1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
৩০ বছর এক বিছানায় বড় ভাই, ৫ বছর শিকলবন্দি ছোট ভাই - খবর ২৪ ঘণ্টা
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫২ অপরাহ্ন

৩০ বছর এক বিছানায় বড় ভাই, ৫ বছর শিকলবন্দি ছোট ভাই

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৮ ফেব্ুয়ারী, ২০২০

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে এক বিছানায় দিন কাটছে বড় ভাই খোরশেদ আলমের। তার ছোট ভাই মোরশেদ আলম মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় পাঁচ বছর ধরে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে।

এ অবস্থায় দুই প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে লক্ষ্মীপুরের এক হতদরিদ্র পরিবার। অর্থের অভাবে সন্তানদের চিকিৎসা করাতে পারছেন না বাবা-মা। সন্তানদের চিকিৎসা সহায়তা চেয়েছেন তারা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের চরলামচি গ্রামের বাসিন্দা রিকশাচালক আজাদ হোসেন ও খুরশিদা বেগম দম্পতির ঘরে শারীরিক প্রতিবন্ধী খোরশেদ আলমের জন্ম হয়। দ্বিতীয় সন্তান হিসেবে জন্ম হয় মোরশেদের।

জন্ম থেকেই বড় ভাই খোরশেদ আলম শারীরিক প্রতিবন্ধী। সাত বছর বয়স থেকে ছোট ভাই মোরশেদ আলম (২১) মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে যান। গত পাঁচ বছর ধরে শিকলবন্দি মোরশেদ। খোরশেদের জন্মের পর থেকে পরিবারটি স্বাভাবিক জীবনযাপন থেকে বঞ্চিত। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে অন্যরা যখন আনন্দ করে তখন তারা ঘরের দরজা বন্ধ করে কান্নাকাটি করে।

এদিকে আট বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় পায়ে আঘাত পেয়ে আজাদ রিকশা চালানোর ক্ষমতা হারান। এখন তিনি সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের ইছাগো তেমুহনী বাজারের খুচরা পান বিক্রেতা। প্রতিদিনের আয়ে জোড়াতালি দিয়ে কোনোরকমে সংসার চলে তার। কিন্তু অসুস্থ ছেলেদের চিকিৎসার খরচ চালানোর সাধ্য নেই। এর মধ্যে তার দুই মেয়ে স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করে।

শনিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, মানসিক প্রতিবন্ধী মোরশেদের পায়ে ৪-৫ ফুট শিকল দিয়ে ঘরের চৌকাঠের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিলে ছেলেকে একটি প্লাস্টিকের পাত্র এনে দেন মা খুরশিদা বেগম। বড় ছেলে খোরশেদ বিছানায় শুয়ে চিৎকার করছেন। জন্মের পর থেকে একদিনের জন্যও উঠে বসতে পারেননি তিনি। কথাবার্তা স্বাভাবিক থাকলেও বিছানায় দিন কাটছে তার। খরচ না থাকায় চিকিৎসকের কাছেও তাকে নেয়া হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছেলে-মেয়েদের নিয়ে সদর উপজেলার কামানখোলা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন রিকশাচালক আজাদ। তার কোনো সম্পত্তি ছিল না। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের চরলামচি গ্রামে চার শতাংশ জমি কিনে নেন তিনি। সেখানে একটি টিনশেট ঘর তুলে বসবাস করছেন তিনি।

মা খুরশিদা বেগম বলেন, বড় ছেলেটি একবারের জন্যও শোয়া থেকে উঠে বসতে পারেনি। কোলে করে তুলে এনে অনেক কষ্ট করে তাকে গোসল করাতে হয়। ছোট ছেলেটি জন্মের সাত বছর পর্যন্ত ভালো ছিল। হঠাৎ করে ১৪ বছর আগে ছেলেটি মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে যায়। বিভিন্ন স্থানে চলে গিয়ে ফিরে আসতে পারে না। এজন্য গত পাঁচ বছর ধরে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছি। মোরশেদ যখন মা ডাকে তখন আনন্দে মনটা ভরে যায়। কিন্তু আবার নাম ধরে ডাকলে কান্না চলে আসে।

জানতে চাইলে বাবা আজাদ হোসেন বলেন, অসুস্থ ছেলেদের নিয়ে আমাদের অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে আশপাশের মানুষ আনন্দ করে। কিন্তু ছেলে-মেয়েদের নিয়ে আমাদের ঘরে বসে কান্না করতে হয়। ভাইয়েরা আনন্দ করতে পারে না বলেই আমার মেয়ে দুটো ঈদে কোথাও যায় না। ছেলেদের চিকিৎসার জন্য সরকারসহ সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চাই আমরা।

এ ব্যাপারে চররুহিতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী বলেন, পরিবারটির খোঁজ নেয়া হবে। তাদেরকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর জন্য উদ্যোগ নেয়া হবে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST