খবর২৪ ঘণ্টা. ডেস্ক: হাঁড়ি আলাদা হলেও তিন ভাই ও স্ত্রীর মধ্যে খুব মিল। বড় ভাই চন্দ্রভান সিং, মেজো সুনীল, ছোট সঞ্জয়। সুনীলের স্ত্রী সরিতা। বিধায়ক অর্জুন সিংয়ের বোন। অর্জুনরা দুই ভাই, সাত বোন। সরিতা ছোট বোন। সঞ্জয়ের স্ত্রী সন্ধ্যা। বড় ভাই চন্দ্রভান সিংয়ের স্ত্রীর অকালমৃত্যু হয়েছে। চন্দ্রভানের বয়স ৫৬। এঁদের বাবা কেদার সিং ছিলেন নোয়াপাড়ার গুরুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান। কেদারবাবু চেয়ারম্যান থাকাকালীন মারা যান। বড় ছেলে চন্দ্রভান সেই সময় নেপালে কাজ করছেন। বাড়ি থেকে ফোন গেল, বলা হল এবার তোমাকে দাঁড়াতে বলছে দল। কী আর করা যাবে।
চন্দ্রভান দাঁড়িয়ে পড়লেন গাড়ুলিয়া পুরসভা নির্বাচনে। জিতলেন। স্ত্রীও মারা গেছেন। এক ছেলে এক মেয়ে। ব্যবসার পাশাপাশি ওয়ার্ডের কাজও দেখতে হয়। পুরসভাতেও অনেক কাজ করতে হয়। স্ত্রী নেই, তাই সংসারের দিকেও নজর রাখতে হয়। ছেলেমেয়েরা বড় হচ্ছে। বললেন, তাদের জন্য সময় দিতে হয়। চন্দ্রভানের পরের ভাই সুনীল। তিনি গাড়ুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান। কেদারবাবু মারা যাওয়ার পর সুনীলকেই চেয়ারম্যানের পদ দেওয়া হয়। এলাকায় পরিচিতি আছে। রাতবিরেতে তাঁকে পাওয়া যায়। নোয়াপাড়া বিধানসভায় উপনির্বাচন হচ্ছে। তৃণমূল সুনীলকে প্রার্থী করেছে। আগে কেদারবাবুর তৈরি করা বাড়িতেই সকলে একসঙ্গে থাকতেন।
সময়ের পরিবর্তন হয়েছে। ধীরে ধীরে ভাইয়েরাও আলাদা হয়েছেন। আদি বাড়িতে থাকেন বড়দাদা চন্দ্রভান। সুনীলের স্ত্রী সরিতা। তিনবারের কাউন্সিলর। দাদা অর্জুনের সঙ্গে সম্পর্ক খুব ভাল। দাদা–বোনের মুখেরও মিল আছে। ওয়ার্ডের কাজের সঙ্গে সংসারের কাজও করেন সরিতা। প্রতিদিন প্রায় ঘণ্টাখানেক ঠাকুরঘরে কাটান। বললেন, আমাদের বাড়ি রাজ্যের বাইরে হলেও, বহুদিন থেকেই গাড়ুলিয়ায় রয়েছি। তিন ভাই ও দুই স্ত্রীর উচ্চারণে হিন্দি টান আছে। বাংলাও বলেন। বোঝেন। ছোট ভাই সঞ্জয় তিনবারের কাউন্সিলর। ব্যবসা দেখেন। জেলার তৃণমূল যুব কংগ্রেসের পদে রয়েছেন। তিন ভাইকেই মিটিং, মিছিলে দেখা যায়।
রাস্তায় নামেন সরিতা ও সঞ্জয়ের স্ত্রী সন্ধ্যা। ২০১৫ সালে কাউন্সিলর হয়েছেন সন্ধ্যা। কাজ করতে গিয়ে ভুল হলে ঠিক করে দেন স্বামী সঞ্জয়। নোয়াপাড়ায় এমন কোনও লোক দেখা যাবে না, যাঁরা এই পরিবারটাকে চেনে না। রিকশায় উঠে একবার এঁদের একজনের নাম বললেই পৌঁছে যাওয়া যাবে ওঁদের বাড়িতে। গাড়ুলিয়া পুরসভায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে এই সিং পরিবার বহু কাজ করেছেন। এলাকার মানুষ তাঁদের ভালবাসেন। তাই প্রতিবারেই ওঁরা জিতে চলেছেন। তিন ভাই ও দুই স্ত্রী জানালেন, আমরা মমতাদির পাশে আছি, থাকব। সরিতা বললেন, দাদার (অর্জুন) কথা শুনে আমরা কাজ করি। মমতাদির মতো উনি আমাদের মাথার ওপরে আছেন।
খবর ২৪ ঘণ্টা.কম/ জন