শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: মো. আবির হাসান (১৮), শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের চক কল্যানী গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে। মধ্যম আয়ের মানুষ তার বাবা। ৬ ছেলে মেয়ের মধ্যে আবির হাসান সবচেয়ে ছোট। আবির শালফা টেকনিক্যাল এ্যান্ড বিএম কলেজে সাটলিপি বিভাগে অধ্যায়নরত রয়েছে।
ছোট বেলা থেকেই অন্যায় কাজ পছন্দ করেনা আবির। তাইতো তার গ্রামে কেউ অন্যায় কাজ করলে মুখ বুঝে সহ্য করতে পারেনা সে। এলাকার মাতব্বরদের অন্যায় বিচার। নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের বাধা দেয়া সহ সব অন্যায় কাজ দেখলেই নরেচরে বসে সে। তারই প্রতিদান হিসেবে ওই এলাকার প্রভাবশালী মাতব্বরদের প্ররোচনায় ২১ জুলাই মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে আবির সহ কয়েকজন কে ফ্রি ফায়ার গেমস খেলা অবস্থায় জয়লা বটতলা বাজার এলাকা থেকে আটক করে।
এদের মধ্যে সুঘাট ইউনিয়নের ছফ্ফার আলীর ছেলে ফারুক (২২), জয়লা আলাদি গ্রামের কুরমান শেখের ছেলে আরিফ (১৮), খালেকের ছেলে রাসেল (১৮) ও জয়লা আলাদি নয়াপাড়া গ্রামের নবির শেখের ছেলে নাজমুল (১৬) কে ওই এলাকার প্রভাবশালী আনোয়ার সরকারের সাথে আলোচনার মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা লেনদেন করে রাস্তার মধ্যেই ছেড়ে দেয় এবং আবির কে থানায় নিয়ে এসে মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আবিরের মত একজন সাহসী প্রতিবাদকারী ছেলের বিরুদ্ধে মাদক মামলা দেয়ায় হাতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে ওই এলাকার সাধারণ মানুষ। আর মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে তার পরিবার। তার বাবা মায়ের আর্তনাতে ভারি হয়েছে পড়েছে ওই এলাকার বাতাস। অসহায় হয়ে পড়েছে আবিরের পরিবার। এখন সকলের মনে একটাই প্রশ্ন কি হবে আবিরের ভবিষ্যৎ ? কে নেবে এর দায় ? তাহলে কি আর কেউ কোনদিন অন্যায়ের প্রতিবাদ করবেনা। নাকি মুখ বুজে সব অন্যায় সহ্য করে যাবে আজীবন। তাছাড়া ন্যায় প্রতিষ্ঠায় পুলিশেরই কি ভুমিকা রইলো।
এ ব্যাপারে ওইদিন আটক করে ছেড়ে দেয়াদের মধ্যে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, আমরা সবাই রাত টার দিকে জয়লা বটতলা বাজারে ফ্রি ফায়ার গেমস খেলছিলাম। এ সময় শেরপুর থানার এসআই ওসমান গনি ও এএসআই ফারুক হোসেন এসে আমাদের সবাইকে আটক করে পুলিশ পিকআপ ভ্যানে তোলেন। পরে আমাদের এলাকার মাতবর আনোয়ার সরকার এসে পুলিশের সাথে কথা বলে অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে আমাদের ছাড়িয়ে নেয়।
এ সময় আবিরের পক্ষে কেউ কথা না বলায় তাকে থানায় নিয়ে যায়।
এ প্রসঙ্গে ওই এলাকার মতবর আনোয়ার সরকার বলেন, ছেলে পেলেরা বাজারে বসে তাস খেলছিল। এসময় পুলিশ এসে তাদের আটক করলে আমি পুলিশের সাথে কথা বলে তাদের ছাড়িয়ে নিয়েছি। কিন্তু আবিরের প্যান্টের পকেট সার্চ করে গাঁজা পাওয়ায় তাকে ছাড়েনি পুলিশ।
এ ব্যাপারে শেরপুর থানার এসআই ওসমান গনি বলেন, জয়লা বটতলা বাজারে অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছিল। সবাই ছাত্র হওয়ায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু আবির মাদক ব্যবসায়ী হওয়ায় তাকে ৮ পিস ইয়াবা দিয়ে মামলা দেয়া হয়েছে। টাকা লেনদেনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান বলেন, আবির যে মাদক ব্যবসায়ী তার এলাকায় এর বহু প্রমান রয়েছে।
জেএন