নিজস্ব প্রতিবেদক : ইন্টারনেটের অপব্যবহারের মাধ্যমে শিশু যৌন নির্যাতন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। শিশুরা বিশেষত সাইবার বুলিং শিকার হয় সবচেয়ে বেশি। সাইবার বুলিংয়ের প্রভাবে শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে থাকে। অনেকসময় বিষণœতায় এবং হতাশায় আক্রান্ত হয়। এমনকি পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারেনা, যার ফলে পড়াশুনায় পিছিয়ে পড়ে। সবসময় আতঙ্কগ্রস্ত থাকার ফলে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হয়। অনেকেই সাইবার বুলিং এর চাপ নিতে না পেরে, আত্মহত্যার পথেও পা বাড়াতে হবে। প্রিয় শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংবাদ মাধ্যম প্রতিনিধিরা সম্ভাব্য সবকিছু করবে।
অনলাইনে শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রেভাইডার (আইএসপি) ও সাইবার ক্যাফে মালিকগণের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হতে হবে এবং দায়িত্ব পালন করতে হবে। গণসচেতনতা তৈরিতে আইএসপি ও সাইবার ক্যাফে মালিকগণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তাঁরা অভিভাবকদের ফিল্টারিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ/অবহিতকরণ, প্রচলিত আইনে দন্ডনীয় সাইবার অবরাধ সম্পর্কে সংযোগ গ্রহিতাদের অবহিতকরণ করতে পারেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল বেলা সোয়া ১১টার দিকে এসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট এসিডি কর্তৃক বাস্তবায়িত ‘ইন্টারনেটের অপব্যবহার এবং ট্যুরিজমের মাধ্যমে শিশুর যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ’ প্রকল্পের উদ্যোগে এসিডি কনফারেন্স রুম রাজশাহীতে সংবাদ মাধ্যম প্রতিনিধিদের সাথে ‘ ইন্টারনেটের অপব্যবহারের মাধ্যমে শিশু যৌন নির্যাতন ও শোষণ প্রতিরোধে অর্জন ও করণীয় বিষয়ক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন, সোনালী সংবাদের সিনিয়র রিপোর্টার তবিবুর রহমান মাসুম। সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রোগ্রাম অফিসার রুহুল আমিন। মতবিনিময় সভায় ইন্টারনেটের অপব্যবহার এবং টুরিজমের মাধ্যমে শিশুদের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন এসিডি’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার আলী হোসেন। পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনায় প্রকল্পের উদ্দেশ্য, উল্লেখিত বিষয়ে এসিডির কার্যক্রম, বাংলাদেশে শিশুর অবস্থা, শিশু ও নারী নির্যাতন পরিস্থিতি, অনলাইনে শিশুদের উপর নির্যাতন ও শোষণ প্রক্রিয়া, ইন্টারনেটে শিশু যৌন
নির্যাতন প্রতিরোধ ও সাইবার নিরাপত্তা, ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীদের
অধিকার ও কর্তব্য অনলাইনে শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে করণীয়, বিদ্যমান আইনের অপূর্ণতা ইত্যাদি বিষয়সমূহ বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা হয়। অনলাইনে শিশু যৌন নির্যাতন ও শোষণ প্রতিরোধে সরকার, অভিভাবক এবং ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি কিছু সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়। এরপর মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাভিশন প্রতিনিধি আদিত্য বলেন, শিশুদের মোবাইল ব্যবহার যদি করতেই হয় তাহলে সাধারন মোবাইল ব্যবহার করা উচিত এতে ইন্টারনেটে প্রবেশের কোন সুযোগ থাকেনা। সন্তানের বয়স বিবেচনা করে পরবর্তীতে ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে স্মার্ট ফোন দেয়া যেতে পারে এতে করে ইন্টারনেট হতে প্রয়োজনীয় সুবিধা নিতে পারবে।
জিয়াউল হক সেলিম, ব্যুরো চীফ, এসএটিভি বলেন, আজকাল ছোট (৩-৫ বছর) শিশুও মোবইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে, তাই বাবা-মাকে বেশি সজাগ হতে হবে সন্তানের সামনে মোবাইল যত কম দেখানো যায় ততোই ভালো। ছোট বেলায় শিশেিদর কান্না থামাতে মোবাইল হাতে দিলে পরবর্তীতে এটাই আসক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ড.আইনুল হক বলেন, স্মার্ট ফোন হাতে পেলে সবাই ব্যবহার করবে এটাই স্বাভাবিক তাই অভিভাবককে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সন্তানকে প্রযুক্তির ব্যাপারে কোন ডিভাইস ব্যবহার করবে। সবচেয়ে ভাল হয় সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সুষ্ঠু বিনোদনের পরিবেশ সৃষ্টি করা খুবই জরুরী। যারা ইন্টারনেট পরিচালনা করে সেইসব প্রতিষ্ঠানের প্রতি সরকার যদি নিদির্ষ্ট গাইড লাইন করে দেয় এবং নিয়মিত তদারকি করে সেক্ষেত্রে অশালীন বার্তা, ছবি, ভিডিও বন্ধ হবে বাচ্চারাও সঠিকভাবে ব্যবহার করবে।
আর/এস
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।