রাজশাহী মহানগর পুলিশের ( আরএমপি ) সদর দপ্তরে একজন ঠিকাদার ও তার প্রতিনিধিকে মারধর করে টেন্ডার ছিনতাই ঘটনায় এখনো কেউ গ্রেফতার হয়নি। এ বিষয়ে শাহমখদুম থানায় একটি মামলা দায়ের হলেও রোববার পর্যন্ত জড়িত কাউকে শনাক্তও করতে পারেনি পুলিশ। যদিও আরএমপির সদর দপ্তরে টেন্ডার
ছিনতাই ঘটনাটির বিভাগীয় তদন্ত করছে নগর বিশেষ শাখার (এসবি) উপকমিশনার (ডিসি) আনজুমান কালামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি। টেন্ডারটি ঘটনার পরের দিন ২৫ মে কর্তৃপক্ষ বাতিল করেছেন। তবে সার্বক্ষণিক কঠোর নিরাপত্তা ও সিসিটিভি মোড়ানো আরএমপির সদর দপ্তরে প্রকাশ্যে টেন্ডার ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে মহানগর পুলিশের মাঝে।
জানা গেছে, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে পুলিশের কাজে সার্বক্ষণিক ভাড়ায় যানবাহন সরবরাহ সেবা ও অস্থায়ী ভিত্তিতে ১২ জন বাবুর্চি ও ১০ জন সুইপারসহ কিছু জনবল নিয়োগে দুটি গ্রুপের দরপত্র দাখিলের শেষদিন ছিল ২৪ মে। ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার বেশ কয়েকজন ঠিকাদার দুটি গ্রুপের টেন্ডারে অংশ নিতে আরএমপি সদর দপ্তরের দ্বিতীয় তলায় আসেন। তবে স্থানীয় একটি ঠিকাদারি সিন্ডিকেটের পক্ষে সেখানে আগে থেকেই অবস্থান নেন কিছু সশস্ত্র ক্যাডার। দুই গ্রুপের এ দুটি গ্রুপের কাজ দুজন ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতেই সেখানে তৎপর হয়ে ওঠেন।
জানা যায়, সমঝোতার মাধ্যমে দুটি গ্রুপের টেন্ডার পরিকল্পনামাফিক তিনটি করে টেন্ডার জমা করেন ক্যাডার বাহিনী। ফলে টেন্ডারে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক অন্য ঠিকাদারদের তারা সিঁড়ি দিয়ে পুলিশ ভবনের দুই তলায় উঠতে বাধা দেন। এ সময় শফিউল আলম নামের একজন ঠিকাদার ও তার প্রতিনিধিরা টেন্ডারপত্র-
বাক্সে ফেলতে গেলে ক্যাডার বাহিনী তাদের বাধা দেন। শফিউল আলম টেন্ডার জমা দিতে তৎপর হলে একপর্যায়ে তার কাগজপত্র ছিনতাই করে তাকে ও তার প্রতিনিধিদের অস্ত্রের মুখে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে ঠিকাদার শফিউল আলম আরএমপি কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ও বাদী হয়ে শাহমখদুম থানায় পৃথক একটি মামলা করেন। জানা গেছে, আরএমপির দুটি গ্রুপের টেন্ডার বিক্রি ও
সুষ্ঠুভাবে গ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন আরএমপির সদর দপ্তরের প্রশাসন সহকারী জুলমাত হাবিব। টেন্ডার বাক্স পাহারায় থাকার কথা ছিল এমএলএসএস আব্দুল গোফুর ও সমন বাহক মাহবুবুর রহমানের। তবে ঘটনার সময় তারা কেউই টেন্ডার বাক্সের কাছে ছিলেন না। টেন্ডার জমার দিন বাক্সেও পাহারায় সশস্ত্র পুলিশ থাকার কথা থাকলেও সেখানে ওই সময় কোনো পুলিশও ছিল না।
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রশাসন সহকারী জুলমাত হাবিব। তিনি বলেন, ঘটনাটির বিভাগীয় তদন্ত হচ্ছে। কারও অবহেলা থাকলে তদন্তে বেরিয়ে আসবে। তার অজ্ঞাতেই ঘটেছে এ ঘটনা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) শাহমখদুম থানার এসআই আবু হারেস বলেন, এজাহারে বাদী কারও নাম উল্লেখ করেননি। কারা জড়িত, এখন পর্যন্ত বাদী তাও জানাতে পারেনি। তবে কারা এ কাজে জড়িত, তাদের শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রধান নগর বিশেষ শাখার উপকমিশনার (ডিসি) আঞ্জুমান কালাম এই বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাননি। আরএমপির মুখপাত্র এডিসি গোলাম রুহুল কুদ্দুশ বলেন, ঘটনাটির তদন্ত হচ্ছে। আরও কিছুদিন সময় লাগতে পারে। সূত্র -যুগান্তর
জেএন