রাজধানীর শাহজাহানপুরে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ মার্চ) দুপুরে নিহতের স্ত্রী শাহজাহানপুরের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ফারজানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে শাহজাহানপুর থানায় হত্যা মামলাটি করেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে শাহজাহানপুর থানার ওসি মনির হোসেন মোল্লা বলেন, কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানার চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। তা বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে।
মামলার এজাহারে ডলি বলেন, আমার স্বামী মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য ছিলেন। আমার বাবার মতিঝিল কাঁচাবাজার এলাকায় একটি রেস্টুরেন্ট আছে। আমার স্বামী রেস্টুরেন্ট দেখাশোনা করতেন। আমার স্বামী বৃহত্তর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের ১০ বছর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন দলীয়ভাবে কোন্দল ছিল। গত ৪-৫ দিন আগে আমার স্বামীকে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীরা মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেয়।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিনের মতো গতকাল (বৃহস্পতিবার) মাইক্রোবাস নিয়ে গাড়িচালক মনির হোসেন মুন্নাসহ তিনি হোটেলের উদ্দেশে যাওয়ার জন্য রওনা হয়। মতিঝিল এজিবি কলোনির গ্র্যান্ড সুলতান নামে রেস্টুরেন্ট কাজ শেষে বাসায় আসার পথে রাত আনুমানিক সোয়া দশটার দিকে শাজাহানপুর মানামা ভবনস্থ বাটার দোকানের সামনে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীরা পূর্বশত্রুতার জের ধরে আমার স্বামীকে এলোপাতাড়ি গুলি করে। গুলিতে গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায়। এ সময় গুলির
কারণে আমার স্বামীর গলার ডান পাশে, বুকের বাম পাশে, বুকের বাম পাশের বগলের কাছাকাছি, পেটের মধ্যে নাভির নিচে, বাম কাঁধের ওপরে, পিঠের বাম পাশের মাঝামাঝি স্থানে, পিঠের বাম পাশের কোমর বরাবর, পিঠের ডান পাশের কোমরের ওপর মারাত্মক জখম হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন। দুষ্কৃতিকারীরা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করার সময় প্রীতি নামে এক পথচারীও নিহত হন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সোয়া দশটার দিকে শাহজাহানপুর এলাকায় টিপুর মাইক্রোবাস লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে হেলমেট পরা দুর্বৃত্তরা। এতে টিপু ও তার গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় রিকশায় বসে থাকা সামিয়া আফরিন ওরফে প্রীতি নামে এক কলেজছাত্রীও গুলিবিদ্ধ হন।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক টিপু ও প্রীতিকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত প্রীতি বদরুন্নেসা কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
নিহত টিপু ছিলেন যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক খান মিল্কি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। ২০১৩ সালের ২৯ জুলাই গুলশানের শপার্স ওয়ার্ল্ড নামের একটি শপিংমলের সামনে যুবলীগ নেতা মিল্কীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে অনেক দিন কারাগারে ছিলেন টিপু। পরে তিনি জামিনে মুক্ত হন।
পুলিশ জানায়, মিল্কি হত্যা মামলার এজাহারে টিপুর নাম থাকলেও ওই সময় তদন্তে তার সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় আদালত তাকে ওই মামলা থেকে জামিন দিয়েছিলেন। তাই টিপু হত্যার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে ঘটনাটি পরিকল্পিত বলেই মনে করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
বিএ/