খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: অভিন্ন ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সারাদেশে একযোগে শুরু হতে যাচ্ছে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা। এবার পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩৩ জন পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার দিন সকালে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি রাজধানীর আশকোনার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করবেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এসএসসি ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষার প্রথম দিন বাংলা (আবশ্যিক) প্রথমপত্র অনুষ্ঠিত হবে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের আওতায় প্রথমদিন কুরআন মাজিদ ও তাজবিদ অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টা পরীক্ষা গ্রহণ চলবে। এসএসসি পরীক্ষায় বাংলা দ্বিতীয়পত্র এবং ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র ছাড়া সব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে এবার পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।
নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়সমূহ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এর নির্দেশনা অনুসারে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে ধারাবাহিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বর অনলাইনে বোর্ডে পাঠাবে।
সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২৬ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৫ মার্চ শেষ হবে।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ৬ মার্চ শেষ হবে।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এবার সারাদেশে ১৩১টি প্রতিষ্ঠানের মোট ৮৫টি কেন্দ্রে মোট ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এদের মধ্যে আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের আওতায় এসএসসি পরীক্ষার্থী ১৭ লাখ ১০২ জন, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের আওতায় দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেবে তিন লাখ ১০ হাজার ১৭২ জন এবং এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় এক লাখ ২৫ হাজার ৫৯ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে।
২০১৮ সালের তুলনায় এবার মোট পরীক্ষার্থী বেড়েছে এক লাখ তিন ৪৩৪ জন। এর মধ্যে ছাত্র বৃদ্ধি পেয়েছে ৪৭ হাজার ২২৯ জন এবং ছাত্রী বৃদ্ধি পেয়েছে ৫৬ হাজার ২০৫ জন। এবার নিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭ লাখ ৪০ হাজার ৯৩৭ জন। অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ লাখ ৯১ হাজার ৫৪ জন। আর বিশেষ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা (১, ২, ৩ ও ৪ বিষয়ে) ১ লাখ ৪২ হাজার ৮৩৯ জন।
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় গত দুই বছরে ঝরে পড়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ শিক্ষার্থী। অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় যারা অংশ নিচ্ছেন তাদের মধ্যে গত দুই বছর আগে নবম শ্রেণিতে নিবন্ধন করেছিল ২২ লাখ ৮৭ হাজার ৩২৩ জন শিক্ষার্থী। এসব পরীক্ষার্থীর মধ্যে নিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭ লাখ ৪০ হাজার ৯৩৭ জন। সেই হিসেবে পাঁচ লাখ ৪৬ হাজার ৩৮৬ জন নিয়মিত শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে।
গত কয়েক বছর থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সমালোচনার মুখে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় সরকার। ২০১৮ সালের এইচএসসি পরীক্ষা থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে সক্ষমতা দেখায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত বছরের পরীক্ষায় নেওয়া পদক্ষেপ এবারও গ্রহণ করেছে তারা। তবে গত বছরের চেয়ে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এর আগে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংবাদ সম্মেলনে জানান, এবার প্রশ্নপত্রের খাম হবে এলুনিনিয়ামের ফয়েল পেপারে। বৃহস্পতিবার পরীক্ষা সংক্রান্ত্র প্রেস ব্রিফিংয়ে দীপু মনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন এবার প্রশ্নপত্র ফাঁস হবে না।
প্রশ্নপত্র ফাঁস বিষয়ে এর আগে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন ‘আশা করা যায় এবারও প্রশ্নপত্র ফাঁস হবে না। তবে যে পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করা হচ্ছে, এই পদ্ধতিটি অস্থায়ী।’
প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে এবারও গত ২৭ জানুয়ারি থেকে পরীক্ষা চলাকালীন সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
খবর২৪ঘণ্টা, এমকে