খবর২৪ঘন্টা ডেস্কঃ
২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি মানুষ পুড়িয়ে মেরেছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তারা মানুষ মারে, নির্যাতন করে, আর আওয়ামী লীগ উন্নয়ন করে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে কোনো নির্যাতন করে না।
বিএনপি-জামায়াত সরকারে থাকার সময় ময়মনসিংহে পাকিস্তানি বাহিনীর মতো অত্যাচার করেছিল বলে তিনি অভিযোগ করেন। শুক্রবার বিকালে ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন। তার আগে সরকার প্রধান মঞ্চের পাশে ১৯৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
জাতির জনককে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, মানুষ তার আপনজনকে হত্যার বিচার চাইতে পারে, আমাদের সেই বিচার চাওয়ার সুযোগও দেয়া হয়নি। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করতে চেয়েছিল জিয়াউর রহমান।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অবর্ণনীয় নির্যাতন করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করে।
২০০১ সালে আওয়ামী লীগকে ষড়যন্ত্র করে নির্বাচনে হারানো হয় বলেও অভিযোগ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তারপর ২০০৮ সাল পর্যন্ত এ দেশকে পিছিয়ে দেয়া হয়েছিল। ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকার সভাপতিত্বে ও ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলমের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ধর্মমন্ত্রী আলহাজ অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, সাবেক মন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি, সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মণি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ, সাবেক এমপি আবদুস সাত্তার, অসীম কুমার উকিল, বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, মারুফা আক্তার পপি, অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন এমপি, শরীফ আহমেদ এমপি, নাজিম উদ্দিন আহমেদ এমপি, আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন এমপি, ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল এমপি, জুয়েল আরেং এমপি, ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান ও ময়মননিসংহ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ইকরামুল হক টিটু প্রমুখ।
এসময় নবগঠিত সিটি করপোরেশনের পক্ষে প্রশাসক ইকরামুল হক টিটু প্রধানমন্ত্রীকে সিটি কপোরেশনের চাবি হস্তান্তর করেন। বিশেষ অতিথি সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা জনগণের স্বার্থে ঐক্যফন্টের সঙ্গে সংলাপে গিয়েছি। আবার জনগণের স্বার্থেই তাদের অন্যায় দাবির কাছে নতি স্বীকার করিনি। আমরা কখনো কোনো চাপের কাছে মাথা নত করব না। তিনি বলেন, দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে সবাইকে কাজ করতে হবে। বিরোধিতা করলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী ব্রহ্মপুত্র নদের অপর পারে ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় অবস্থিত ৮টি মৌজায় ৪,৩৬৬.৮৮ একর জমির ওপর আধুনিক, পরিকল্পিত বিভাগীয় শহর ও সদর দপ্তর, ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর তিনটি নান্দনিক সেতু, দাপ্তরিক, আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খেলাধুলা, বিনোদন ইত্যাদি ব্লক, সুপরিসর একটি প্রাকৃতিক লেক, আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার, বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার, মিউজিয়াম, হোটেল-মোটেলসহ নান্দনিক উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী ৪০ মিনিটের বক্তব্যের মধ্যে প্রায় ৩০ মিনিট ময়মনসিংহ বিভাগের উন্নয়ন প্রকল্পের বর্ণনা দেন। গতকাল জুমার নামাজের পর থেকেই ময়মনসিংহ বিভাগের জেলা ও উপজেলা থেকে বৃহৎ মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জনসভায় আসতে শুরু করে। ৩টার মধ্যে বিশাল সার্কিট হাউজ ময়দান কানায় কানায় ভরে যায়। সবচেয়ে বড় মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন গফরগাঁওয়ের এমপি বাবেল গোলন্দাজ।
ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলন ত্রিশালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্থাপন, জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ, ময়মনসিংহ বিভাগে একটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা, দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ঘাটে যমুনা নদীর তলদেশে ট্যানেল নির্মাণসহ যেসব দাবি জানিয়েছিল সে সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী কিছু বলেননি।
খবর২৪ঘন্টা / সিহাব
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।