খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: ঢাকার ধামরাইয়ে অভাব অনটনের কারণে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন দুই সন্তানের জননী লাইজু আক্তার। মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের কাওয়ালিপাড়া গ্রামে।
এলাকাবাসী জানান, কালাম ও তার স্ত্রী স্থানীয় বাজারে চা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। পারিবারিক কলহের জের ধরে কালামের পুত্রবধূ গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যা চেষ্টা করে। আমার সময়মতো এসে অঘটনের হাত থেকে রক্ষা করি।
দুই সন্তানের জননী লাইজু আক্তার বলেন, আমার স্বামী সোহেল গার্মেন্টে চাকরি করতেন। বর্তমানে সে বেকার। যার কারণে আমার শশুর আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দিতে চায়। এনিয়ে আমাদের মাঝে ঝগড়া সৃষ্টি হয়। আমার দুটি সন্তান রয়েছে। ছোট ছেলের বয়স ১০ মাস, বড় ছেলে ৬ বছর। এদের নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি। এখন যদি বাড়ি থেকে বের করে দেয় তাহলে আমি দুটি সন্তান নিয়ে কোথায় যাব। এজন্য আমি আত্মহত্যার চেষ্টা করি।
লাইজু আক্তারের স্বামী সোহেল বলেন, আমি গার্মেন্টে চাকরি করতাম। বেশ কিছুদিন হয় চাকরি চলে গেছে। বর্তমানে মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে কোথাও গিয়ে কাজ করতে পারছি না। এখন বাসা থেকে বের করে দিলে কোথায় যাব। আব্বার সাথে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে লাইজু আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
সোহেলের পিতা কালাম বলেন, আমি আর আমার স্ত্রী বাজারে চা বিক্রি করে কোনোমতে দু’বেলা দুমুঠো খেয়ে বেঁচে আছি। একেতো অভাবের সংসার তার উপরে আবার করোনাভাইরাস। যার জন্য বাজারে যাইতে পারি না। করোনার কারণে লকডাউনে আছে গোটা পৃথিবী। জীবিকা নির্বাহের পথও বন্ধ, তাই অভাব সংসারে দুমড়ে মুচড়ে পড়ছে। এবতাবস্থায় ওদের খরচ আমি কি করে বহন করব। সোহেল যদি কাজ করে সংসার চালাতে পারে চালাবে, নয়তোবা আমার বাড়ি থেকে চলে যাবে।
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লা বলেন, করোনাভাইরাসের আতঙ্কে আজ গোটা বিশ্ব স্তব্ধ। এবস্থায় হতদরিদ্রদের মাঝে আমরা ত্রাণ বিতরণ করছি। যদি কেউ ত্রাণ না পেয়ে থাকে তারা আমাদের জানালে বাড়ি গিয়ে ত্রাণ দিয়ে আসি। কিন্তু এ সময় কেউ যদি পারিবারিক কলহের কারণে আত্মহত্যা চেষ্টা করে তাহলে এ দায়ভার আমাদের নয়।
কাওয়ালিপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ রাসেল মোল্লা বলেন, এ ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং যথাসময়ে আইনত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খবর২৪ঘন্টা/নই