এই সরকার সবদিক দিয়ে ব্যর্থ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীর বলেন, আপনারা কি বাচ্চাদের ডিম খেতে দিতে পারেন? বাচ্চাদের ভালো খাবার দিতে পারেন? পারেন না। বিদ্যুতের দাম বাড়তেই আছে। সাধারণ মানুষ, প্রত্যেকটা মানুষ চায় এই সরকার বিদায় হোক। আজ বিশ্ববাসী বাংলাদেশে অবাধ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। এই সরকারকে মানুষ আর দেখতে চায় না।
তিনি বলেন, এই সরকার আবারও নির্বাচন নিয়ে পাতানো খেলা খেলতে চায়। আমরা পাতানো খেলা আর খেলতে দেব না। বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী আজ নির্যাতিত-নিষ্পেষিত। এর বিরুদ্ধে জেগে উঠতে হবে।
ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকার পতনের এক দফা দাবিতে উত্তরাঞ্চলের দুই বিভাগে তারুণ্যের রোডমার্চ করেছে বিএনপির তিন সংগঠন।
মির্জা ফকরুল বলেন, রাজশাহীর নেতা আবু সাঈদ চাঁদ, শফিকুল হক মিলনকে মামলা দিয়ে কারাগারে রেখেছে। সারাদেশে আজকে যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র নেতাকে জেলে রেখেছে। বগুড়া থেকে এলাম, বৃদ্ধরা-শিশুরা সব লাইন ধরে দাঁড়িয়ে গেছে। বলেছে, তারা দুটি জিনিস চায়। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ আর দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছর এই জাতির বুকের ওপর পাথরের মতো বসে আছে। আমরা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করে যা অর্জন করেছিলাম, সেটাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। এই সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এটি করতে গিয়ে যারা গণতন্ত্রের কর্মী তাদের হত্যা করেছে, গুম করেছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পুরেছে।
খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ জানিয়ে ফখরুল বলেন, সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। আজকে তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছে। আজকে দেশনেত্রীকে বিনা চিকিৎসায় রেখেছে। বাইরে যেতে দিচ্ছে না। সরকারকে বলব, অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় সব দায়-দায়িত্ব হাসিনা সরকারকে নিতে হবে।
রাজশাহীর চারঘাট থানার ওসির ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ড প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনাদের চারঘাট থানার ওসির অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। ওসি বলেছে, আমাকে মন্ত্রী এনেছে নির্বাচন করার জন্য। মন্ত্রী যা বলবে আমি তাই শুনব।থ আজকে সারাদেশে এই পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। কিন্তু মানুষ আজ জেগে উঠেছে।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) বগুড়া থেকে শুরু করে এ রোডমার্চ রাজশাহীতে গিয়ে শেষ হয়। রাতে রোডমার্চ করে রাজশাহীতে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে বগুড়া থেকে নওগাঁ হয়ে রাজশাহী আসার পথে বিভিন্ন স্থানে পথসভায় বক্তব্যও দেন মির্জা ফখরুল।
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের রাজশাহী বিভাগে ‘তারুণ্যের রোড মার্চ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে সেটি রাজশাহীতে পৌছায়। পরে পাঠানপাড়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহের সামনের রাস্তায় সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এসএম জিলানী,বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এবং রাজশাহীর সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, মহানগর বিএনপির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী ঈশা, সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন প্রমুখ।
বিএ/