খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য যেসব উপজেলা চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেছেন, তাদের আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আর মনোনয়ন দেবে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি নানা কারণে বিতর্কিতদেরও এ পদে মনোনয়ন দেবে না দলটি। এ বিষয়ে দলটি নীতিগত কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আওয়ামী লীগ সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলী ও মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জনপ্রিয়, ত্যাগী, যোগ্য ও বিতর্কহীনরাই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পাবেন। দলের কাছে আসনভিত্তিক জরিপ রিপোর্ট আছে। সাংগঠনিকভাবেও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তৃণমূল থেকেও নির্বাচনের মাধ্যমে নাম চাওয়া হয়েছে। এই সবকিছু বিশ্লেষণ করেই উপজেলায় মনোনয়ন দেওয়া হবে।’
আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, উপজেলা চেয়ারম্যানরা জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না, এমন নির্দেশনার পরও যারা সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়েছিলেন, তারা দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন মর্মেই বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে তাদের উপজেলায় মনোনয়ন না দিয়ে একধরনের বার্তা দেওয়া হবে। আর অভিজ্ঞতা ও জনপ্রিয়তা, দলের জন্য ত্যাগ ও গ্রহণযোগ্যতা, বিতর্কহীন নেতারাই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পাবেন। এ মনোনয়নের ক্ষেত্রেও বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে থাকবে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যেই ‘বিদ্রোহী প্রার্থীদের’ ক্ষেত্রে আজীবন বহিষ্কারের খড়গ ঝুলছে।
উল্লেখ্য, উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নের জন্য ইতোমধ্যে প্রতিটি থেকে কমপক্ষে তিনজনের নাম পাঠাতে কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা-উপজেলা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক-যুগ্ম আহ্বায়কের কাছে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, উপজেলা নির্বাচনের প্রতিটি পদে একক অথবা তিনজন প্রার্থীর নামের সুপারিশ-সংবলিত একটি প্যানেল তৈরি করতে হবে। দলের উপজেলা শাখা প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে বর্ধিত সভা করে এ প্যানেল তৈরি করে দলের জেলাসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে পাঠাবে। এরপর জেলা আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট সব উপজেলার প্রার্থী তালিকা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে পৌঁছে দেবে। এই প্রার্থী তালিকা জেলা ও উপজেলা শাখার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়কদের যৌথ স্বাক্ষরসহ পাঠাতে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলী এবং সংসদীয় বোর্ডের আরেক সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, ‘উপজেলায় এলাকার সঙ্গে সম্পর্কহীন, বিতর্কিত, জনবিচ্ছিন্ন এবং দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতনকারীরা মনোনয়নের জন্য বিবেচিত হবেন না। যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে দলের ভেতর দল-উপদল সৃষ্টি করেছেন, আত্মীয়-স্বজনের লাগামহীন আচরণ ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়েছেন, তারা কেউই মনোনয়ন পাবেন না।
প্রসঙ্গত, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ড এবং স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। পরদিন ৯ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার মনোনয়নবোর্ডেরও বৈঠক। এই দুটি বৈঠকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা হবে বলে আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়। আগামী মার্চ থেকে কয়েক ধাপে সারাদেশে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে প্রথম দফার নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।
খবর২৪ঘণ্টা, জেএন