাব দিয়েছেন, সেটা মানা না মানা ইসির বিষয়।’
করোনাভাইরাসের মধ্যে সরকার এখনও বিরোধীদলের উপর নির্যাতন করছে বলে বিএনপি যে অভিযোগ করছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিরোধীদলের উপর সরকার কিভাবে নির্যাতন করছে তা আমার জানা নাই। এর কোনো তথ্যপ্রমাণ নেই৷ তথ্যপ্রমাণ নিয়ে আসুক তারপর দেখা যাবে। কিন্তু ঢালাওভাবে অভিযোগ তাদের পুরানো অভ্যাস।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান আমাদের দেশের একজন বরেণ্য রাজনীতিবিদ এবং সৎ ও সাহসী রাজনৈতিক। তিনি স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংকটে সাহসী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে জিল্লুর রহমান এদেশের সকলের কাছে প্রিয়। বিশেষ করে ১/১১ সময়ে যখন আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা কারাগারে ছিলেন সেই সংকটের সময় তিনি যে সাহস ও নৈতিকতার পরিচয় দিয়েছেন এবং দুঃসময়ে তিনি দলের ঐক্যের প্রতীক৷ তিনি কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। তার সংগ্রাম ও আন্দোলন ছিলো আমাদের উৎসাহের প্রেরণা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
খবর২৪ঘন্টা/নই