বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারার দ্বীপনগর কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ সরকারের বিরুদ্ধে অবৈধ সাময়িক বরখাস্তের অজুহাতে কলেজ কর্তৃপক্ষ কলেজে যোগদান করতে দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আদালতে অবৈধ বেতনবিহীন সাময়িক বরখাস্ত বাতিল করে তার যোগদানপত্র বহাল করার নির্দেশ দিলেও কর্তৃপক্ষ অজানা কারণে তা গ্রহণ করতে অপারগতা প্রকাশ করায় ওই অধ্যক্ষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
এদিকে শিক্ষা বোর্ডের আপিল এন্ড আরবি ট্রেশন বোর্ড আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অসত্য ও বানোয়াট অবিহিত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হলেও তাকে গতকাল বুধবার কলেজে যোগদান করতে দেয়া হয়নি বলে ভুক্তভোগী পরিবার দাবি করেছেন।
জানা গেছে, বাগমারার বাসুপাড়া ইউনিয়নের দ্বীপনগর কলেজ প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ সরকার স্থানীয়দের সহযোগীতায় ১৯৯৫ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত করেন। কলেজ প্রতিষ্ঠিত হবার পর কলেজটি যথাযথ ভাবে চলতে থাকে। ২০১১ সালে হঠাৎ তিনি প্যারালাইষ্ট হয়ে অক্ষম হয়ে পড়েন। পরবর্তিতে চিকিৎসা নিয়ে সক্ষম হয়ে পুনরায় কর্মস্থলে যোগ দেন। ২০১৫ সালে স্থানীয় এমপি’র ডিও লেটারে গভনিং বর্ডির সভাপতির পদ গ্রহণ করেন আ’লীগ নেতা বিরেন্দ্রনাথ। দলীয় ক্ষমতাবলী ও দলের দাপটে দলীয় পরামর্শে অনৈতিক অভিযোগ এনে বিরেন্দ্রনাথ অধ্যক্ষকে বেতনবিহীন সাময়িক বরক্ষাস্ত করেন। নিয়ম অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্তকারী অর্ধেক বেতন পাওয়ার কথা থাকলেও বেতন বিলে তার নাম বাদ রেখে বেতন করা হয়।
অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ এমন অমানবিকতায় আইনের আশ্রয় নেন। দীর্ঘ মামলার শেষে আদালত তার পক্ষে রায় দেন বলে তিনি দাবি করেন। রায়ের কপি কলেজ কর্তৃপক্ষ তা গ্রহণ না নিয়ে নানা তালবাহানা করতে থাকে। একসময় কলেজের কিছু অসাদুদের পরামর্শে কর্তৃপক্ষ তাকে আইনি জাটলতার ফাঁকড়া বাধায়। এই ধারাবাহিকতায় কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষা বোর্ডে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অভিযোগ দায়ের করেন। এতে শিক্ষা বোর্ড বিভিন্ন তদন্তে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অসত্য ও বানোয়াট বলে গত ২৩ জানুয়ারী ঘোষণাপত্র প্রদান করেন। শিক্ষা বোর্ডর কলেজ পরিদর্শক প্রফেসার আকবর আলীর স্বাক্ষরিত ঘোষণাপত্র কলেজের গভনিং বর্ডির বর্তমান সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আজাহার আলীকে প্রেরণ করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়।
এছাড়া স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের ও অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফকে বিষযটি অবহিত করা হয়েছে। অধ্যক্ষ এ নিয়ে কয়েক দফা সভাপতি ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাছিমা বেগমের পিতার সাথে কথা বলে তা যোদানের ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করলে তিনি তা নেননি বলে তিনি অভিযোগ করেন। দীর্ঘ সময়ে অবেতনিক জীবনযাপনে অতিষ্ঠিত হয়ে গতকাল বুধবার সকাল ৯টার দিকে তার প্রতিষ্ঠিত কলেজে যোগদান দিতে গেলে তা গ্রহণ করা হয়নি বলে ভুক্তভোগী পরিবারে বড় ছেলে জয়ই মামুন জানান।
এব্যাপারে কলেজের সভাপতি আজাহার আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন আছে বলে তার যোগদানপত্র গ্রহণ করা হয়নি বলে জানান। উচ্চ আদালত তার পক্ষে রায় দিলেই তা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ