নিজস্ব প্রতিবেদক :
আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে ছুরি-চাকুসহ হাতিয়ার তৈরিতে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছেন রাজশাহী মহানগরীতে কর্মরত কামাররা। ঈদের মাত্র আর কয়েক দিন বাকি। এজন্য নগরবাসী পশু কোরবানী করার জন্য শেষবারের মতো তাদের হাতিয়ারগুলো ধার দিয়ে নিচ্ছেন। এ সব হাতিয়ারগুলোর মধ্যে উলে¬খযোগ্য হচ্ছে, দা, ছুরি, চাকু, চাপ্পড়, হাসুয়া, কুড়াল, কানতাইসহ আরো অনেক যন্ত্রপাতি। যার কারণে এখন নগরবাসী ভিড় জমাচ্ছেন কামারের দোকানগুলোতে। গ্রাহকদের চাপের কারণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। একটুখানি অবসরের সময় যেন নেই তাদের হাতে। সব-সময় কাজ আর কাজ। কাজের মধ্য দিয়েই সময় কাটছে কামারদের। সরজমিনে রাজশাহী মহানগরীর বেশ কয়েকটি এলাকায় ঘুরে কামারদের সাথে কথা বলে
জানা গেছে তাদের কর্মব্যস্ততা সম্পর্কে। দম ফেলার সময় নেই রাজশাহীর কামারদের। তারা গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী হাতিয়ার তৈরি করে দিচ্ছেন।
নগরীর ডিঙ্গাডোবা এলাকার উপেন নামের এক কামারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ঈদের সময় ছাড়া অন্য সময়গুলোতে তেমন একটা কাজ থাকেনা বললেই চলে। দিনের বেশির ভাগ সময় বসেই কাটাতে হয় নতুন হাতিয়ার তৈরির পাশাপাশি মুসলি¬রা পুরাতন হাতিয়ারগুলো ধার দিয়ে নিচ্ছেন। যার ফলে কাজও থাকেনা আয়-রোজগারও বেশি হয়না। সেই জন্য অভাব-অনটনের মধ্য দিয়েই সংসার চালাতে হয়। নগরীর ভাটাপাড়া এলাকার ফটিক নামের আরেক কামারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, সামনে ঈদের কারণে বর্তমান সময়ে অনেক বেশি কাজ হচ্ছে। অগে দিনে সর্বোচ্চ দু’চারটি কাজ হতো তাও টানাটানি। কিন্ত গত সপ্তাহ থেকে কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন ৫০/৬০টিরও বেশি কাজ করা হচ্ছে।
যার কারণে আয়ও বেশি ফলে বছরের অন্য সময়গুলোতে বসে থাকার লোকসান পুষিয়ে নেয়া যাচ্ছে। সাহেব বাজার এলাকার নিতিশ কামারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এখন তো বিশ্রাম করার সময় মোটেও নেই। সারাদিন শুধু কাজ আর কাজ। এখন কাজের অর্ডারও বেশি হচ্ছে উপার্জনও বেশি হচ্ছে। আমার কর্মশালার কামাররা এখন কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন। বসে থাকার কোন সুযোগ নেই। তিনি আরো বলেন, অন্য সময় যেখানে দিনে কোন দিন অর্ডার পাওয়া যেত আবার কোনদিন পাওয়া যেতনা সেখানে বর্তমানে প্রায় শতাধিকেরও বেশি কাজ পাওয়া যাচ্ছে।
যার কারণে বছরের অন্য সময়গুলোতে বসে থাকার কারণে যে লোকসান হতো তা পুষিয়ে নেয়া যাচ্ছে। এভাবেই রাজশাহী মহানগরীতে কর্মরত কামাররা তাদের কর্মব্যস্ততার কথা জানাচ্ছিলেন। বছরের অন্য সময়গুলোতে বসে থাকার কারণে তাদের যে লোকসান হয় তা তারা ঈদের মৌসেুমে বেশি কাজ করে পুষিয়ে নিতে পারছেন। এখন মুসলি¬রা কোরবানি করার জন্য শেষ প্রস্তুতি হিসেবে এ কাজে ব্যবহৃত দা, ছুরি, চাপ্পড়, হাসুয়া, কান্তাই, চাকুসহ আরো অনেক হাতিয়ার ধার দিয়ে নিচ্ছেন। এজন্যই কর্মশালার কামাররা কর্মব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কাজ বেশি হওয়ায় আয়-রোজগার বেশি হওয়াতে কামাররা আগের চেয়ে খুশিতেই রয়েছেন।
তবে অন্যবারের তুলনায় এবার হাতিয়ার তৈরিতে বেশি টাকা লাগছে বলে মুসলি¬দের অভিযোগ থাকলেও কামাররা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার লোহার দাম কিছুটা বেড়েছে। সবকিছুর দাম বাড়ায় কিছু টাকা বেশি নিতে হচ্ছে।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে