নাটোর প্রতিনিধি: আজ ৪ জুন নাটোরের ছাতনী গণহত্যা দিবস। ৭১’র এই দিনে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী গ্রামে ৪শ’ বাঙ্গালীকে জবাই করে হত্যা করে। যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে নৃশংস ও হৃদয় বিদারক ঘটনা। শহীদ পরিবারের সদস্যরা প্রতিবছর দিনটিকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করলেও স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও ছাতনী গণহত্যার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মেলেনি।
৭১’এর ৪ জুন গভীর রাতে পাকিস্তানী সেনা ও তাদের দোসররা নাটোর শহর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে ছাতনী গ্রামে গণহত্যা চালায়। প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা সে সময়ের এমপি শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর বাড়ি ছাতনী গ্রামে হওয়ায় এই জনপদের অধিকাংশ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। একারণে পাকিস্তানবাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর ও অবাঙ্গালীদের আক্রোশে পড়ে এই গ্রাম। অবাঙ্গালী হাফেজ আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে পাকবাহিনী গভীর রাতে ছাতনী গ্রামসহ আশেপাশের ১০টি গ্রামে ঢুকে ঘুমন্ত মানুষদের ধরে পিঠমোড়া করে বেঁেধ ছাতনী সুইচ গেটে এনে জড়ো করে। প্রথমে গুলি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুঁচিয়ে এবং জবাই করে হত্যা নিশ্চিত করার পর এসিড ছিটিয়ে দেয়া হয়। পরে এসব শহীদদের লাশ ছাতনী সইচ গেট সহ আশেপাশের পুকুর ও ডোবায় মাটি চাপা দেয়া হয়।
স্থানীয় শহীদ পরিবারের সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধারা ছাতনী গণহত্যা দিবসকে সরকারীভাবে স্বীকৃতির দাবী জানিয়েছেন। পাশাপাশি এই হত্যাকারীদের সাথে জড়ির যুদ্ধাপরীধের বিচার দাবী করেছেন।
স্বাধীনতার পর এসব স্থানে শহীদদের স্মরনে স্থানীয়ভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সরকারী ভাবে ছাতনী শহীদ মিনার নির্মাণ হয়েছে। যাদের এতবড় আতœ ত্যাগ তাদের পরিবারের সদস্যদের ভাগ্যেও জোটেনি সরকারী সাহায্য-সহযোগীতা। আর তাই শহীদ পরিবারের সদস্যদের দাবী ছাতনী গণহত্যার সাথে জড়িতদের বিচার করা হোক, আর স্বজনহারাদের সহযোগীতায় এগিয়ে আসুক সরকার।
হাজারো শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের মহান স্বাধীনতা। আর এসব শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন শহীদদের স্বজনরা।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ