1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
আবারো তামাকের অবৈধ বিজ্ঞাপনে সয়লাব রাজশাহী - খবর ২৪ ঘণ্টা
বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ১০:৩৯ অপরাহ্ন

আবারো তামাকের অবৈধ বিজ্ঞাপনে সয়লাব রাজশাহী

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২১ জুলাই, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সবুজের সমারোহে সুশোভিত শিক্ষা নগরী রাজশাহীতে আবারো তামাকের বহুজাতিক বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপন আগ্রাসনে ভরে গেছে। তামাকের দোকানগুলোর যেদিকেই চোখ যায় সেদিকে শুধুই তামাক কোম্পানিগুলোর আইন বহির্ভুত অবৈধ বিজ্ঞাপনের ছড়াছড়ি। তবে তামাকের অবৈধ এসব বিজ্ঞাপন অপসারণে গত বছরের সেপ্টেম্বরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নোটিশ জারি করলেও তা অপসারণ করা হয়নি। তবে জেলা প্রশাসন বলছে, তামাকের এসব অবৈধ বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে নতুন করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মঙ্গলবার (২১ জুলাই) মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ‘জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনাল- জেটিআই’ ও ‘ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ-বিএটিবি’ এবং ‘আবুল খায়ের

টোব্যাকো কোম্পানি’ তাদের অবৈধ বিজ্ঞাপনে এখন পুরো নগরী ছেয়ে দিয়েছে। ‘জেটিআই’ তাদের ‘শেখ’ প্রতি শলাকা ৫টা, ‘এলডি’ ৫ টাকা, ‘নেভি ৭ টাকা’- এমন বিজ্ঞাপনে পুরো নগরীর আনাচে-কানাচে সয়লাব করে দিয়েছে। আবার ‘বিএটিবি’ বিজ্ঞাপন ছড়াচ্ছে ‘এখানে ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রি হয়। বেনসন প্রতি শলাকা ১৪ টাকা, গোল্ডলিফ ১০ টাকা, স্টার ৭ টাকা, রয়্যাল্স/ডার্বি ৫ টাকা। বিজ্ঞাপনের নিচে আবার লেখা রয়েছে- ‘নিরাপদ থাকুন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন’। আবার রাজশাহীতে কোম্পানিটির ডিস্ট্রিবিউটর মেসার্স আবুল হোসেনের পক্ষ থেকে কৌশলী এক বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এটির পক্ষ থেকে স্টিকারে একটি হটলাইন নম্বর ব্যবহার যে কোন অভিযোগ কিংবা পরামর্শের জন্য এই হটলাইন নম্বরে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। যা কোম্পানিটির একটি কৌশলী প্রচার-প্রচারণা। এছাড়া আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানি বিজ্ঞাপন ছড়াচ্ছে “বাজেটে সিগারেটের দাম বাড়লেও আপনার প্রিয় ব্র্যান্ড ‘মেরিস’ আগের দামে, একই উন্নত স্বাদে।” তামাক

নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী এসব বিজ্ঞাপন প্রচার নিষিদ্ধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
কেননা- ধূমপান ও তামাকজাত ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনের ৫ এর (ছ) ধারায় স্পষ্ট উল্লেখ আছে- ‘তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে যে কোন উপায়ে তামাকজাত দ্রব্যের প্রচার করবেন না বা করাবেন না। কেউ আইনের এ ধারার বিধান লঙ্ঘন করলে তার তিন মাস বিনাশ্রম কারাদÐ বা অনধিক এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবে। একইভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে রয়েছে- বিক্রয় স্থলে তামাকপণ্যের প্যাকেট বা মোড়ক সাদৃশ্য কোন দ্রব্য, লিফলেট, হ্যান্ডবিল, পোস্টার, ছাপানো কাগজ, বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড বা অন্য কোনোভাবে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা যাবে না। আইনের এই ধারা অমান্যকারীকে ৩ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড বা অনধিক ১ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করার বিধান রয়েছে।
অথচ মহানগরীর অধিকাংশ তামাকপণ্যের দোকানে তামাকপণ্য রাখার জন্য ‘নজরকারা’ শো-কেস

উপহার দেয়া হয়েছে। আবার রাস্তার পাশে বেশ কিছু তামাকপণ্যের দোকানে উপহার দেয়া হয়েছে ছাতা। এছাড়া উপহার দেয়া হয়েছে টি-শার্ট, মগ, স্ট্রে, লাইটার ইত্যাদি।
অভিযোগ রয়েছে- করোনার এই সময়কে কাজে লাগিয়ে তামাকের বহুজাতিক এসব কোম্পানি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন করে দেদারছে তাদের কৌশলী বিজ্ঞাপন প্রমোশন চালাচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন বর্তমানে এসব তামাক কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা না নেয়ায় তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এভাবে তামাক কোম্পানিগুলোর রমরমা বিজ্ঞাপন বাণিজ্য চলতে থাকলে গ্রিন, ক্লিন, এডুকেশন ও সর্বপরি হেলদি সিটি গড়ার যে গৌরব রয়েছে হতে পারে।
রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, ‘ধূমপানের কারণে করোনার বিস্তার বেশি হচ্ছে বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে। তারপরও এই ধূমপান বন্ধে প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ আমাদের চোখে পড়ছে না। বরং ধূমপানে উৎসাহিত করতে তামাক কোম্পানিগুলোর অবৈধ বিজ্ঞাপনে নগরী ছেয়ে গেছে। তাই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগের জন্য মহানগরীর অভ্যন্তরে তামাকপণ্যের অবৈধ বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে হবে। পাশপাশি নগরবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পাবলিক প্লেসে ধূমপান বন্ধের কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
এদিকে গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে তামাক পণ্যের বিক্রয়কেন্দ্রে অবৈধ বিজ্ঞাপন সরবরাহ না করা এবং নগরীতে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপন অপসারণে তামাক কোম্পানিগুলোর (বিএটিবি, জেটিআই, আবুল খায়ের টোব্যাকো) পরিবেশক/স্বত্বাধিকারী বরাবর নোটিশ জারি করেছিল জেলা প্রশাসন। রাজশাহী জেলা প্রশাসনের তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. নজরুল ইসলামের স্বাক্ষরে এই নোটিশ জারি করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও কোম্পানিগুলো তাদের বিজ্ঞাপন অপসারণ

কিংবা বন্ধ করেনি। এছাড়া অবৈধ বিজ্ঞাপন প্রচারের দায়ে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রæয়ারি ‘বিএটিবি’র রাজশাহীর পরিবেশক মেসার্স আবুল হোসেনের ম্যানেজার মো. মিজানুর রহমানকে আটক এবং তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। এসময় অবৈধ বিজ্ঞাপন প্রচার করবে না মর্মে মুচলেকা দিয়ে মিজানুর ছাড়া পায়। কিন্তু তারপরও বন্ধ হয়নি তামাক কোম্পানিটির অবৈধ বিজ্ঞাপন। এর আগে গত বছরের ১৬ জুলাই ‘জেটিআই’র রাজশাহীর আঞ্চলিক ডিপোতে অভিযান চালিয়ে ৬০-৭০ কার্টন অবৈধ বিজ্ঞাপন সামগ্রী জব্দ ও লাখ টাকা জরিমানা করেছিল ভ্রাম্যমান আদালত। কিন্তু তারপরও কোম্পানিটির অবৈধ বিজ্ঞাপন বন্ধ হয়নি।
উন্নয়ন সংস্থা ‘এসিডি’র তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের এডভোকেসি অফিসার মো. শরিফুল ইসলাম শামীম বলেন, ‘বর্তমানে আবারো তামাকের বহুজাতিক কোম্পানিগুলো পুরো নগরীতে তামাকের অবৈধ বিজ্ঞাপনে সয়লাব করে দিয়েছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের স্বার্থে এসব বিজ্ঞাপন বন্ধে দ্রত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা জরুরি।’
রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) আব্দুল জলিল বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী- সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কেউ বিজ্ঞাপন প্রচার করতে চাইলে সিটি কর্পোরেশনের অনুমতির প্রয়োজন। তাছাড়া তামাক কোম্পানি যে বিজ্ঞাপন ছড়াচ্ছে সেটি তো আইন অনুযায়ী অবৈধ। এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবো। পাশাপাশি মহানগরী এলাকায় তামাকের অবৈধ বিজ্ঞাপন বন্ধে মোবাইল কোর্টসহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এমকে

পোস্টটি শেয়ার করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By Khobor24ghonta Team