বিশেষ প্রতিবেদক: রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ এসআই মাহবুব হাসানের দাপটে কোনঠাসা হয়ে আছেন ইন্সপেক্টরা। ইন্সপেক্টরদের সাথে চরম দূর্ব্যবহার করেও বহাল তবিয়তে আছেন এসআই হাসান । তার যোগদানের পর গত ৪ বছরে টিকতে পারেনি অন্তত ৬ জন ইন্সপেক্টর । সবাই তার দাপট ও বেআইনী কর্মকান্ডে সম্মানহানীর ভয়ে ডিবি থেকে বিভিন্ন স্থানে বদলি হয়ে গেছেন। চেইন অব কমান্ড না মানা, সিনিয়রদের সম্মান না দেয়া বিভিন্নভাবে লাঞ্জিতের জন্য ডিবি ডিসির নিকট অভিযোগ দেয়ার পরও তার কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর এসআই মাহবুব হাসান ডিবিতে যোগদান করেন। এরপর থেকে মূলত সে বেপরোয়া হয়ে উঠে।২০১৩সালের ব্যাচ এসআই হাসান । প্রভিশন পিরিয়ড পার করার পর ডিবিতে যোগদানের পর থেকে দাপট দেখানো শুরু করেন। ইন্সপেক্টরদের কমান্ড না শোনা বিতর্কিত কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করলে সে আরো মরিয়া হয়ে উঠে। সেখানে এমন অবস্থা তৈরী হয় ইন্সপেক্টরদের বসার জায়গা নেই অথচ তার রুম আলিসান। যেখানে ইন্সপেক্টরদের এমন অবস্থা সেখানে সাব ইন্সপেক্টরা আরো অসহায় হয়ে পড়েন। এক সাব-ইন্সপেক্টরের সাথে অফিসের ভেতরেই হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
তার মাত্রা এমন পর্যায়ে চলে যায় ডিবিতে কর্মরত তৎকালীন পরিদর্শক (ওসি) সিরাজুম মনির প্রতিবাদ শুরু করেন। আর এ নিয়ে তার সঙ্গে প্রকাশ্য দ্বন্দ শুরু হয়। এটি নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে তার সঙ্গেও এক প্রকার হাতাহাতির ঘটনা পর্যন্ত ঘটে ।পরে ওসি সিরাজুম মনির গোয়েন্দা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বরাবর অভিযোগ দেন। পরে অভিযোগের কোন সুরাহা না পেয়ে তিনি নিরবে সেখান থেকে বদলি নিয়ে চলে আসেন। বর্তমানে তিনি চন্দ্রিমা থানার ওসি।
ওসি সিরাজুম মনির বলেন, একজন জুনিয়র এসআই যখন উধ্যত আচরণ করেন আর সেই আচরণের বিচার না পাওয়া যায় তখন আর বলার কিছুই থাকেনা। তিনি বলেন, চাকরির বয়স কতইবা হলো এর মধ্যে এত সম্পদ, নিরিহ লোকজনকে যেভাবে হয়রানী ও টাকা পয়সার লেনদেন, এতে করে নিজেদের মানসম্মান আর থাকেনা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার দূর্বব্যবহারে অসন্তোস্ট হয়ে ইন্সপেক্টর সিরাজুম মনির, মাসুদ পারভেজ, হুমায়ন কবির, রবিউল ইসলাম, নিবারন চন্দ্র বর্মনসহ আরো কয়েকজন ইন্সপেক্টর সেখান থেকে বদলি নিয়ে অন্যত্র চলে আসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বর্তমানে এক থানার ওসি জানান, পুলিশে চেইন অব কমান্ড আছে। উর্ধতন কর্মকর্তাদের সম্মানের বিষয় রয়েছে। কিন্তু ডিবিতে এসআই হাসানের কাছে এগুলো কিছুই নেই। কার প্রভাবে সে এগুলো করে আমাদের জানা নেই। এ বিষয়ে ডিবি ডিসির নিকট অনেকবার অনেকেই অভিযোগ দিয়েছেন কিন্তু কোন কাজই হয়নি। বরং উল্টো নিজেদের মধ্যে সমস্যা মিটিয়ে নেয়ার জন্য তিনি বলেছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, আমাকে কোথাও এ ব্যাপারে স্বাক্ষি দেয়ার প্রয়োজন হলে আমি দেব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আর এক ওসি বলেন, আমরা ডিপার্টমেন্টকেঅনেক বেশি শ্রদ্ধাও সম্মান করি। আমরা কারো মানহানী হোক এটাও আমরা চাইনা। কিন্তু এসআই হাসান যা করে এটা আমাদের পুলিশে যায়না। আমরা তাই নিজেদের সম্মান নিয়ে চলে এসেছি।
এক প্রশ্নের জবাবে ওই ওসি বলেন, ‘আমরা সরাসরি কমিশনারের নিকট যেতে পারতাম কিন্তু ডিসি স্যার আমাদের এ ব্যাপারে নিষেধ করেনে।’
তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে তদন্ত করুক ওই সময় কোন কোন ইন্সপেক্টর ছিলেন সবাইকে ডাকুক সবাই একই কথা বলবে।’
জানা গেছে, বর্তমানেও দু’জন ইন্সপেক্টর ডিবিতে রয়েছেন।তাদেরও এক প্রকার কোনঠাসা করে রেখেছেন। নতুন কমিশনার যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন নাম দিয়ে গায়েবী অভিযোগ দেয়া শুরু করেছেন।
এদিকে, এ বিষয়ে ডিবি ডিসি আবু আহমেদ আল মামুন কোন মন্তব্যই করতে রাজি হননি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে এসআই হাসানের নিকট জানতে চাইলে তিনি এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন (আরএমপি) পুলিশ কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি খবর২৪ঘন্টাকে বলেন,মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠলে সে যত বড়ই অফিসার হোক না কেন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী মাদকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন,এ ব্যাপারে সাংবাদিকসহ সকল পেশার মানুষের সহযোগিতা কামনা করছি।
প্রিয় পাঠক,আরো বেশকিছু তথ্য নিয়ে খুব শীঘ্রই আসছি আপনাদের মাঝে চোখ রাখুন খবর২৪ঘন্টায়।