নজরুল ইসলাম জুলু: পতিত স্বৈরাচার সরকার শেখ হাসিনা দীর্ঘ ১৬ বছরে পুলিশ বাহিনীর প্রতিটি স্তরে স্তরে যুবলীগ, ছাত্র লীগের নেতাকর্মীদের নিয়োগের মাধ্যমে বিরোধী মত দমন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্যাতন, নিপীড়ন করে নিজের ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করেছিল। কট্টর আওয়ামী লীগ সমর্থকদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে নিয়োগ দিয়ে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থেকেছে। সম্প্রতি জুলাই-আগষ্টে পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে আন্দোলনরত লাখ লাখ মানুষের উপর পৈশাচিক নির্যাতন চালায়ম এতে পুলিশ বাহিনী জনগণের কাছে ভিলেনে রূপান্তর হয়। পুলিশ বাহিনীর উপর সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ বৃদ্ধি পায়। ৫ই আগষ্টে ছাত্র জনতার গণ অভ্যূত্থানে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর নিজেদের মধ্যকার নানান জটিলতা কাটিয়ে ছাত্র জনতার বিপ্লবকে মেনে নিয়ে নিজেদের আত্মশুদ্ধি করার প্রতিশ্রুতি সহ পুলিশ বাহিনীর কার্যত সংস্কারের আশ্বাসে কাজে ফিরে পুলিশ বাহিনী।
কিন্তু, বিগত ৩ মাসেও পুলিশ বাহিনীতে কাঙ্ক্ষিত গতিশীলতা দেখা যায়নি। ফলস্বরূপ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নও দেখা যাচ্ছে না। হরহামেশাই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে যাচ্ছে অপ্রীতিকর ঘটনা । পুলিশ বাহিনীর অপরাধ দমনেধীর গতি ও স্বৈরাচারের দোসরদের গ্রেফতারে অনীহার ফলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে আসলেই কী বর্তমান পুলিশ জনগণের বিপ্লবকে নিজেদের মনে ধারণ করতে পেরেছে? বিপ্লব পরবর্তী সময়ে অনেক পুলিশ কর্মকর্তাকে ছোট থেকে রাতারাতি বড় পদে পদায়ন করা হয়েছে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে। কিন্তু, পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রমে মন্থর গতি ও স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার দোসরদের গ্রেফতারে তেমন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় মনে হচ্ছে তারা এই গণ অভ্যূত্থানের স্পিরিট কে ধারণ করতে পারেনি। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন এই পুলিশ বাহিনী আসলে কার এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে? সাম্প্রতিক সময়ে রাজশাহী মহানগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দিনে দুপুরে চুরি, ছিনতাই, খুন, রমরমা মাদক ব্যবসা, কিশোর গ্যাংদের অপতৎপরতা ইত্যাদি এখন শান্তি নগরী রাজশাহীর নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে।
রাজশাহী মহানগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড: এরশাদ আলী এশা বলেন, ৫ই আগষ্টের পর পরিবর্তীত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে পুলিশ বাহিনীকে যথাসাধ্য সব রকম সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে। রাজশাহীতে পুলিশের লুটকৃত অস্ত্র, মালামাল উদ্ধার ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে সবধরনের সহোযোগিতা করা হয়েছে। কিন্তু, বিগত দেড় মাসে রাজশাহী মহানগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উদ্বেগজনকভাবে অবনতি হয়েছে। খুন, বাড়িঘর ব্যবসা বাণিজ্য দখল, মাদকব্যাবসার লাগামহীন উপদ্রব, ছিনতাইসহ নানান অপকর্মমূলক ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে। শুধু তাই নয় বিভিন্ন মামলার আসামিদের গ্রেফতারেও করা হচ্ছে গাফিলতি।
এরশাদ আলী জানান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি নিজেই আরএমপি’র পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান সাহেবের সাথে এই বিষয়ে সরাসরি সাক্ষাৎ করে এবং মোবাইলফোনের মাধ্যমে কথা বলেছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সহযোগিতার কথাও জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পুলিশ কমিশনার আমাকে আশ্বস্ত করেছিলেন তাদের কার্যক্রমের গতিশীলতা বৃদ্ধি করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন করবেন। কিন্তু, এখন পর্যন্ত আমরা কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখছিনা। পুলিশ কমিশনার মহাদয় কে এই বিষয়ে কথা বললেই উনি শুধু সব তথ্য এসএমএস এর মাধ্যমে জানাতে বলেন। কিন্তু, সকল তথ্য প্রদানের পরেও তো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের চিহ্ন দেখছি না। আসামিদের গ্রেফতারেও কোনো রকম তৎপরতাও দেখছি না।
সূত্র মোতাবেক, রাজশাহী বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মেহেদী মাসুদ এর সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়েছিলেন এরশাদ আলী এশা। এই বিষয়ে তিনি জানান, বোয়ালিয়া থানাধীন এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটেছে। এছাড়াও এই থানায় ৫ই আগষ্টের পর জুলাই-আগষ্টে সহিংসতা, খুন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলা দায়ের হয়েছে। অত্র এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে সাহায্য করা ও আসামীদের গ্রেফতারের ব্যাপারে ওসি মেহেদী মাসুদ এর সাথে বেশ কয়েকবার কথা বলি। উনাকে আসামিদের গ্রেফতারের কথা বলা হলে বা আইনশৃংখলা পরিস্থতির অবনতির বিষয়ে জানানো হলে উনি অযথা তর্ক করেন। অসভ্য আচরণ করেন। কথায় কথায় নিজেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান সাহেবের আত্মীয় পরিচয় দেন। নিজের রাজনৈতিক ক্ষমতার ভয় দেখান, কথা না শুনেই ফোন রেখে দেন। তার এমন উচ্ছৃঙ্খল আচরণ সম্পর্কে আমি সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কমিশনার মহাদয় কে জানায়। কিন্তু, এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নি।
তিনি আরও বলেন, আরএমপির কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ থানার কর্মকর্তারা তাদের দ্বায়িত্ব ঠিক মতো পালন করছেন না। মূলত আরএমপির কিছু পুলিশ কর্মকর্তাদের অনীহার জন্যই আজ এই হাল। রাজশাহী মহানগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি বিষয়ে রাজশাহী মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক বজলুল হক মন্টু বলেন, আমরা আরএমপি পুলিশকে সবদিক থেকে সাহায্য করে আসছি এবং করবো। কিন্তু, বিভিন্ন থানায় ঘাপটি মেরে বসে থাকা স্বৈরাচারের দোসর পুলিশ কর্মকর্তারা মূলত শেখ হাসিনা প্রীতি থেকেই তার এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। পাড়া মহল্লায় বিভিন্ন অপরাধ, ফুটপাথ দখল, মাদক ব্যবসা ইত্যাদি বিষয়ে জানালেও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। জুলাই-আগষ্টের মামলার আসামীদের গ্রেফতাররের ক্ষেত্রেও নেই তৎপরতা। তিনি জানান, বোয়ালিয়া মডেল থানায় তিনি ২টি রাজনৈতিক মামলা দায়ের করেছেন।
মন্টু অভিযোগ করেন, মামলার বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মো: মেহেদী মাসুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি খারাপ আচরণ করেন। আসামীরা প্রতিনিয়ত মোটরসাইকেলে শোডাউন দেয় অথচ তাদের গ্রেফতারে কোনো পদক্ষেপ নেন না তিনি। আসামি গ্রেফতারের কথা বললে উনিই উল্টো আমাকে বলেন আসামিদের ধরে থানায় সোপর্দ করতে বা আসামিদের সব রকমের তথ্য দেওয়ার কথা বলেন। এখন, বাদিরা যদি আসামি খুঁজে নিয়ে গিয়ে থানায় সোপর্দ করে তাহলে তার দ্বায়িত্ব কী? এছাড়াও এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি সম্পর্কে অভিযোগ করলেও তিনি কর্নপাত করেন না । কথা না শুনে ফোন রেখে দেন, থানায় গেলে ঠিক মতো কথা বলেন না। বিভিন্ন সময় উচ্চবাচ্য কথাবার্তা বলেন তিনি। মন্টু আরও বলেন, শহরে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে সব দায় বিএনপির উপরে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে কোনো রকম তদন্ত ছাড়াই। অপরাধ গুলোর সাথে তৃতীয় কোনো পক্ষ জড়িত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে না। আমরা তো মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে পুলিশকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আমরা পুলিশ কমিশনার মহাদয়কে জানিয়েছি অপরাধীর কোনো দলীয় পরিচয় নেই। যেই অপরাধ করবে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধেই আপনারা ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। কিন্তু, অপরাধ নির্মূলে আরএমপি পুলিশের গা-ছাড়া ভাব আমাদেরকে ব্যথিত করেছে।
কয়েকটি থানার ওসি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। বিশেষত বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মো: মেহেদী মাসুদের কার্যক্রম ইতোমধ্যেই বিভিন্ন মহলে সমালোচিত হয়েছে। তার ব্যাপারে পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ করা হলে তিনি তদন্তের আশ্বাস দিলেও কাজে কর্মে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখছিনা। বরং পুলিশ কমিশনার মো: আবু সুফিয়ান সাহেব কে এ বিষয়ে কল করলে তিনি উলটো বলেন, পুলিশ তার নিজেদের গতিতে কাজ করবে। কোনো রাজনৈতিক দলের কথায় পুলিশ কাজ করবে না।
রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও পুলিশ যদি একে অপরের পাশে না থাকে তাহলে কথা ভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন হবে? সব মিলিয়ে আরএমপি’র কিছু কর্মকর্তার দ্বায়িত্ব পালনে অবহেলা এবং অশোভন আচরণে রাজশাহী মহানগর বিএনপি বেশ ক্ষুব্ধ হয়েছে। মন্টু খবর২৪ঘন্টার কাছে অভিযোগ করে বলেন, মেহেদী মাসুদ বোয়ালিয়া থানায় যোগদানের পর থেকেই অত্র থানাধীন এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। বোয়ালিয়া থানা এলাকায় সম্প্রতি ৫টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে এছাড়াও ছিনতাই, মারামারির মতো ঘটনাও হরহামেশা ঘটছে। ওসি মেহেদী মাসুদকে আসামিদের সম্পর্কে কোনো তথ্য দেওয়া হলে তিনি তা আসামিদের কাছে পাচার করে দেন। আসামিদের সাথে মোটা অংকের অর্থ লেনদেনে তিনি লিপ্ত হয়েছেন বলেও মন্টু অভিযোগ করেন। দোষী পুলিশ কর্মকর্তা বিশেষত বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মেহেদী মাসুদ এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশের কার্যক্রমে গতিশীলতা বাড়িয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে দৃশ্যত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে রাজশাহী মহানগর বিএনপি আরএমপি’র বিরুদ্ধে আন্দোলনে যাওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন। অনেকেই অভিযোগ করছেন পুলিশ বাহিনী তার পুরোনো খোলস ছেড়ে দিতে পারিনি। এখনো স্বৈরাচার আমলের মতোই কিছু পুলিশ কর্মকর্তা গোপনে পুরোনো নিয়মে মাসোহারা আদায়, আসামিদের নাম কাটানো, গ্রেফতার এড়ানো ইত্যাদির বিনিময়ে অর্থ নেওয়া, জুয়ার বোর্ড, মাদক ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অনৈতিকভাবে অর্থ লেনদেন করার অভিযোগ উঠেছে আরএমপির কিছু পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ।
সব মিলিয়ে রাজশাহী মহানগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে আরএমপি পুলিশের মন্থর গতিতে কাজ করার ফলে রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকায় বিভিন্ন অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জনমনেও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
এই দিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও জনবান্ধব পুলিশি কার্যক্রম গতিশীল করা সহ সার্বিক বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার আবু সুফিয়ানের সাথে ৯ই নভেম্বর মতবিনিময় করেছেন রাজশাহীর প্রায় ২০/২২ জন বিশিষ্ট সাংবাদিক।
এ সময় নগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তুলে ধরে সাংবাদিকরা অভিযোগ করে বলেন, ছাত্র জনতার আন্দোলনের পর নতুন সরকারের নেতৃত্বে দেশ পরিচালিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টির পর তিন মাসেও রাজশাহীর আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনুকূল না হওয়া, মাদক ও জুয়ার বিস্তার, অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী গ্রেফতার না হওয়া উদ্বেগ জনক । একই সাথে কিশোর গ্যাং ও বাইক পার্টির দৌরাত্ম বেড়ে যাওয়ায় সামগ্রীক পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে পড়েছে । এতে ছিনতাই, খুন ও রাহাজানি বেড়ে যাওয়ায় সচেতল মহল উদ্বিগ্ন বলেও জানান সাংবাদিকদের দলটি। একসাথে পুলিশের কোন কোন কর্মকর্তা আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারীদের সাথে গোপন যোগাযোগ রক্ষা করায় সরকারের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন ব্যাহত হচ্ছে বলেও সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন । সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার না করে তাদের আগাম তথ্য দিয়ে দেয়া হচ্ছে। যা বেশ উদ্বেগের।
এসময় আরএমপির বিতর্কিত বোয়ালিয়া মডেল থানার পুলিশ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী মাসুদ ও ওসি তদন্ত তাজমুল ইসলাম সহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরে তাদের অপসারণের দাবি জানান সাংবাদিকরা। আরএমপি পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান সাংবাদিকদের অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা মেহেদী মাসুদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করার পরামর্শ দিলে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ লিখিত অভিযোগ করেন। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দরা পুলিশকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন এবং আরএমপিতে স্বৈরাচারী দোসরদের চিহ্নিত করে তাদের অপসারণ করার দাবী জানান।
এসব ঘটনায় দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। তিনি অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিষয়ে তদন্তের জন্য উপ-পুলিশ কমিশনার (বোয়ালিয়া অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) অনির্বান চাকমা কে দ্বায়িত্ব দেন। তদন্তের ব্যাপারে উপ-পুলিশ কমিশনার অনির্বাণ চাকমা দৈনিক জবাবদিহি কে বলেন, আমি ব্যক্তিগত ভাবে তদন্তের বিষয়টি পুলিশ কমিশনার মহাদয়কে অবগত করেছি। বোয়ালিয়া মডেল থানা, রাজপাড়া থানা, চন্দ্রিমা থানা ও ডিবি শাখার ব্যাপক পরিবর্তন প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছি। এই সমস্ত থানার আওতাধীন এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া আবশ্যক। তিনি আরও বলেন, আমি আমার মতামত জানিয়েছি এখন বদলির বিষয়ে তো আমার কোনো এখতিয়ার নেই। এই বিষয়ে পুলিশ কমিশনার মহাদয় সিদ্ধান্ত নিবেন। কিন্তু, ওসি মেহেদী মাসুদ এর বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ সহ অনেক অভিযোগ থাকলেও তার বিরুদ্ধে আজ অব্দি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নি।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একটি সূত্র খবর২৪ঘন্টাকে জানিয়েছেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময়ে আরএমপিতে যোগদানকারী অনেক কর্মকর্তা এখনো আরএমপিতে বহাল তবিয়তে আছে। তারা এখনো গোপন বৈঠকের মাধ্যমে শেখ হাসিনার এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। সূত্রটি জানায় আরএমপি তে অবশিষ্ট শেখ হাসিনার দোসররা প্রতিনিয়ত বৈঠক করে এবং কাজে গতিশীলতা না বাড়িয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর মাধ্যমে অস্থিরতা পরিস্থিতি বজায় রাখতে কাজ করছে। পরিপূর্ণ কাজ না করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বজায় রাখায় তাদের লক্ষ্য।
সূত্রটি মোতাবেক, এই সব দোসরদের কারো কারো চাকরি থেকে অবসরের সময় ঘনিয়ে এসেছে আবার কেউ কেউ এটাও জানেন তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে। যে-কোনো সময় হয়তো তাদেরকে জোরপূর্বক অবসরে পাঠানো হতে পারে। বিপদ আসন্নবর্তী জেনেই তারা সর্বশেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকারকে বিতর্কিত করার। এই দোসররাই মূলত আরএমপির কার্যক্রমে গতিশীলতা বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে।
বিএ..