1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
আয়েশা বিবিরা কি না খেয়ে মরবেন? - খবর ২৪ ঘণ্টা
শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ০৮:৩২ অপরাহ্ন

আয়েশা বিবিরা কি না খেয়ে মরবেন?

  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২০

খবর২৪ঘন্টা আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আয়েশা বিবি। পেশায় যৌনকর্মী। ভারতের কলকাতার কালিঘাট রেড লাইট এলাকার সরু একটি গলিতে তার বসবাস। তিন সন্তানকে নিয়ে রেড লাইট এলাকার ছোট্ট একটি রুমে থাকেন। এই এক রুমের জন্য তাকে মাসে গুণতে হয় ৬২০ রুপি।

শহরে হঠাৎ করে করোনাভাইরাসের ঝড়ো হাওয়া এক চিলতে কক্ষের ফুটো হয়ে যাওয়া ছাদের নিচে চিন্তা বাড়িয়ে তুলেছে আয়েশা বিবির।

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে ভারতে লকডাউন চলছে। এক মাসের বেশি সময় ধরে চলমান এই লকডাউনে আয়েশা বিবির খদ্দের কমেছে, ফুরিয়ে গেছে জমানো সব অর্থ। এখন খাবার কিনের খাওয়ার মতো কোনো অর্থ নেই তার কাছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যে হয়তো অনাহারে মরতে হবে; কাঁদতে কাঁদতে বলেন আয়েশা বিবি।

শুধু তাই নয়, মেয়ে এবং নিজের জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা তোয়ালেও কিনতে পারছেন না। সামনে বর্ষাকাল আসছে; এমন পরিস্থিতিতে ভাতের জোগার করতে হিমশিম খাওয়া আয়েশা বিবি ছাদের ফুটো সারানোর কোনো উপায় দেখছেন না।

sonagaci-red-light-1.jpg

অপ্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক সব খাতে এখন স্থবিরতা নেমে এসেছে ভারতজুড়ে। লকডাউন অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কোটি কোটি মানুষের উপার্জনে কঠোর আঘাত হেনেছে। মানবেতর জীবন-যাপন করছেন কোটি মানুষ।

দেশটির সরকার গরীব মানুষদের জন্য ত্রাণ ঘোষণা করেছে; কিন্তু দেশটির পতিতালয়গুলোতে যে হাজার হাজার নারী কাজ করছেন, তারা রয়েছেন এই ত্রাণ সুবিধার বাইরে। ভারতে যৌন কাজ অবৈধ নয়; কিন্তু বেশকিছু সহায়ক কার্যক্রম যেমন- পতিতালয় রক্ষণাবেক্ষণ এবং খদ্দের ডেকে আনাকে অপরাধ হিসাবে দেখা হয়।

এইডস নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনএইডসের একটি জরিপ বলছে, ২০১৬ সাল পর্যন্ত ভারতে যৌন কর্মীর সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৫৭ হাজার ৮০০। তবে যৌন কর্মীর এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

এই যৌন কর্মীদের অধিকাংশ খদ্দের দিনমজুর শ্রেণির মানুষ। দেশটিতে লকডাউন চলায় এই শ্রেণির মানুষরাই এখন কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। যে কারণে রেড লাইট এলাকা এখন খদ্দেরশূন্য।

কলকাতার পতিতাপল্লীর যৌন কর্মীদের সন্তানদের নিয়ে কাজ করেন উর্মি বসু; তিনি নিউ লাইট নামে একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা। করোনা পরিস্থিতির কারণে এই অচলাবস্থা দীর্ঘ হলে যৌন কর্মীরা যে নির্মম পরিস্থিতির শিকার হবেন সেটি নিয়ে উদ্বিগ্ন উর্মি বসু।

তিনি বলেন, এমনকি লকডাউন প্রত্যাহার হওয়ার পর যদি খদ্দের আসা শুরু হয়; তখন কে এই ভাইরাস বহন করছে সেটি জানার কোনো উপায় নেই। এইচআইভি/এইডসের মতো কনডম তাদের রক্ষা করতে পারবে না। এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কীভাবে করা যাবে?

sonagaci-red-light-1.jpg

ত্রাণ প্রকল্পের অংশ হিসাবে দরিদ্রদের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একটি অর্থনৈতিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। এই প্যাকেজের আওতায় দেশটির প্রায় ২০ কোটি দরিদ্র মানুষের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে প্রায় ৫০০ রুপি করে পাঠানো হবে। কিন্তু যারা পতিতাপল্লীতে কিংবা বাইরে যৌন পেশার সঙ্গে জড়িত তাদেরকে এই প্যাকেজের অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। অনেকেই পাচারের শিকার হয়ে এই পেশার সঙ্গে জড়িয়েছেন; তাদের সরকারি বৈধ কোনো কাগজপত্রও নেই।

ভারতে যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করে রুচিরা গুপ্তার প্রতিষ্ঠিত সংস্থা আপনে আপ উইমেন ওয়ার্ল্ডওয়াইড। রুচিরা বলেন, বর্তমানে যৌন কর্মীদের কাছে খাবার নেই, তারা অনাহারে থাকছেন। জানালাবিহীন ছোট্ট জীর্নশীর্ণ ঘরে বসবাস করেন তারা। এমনকি অনেকে প্রয়োজনীয় পানি সংকট পর্যন্ত পাচ্ছেন না। বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ এবং মোবাইল ফোন রিচার্জ করার মতো অর্থও নেই তাদের।

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতাসহ আরও বেশ কিছু শহরে বড় বড় পতিতাপল্লী রয়েছে; যেখানে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা অত্যন্ত কঠিন। দিল্লির জিবি রোডের রেড লাইট এলাকায় ৩ হাজারের বেশি যৌনকর্মীর বসবাস মাত্র ৮০টি ঘরে। এশিয়ার বৃহত্তম পতিতাপল্লী হিসাবে পরিচিত কলকাতার সোনাগাছি; যেখানে ৮ থেকে ১০ হাজার যৌনকর্মী কাজ করেন।

যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এসব পল্লীতে রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং। পরিষ্কার পানি, টয়লেটের অভাব এসব পল্লীতে প্রকট। অনেক জায়গায় মাত্র একটি কক্ষে ২০ জনের বেশি যৌনকর্মী কাজ করেন। পল্লীতে রান্নার সুযোগ খুবই কম; বাইরে থেকে খাবার কেনার ওপরই ভরসা করতে হয় কর্মীদের।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

খবর২৪ঘন্টা/নই

পোস্টটি শেয়ার করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By Khobor24ghonta Team