খবর২৪ঘণ্টা.কম,ডেস্ক: আজ ২৯ নভেম্বর। পঞ্চগড় হানাদার মুক্ত দিবস।
নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পঞ্চগড়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে। বুধবার সকালে সার্কিট হাউস চত্বরের বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটি উৎযাপন শুরু হয়। জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে।
শোভাযাত্রায় মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, স্কুল কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেয়। এর পর জেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত ৭১ এর বধ্য ভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করা হয়। পরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা কমান্ডার মির্জা আবুল কালাম দুলালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন, পঞ্চগড় ১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হক প্রধান, জেলা প্রশাসক অমল কৃষ্ণ মন্ডল, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের জনপ্রেক্ষিত বিশেষজ্ঞ নাঈমুজ্জামান মুক্তা, জেলা পরিষদ প্রশাসক আমানুল্লাহ বাচ্চু,পুলিশ সুপার গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট ।
৭১’র এই দিনে মুক্তিকামী জনতা কঠিন লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে পঞ্চগড়কে পাকিস্তান হানাদার মুক্ত করেছিলেন। মুক্তিকামি মুক্তিযোদ্ধা এবং পঞ্চগড়ের আপামর জনসাধারণের জন্য তাই এই দিনটি আনন্দের।
সন্ধ্যায় সরকারি অডিটোরিয়ামে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের পর পাকবাহিনী সারাদেশে আক্রমণ শুরু করলেও ১৬ই এপ্রিল পর্যন্ত পঞ্চগড় মুক্ত থাকে। পাকবাহিনী সড়ক পথে এসে ১৭ই এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০ টায় পঞ্চগড় দখল করে নেয়। পরবর্তীকালে জেলার ৪ থানা তারা দখলে নিলেও অমরখানায় একটি ব্রিজ ভাঙ্গতে না পারায় তারা তেঁতুলিয়া ঢুকতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়কাল তেঁতুলিয়া মুক্ত ছিল। মুক্ত অঞ্চল হিসেবে তেঁতুলিয়া সকল কর্মকাণ্ডের তীর্থ ভূমিতে পরিণত হয়। অস্থায়ী সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সভা তেঁতুলিয়াতেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
২৮শে নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে পাকবাহিনীর উপর ঝড়ো আক্রমণ করেন। এ আক্রমণে পঞ্চগড় শহরের পূর্বদিকে ডিফেন্স নিয়ে থাকা পাকবাহিনী টিকতে না পেরে টুনিরহাট দেবীগঞ্জ ভায়া ডোমার হয়ে কাঁচা রাস্তা ধরে সৈয়দপুর অভিমুখে পিছু হটতে থাকে। ওইদিন রাতে মুক্তি, মিত্র, ট্যাংক ও পদাতিক বাহিনীর সম্মিলিত সাড়াশি আক্রমণে পরাজিত হয়ে পাক বাহিনী পঞ্চগড়ের মাটি ছেড়ে চলে গেলে ২৯শে নভেম্বর ভোরে পঞ্চগড় হানাদার মুক্ত হয়। এদিন পাকবাহিনীর সাথে ভয়াবহ যুদ্ধে ৪৮ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় শতাধিক মিত্র বাহিনীর সদস্য শহীদ হন। আহত হন অনেকে।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ