1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় তারা দুইজন - খবর ২৪ ঘণ্টা
শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:১৫ পূর্বাহ্ন

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় তারা দুইজন

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৭ জুলা, ২০২১

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আলোচনায় এখন রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার (মুকুল) ও আওয়ামী লীগের নারী বিষয়ক উপ-কমিটির বহিষ্কৃত সদস্য হেলেনা জাহাঙ্গীর। প্রথমজন ফোনালাপ ফাঁসে এবং দ্বিতীয়জন ফেসবুকে ভুঁইফোড় সংগঠনের প্রচারণা চালিয়ে এ আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছেন। দুজনেরই রাজনৈতিক প্রতিপত্তি দেখানোর মনোভাব রুষ্ট করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়কেও।

অভিভাবক ফোরামের নেতা মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর সঙ্গে কামরুন নাহারের ফোনালাপের ৪ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের একটি ক্লিপ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ফোনালাপে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শোনা যায় তাকে। নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী পরিচয় দিয়ে কথোপকথনের এক পর্যায়ে কামরুন নাহারকে বলতে শোনা যায়, তিনি বালিশের নিচে পিস্তল ও ব্যাগে রিভলবার রাখেন। এমন আরও কিছু বক্তব্য রয়েছে যা প্রকাশ যোগ্য নয়। এ নিয়ে ভিকারুননিসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিব্রতবোধের কথা জানাচ্ছেন। কেউ কেউ বলছেন, এই ফোনালাপে ভিকারুননিসার সুনাম ও ঐতিহ্য ক্ষুণ্ন হয়েছে।

জানা গেছে, ফোনালাপের সূত্রপাত সম্প্রতি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শাখা বেইলী রোড ক্যাম্পাসে পশুর হাট বসানোকে কেন্দ্র করে। ঈদুল আজহার দুই তিনদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিবার নামে একটি গ্রুপ থেকে মূল ক্যাম্পাসে গরুর হাট বসেছে এমন সচিত্র তথ্য দেয়া হয়। এ নিয়ে ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হলে রাতের আঁধারেই গরুর হাট সরিয়ে নেয়া হয়। কেউ কেউ অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ এই হাট বসানোর অনুমতি দিয়েছেন।

তার বিরুদ্ধে করোনাকালে বাসায় বসে অফিস করারও অভিযোগ ওঠে। অনেক অভিভাবক তাকে গিয়ে অফিসে পান না। একই কাজের জন্য একাধিক দিন দৌঁড়ঝাপ করতে হয়, এমন তথ্যও প্রচার হয়। গরুর হাট বসানো ও উঠিয়ে ফেলাকে কেন্দ্র করেই মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর সঙ্গে কথোপকথনের এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে গালিগালাজ করেন কামরুন নাহার।

তার ওই ফোনালাপ প্রসঙ্গে সিনিয়র সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন ‘একজন প্রধান শিক্ষিকার ভাষা যদি হয় পৃথিবীর নোংরা রাস্তার পাশে থাকা কারও চেয়ে জঘন্য, বালিশের নিচে থাকে পিস্তল আর ব্যাগে রিভলবার, সাথে অসভ্য ক্যাডার, তাহলে তার হাতেই একটি বিখ্যাত স্কুলের সর্বনাশ। ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে করেছেন, হলের ছাত্রলীগ নেত্রী ছিলেন, তার মানে এটার গৌরব রাস্তায় মিশিয়ে দেয়ার অধিকার নেই। এটা ব্যবহার করে পেশাগত জীবনে সুবিধা নিচ্ছেন নিন।

তাই বলে এমন ঔদ্ধত্য আর অশালীন নোংরা ভাষায় গালিগালাজ নোংরা দম্ভ দেখাবার অধিকার নেই। জঘন্য বিকৃতরাই পারে এমন। এমন নোংরা ভাষা ব্যবহারে অভ্যস্ত একদল সমাজে মুখোশ পরে হাঁটে। কোনো সুস্থ মানুষ এদের ভাষা সমর্থন দূরে থাক, শুনতেই পারে না। প্রধান শিক্ষিকাসহ এরা পরিবার থেকে কী শিক্ষা পেয়েছেন? উচ্চশিক্ষা কী দিয়েছে?ছাত্রীদের কী শিক্ষা দেবেন? বোঝা যাচ্ছে।’

ফোনালাপের এই ভাষায় বিস্ময় থেকে প্রবাসী সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সত্যি সত্যি উনি শিক্ষক? কলেজের প্রিন্সিপাল? সত্যি! সত্যি!! সত্যি!!!’

মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ডা. আবদুর নূর তুষার তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘উনি কি সত্যিই ভিকারুননিসা নূন স্কুলের প্রিন্সিপাল? নাকি বিকারগ্রস্ত হয়ে বিকারুননিসা হয়ে গেলেন? উনি ফেসবুকে গালিসাহিত্য পড়ালে পারেন। পিস্তল বালিশ গালি ক্ষমতা। উফফ হোয়াট আ লেডি মাস্তান!’

জানতে চাইলে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক কামরুন নাহার  বলেন, ‘গত সাত মাস আগে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক আমি এ প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করার পর থেকে অভিভাবক ফোরামের কয়েকজন দলবল নিয়ে এসে অনৈতিক সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব দিয়ে আসছে। তাদের কথা না শুনলে আমি এখানে থাকতে পারবো না বলে হুমকি দেয়া হয়। দুইবার আমার অফিস রুমে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। রুমে প্রবেশ করে টেবিল চাপড়ে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। এমনকি আমাকে মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে। তাতে আমি গুরুত্ব না দিয়ে নিয়মের মধ্যে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছি।’

‘এ বছর প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির লটারির সময়ও ১২০ সিট খালি রয়েছে। এছাড়া কিছু শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। সবমিলিয়ে প্রায় ১৫০-৬০ সিট খালি আছে। মূলত সেগুলোতে অবৈধ ভর্তি বাণিজ্য করতে অভিভাবক প্রতিনিধিরা আমাকে অনেক আগে থেকে চাপ দিচ্ছে। আমি তাদের কথা না শোনাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা সুবিধাবাদি কিছু অভিভাবকদের নিয়ে আমাকে চেয়ার থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। যোগদানের দিনেও তারা আমাকে অফিস কক্ষে প্রবেশ করতে দেয়নি। পরে মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় দায়িত্বে বসি।’

ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘সম্প্রতি একাদশ শ্রেণিতে একজনকে ভর্তির জন্য অভিভাবক মীর সাহাবুদ্দিন টিপু আমাকে চাপ দিয়ে আসছিলেন। তার কাজ করে না দেয়ায় আমার সঙ্গে তার ফোনালাপ এডিট করে যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়া হয়েছে।’

এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘অধ্যক্ষ আমার পূর্ব পরিচিত। এজন্য মাঝে মাঝে তার সঙ্গে আমার ফোনে কথা হতো। গত শুক্রবার শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের বিষয়ে তাকে আমি ফোন করি। এ সময় তিনি অভিভাবক প্রতিনিধি ও সাধারণ অভিভাবকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।’

এ বিষয়ে সব তথ্য-প্রমাণ তার কাছে রয়েছে বলেও জানান তিনি। কামরুন নাহারের আগে থেকে আলোচনায় আছেন ব্যবসায়ী (সিআইপি) ও আওয়ামী লীগের নারী বিষয়ক উপ-কমিটির বহিষ্কৃত সদস্য হেলেনা জাহাঙ্গীর। সম্প্রতি ‘চাকরিজীবী লীগ’ নামে একটি সংগঠনের প্রচারণা চালিয়ে খবরের শিরোনাম হন তিনি।

নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে চাকরিজীবী লিগ সম্পর্কে তিনি লিখেছেন, ‘দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় আর সরকারের হাতকে শক্তিশালী করার প্রত্যাশায় বাংলাদেশের আওয়ামী চাকুরীজীবি লীগ…। নামটি অনেকের কাছে নতুন মনে হলেও এটি অনেক দিন ধরে কাজ করা একটি সংগঠন। এটির বয়স প্রায় তিন থেকে চার বছর। অনেক দিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে দেশব্যাপী। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৩২ জেলায় অফিসসহ কমিটি দেয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে এই সংগঠনটির

সদস্য লক্ষ লক্ষ। অবসরপ্রাপ্ত নৌবাহিনী, পুলিশ, সেনাবাহিনী (সদস্য), ব্যাংকার, বেসরকারি অনেক চাকরিজীবী এখানে আছেন। প্রচার-প্রচারণা নেই, হয়তাে এজন্য অনেকের অজানা। কিছুদিনের মধ্যেই সবাই জেনে যাবেন। কারণ প্রতিদিন জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে আগামীর কার্যক্রম (নিয়ে) আলােচনা চলছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুমােদন দিলেই এটি অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে দেশ ও জনগণের জন্য নিবেদিত সহায়তাকারী সংগঠন হিসেবে কাজ করবে।’

এই ভুঁইফোড় সংগঠনের প্রচারণা আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের নজরে এলে তারা নাখোশ হন। ব্যাপক সমালোচনা ও তোপের মুখে পড়েন হেলেনা জাহাঙ্গীর। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বলতে থাকেন, তৃণমূল পর্যায়ের সাধারণ সদস্য না হয়েও তিনি কীভাবে আওয়ামী লীগের নারী বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য হলেন? দলের প্রতি তার কী অবদান রয়েছে? তিনি সংগঠনের নিয়ম-কানুন জানেন না। ভুঁইফোড় সংগঠনের প্রচারণা চালিয়ে আওয়ামী লীগের সম্মানহানি করেছেন।

এই সমালোচনার মধ্যে আওয়ামী লীগের ওই উপ-কমিটি থেকে ২৫ জুলাই বাদ দেয়া হয় হেলেনা জাহাঙ্গীরকে । যদিও পরে সেই স্ট্যাটাস সরিয়ে ফেলেন তিনি। একইসঙ্গে অবস্থান বদলে নতুন স্ট্যাটাস দেন ২৬ জুলাই। এতে তিনি দাবি করেন, চাকরিজীবী লীগের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

পরে আবার ফেসবুক লাইভে এসে কান্নাকাটি করে নিজের অবস্থানের পক্ষে সাফাই গান হেলেনা জাহাঙ্গীর।

জেএন

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST