সবার আগে.সর্বশেষ  
ঢাকাসোমবার , ১১ ডিসেম্বর ২০১৭
আজকের সর্বশেষ সবখবর

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আতংকিত নাটোরবাসী

অনলাইন ভার্সন
ডিসেম্বর ১১, ২০১৭ ৪:২৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নাটোর প্রতিনিধিঃ রাজনৈতিক অবক্ষয়, মাদকের আগ্রাসনসহ নানা কারণে নাটোরে হত্যার ঘটনা ক্রমাগত বেড়েই চলছে। পুলিশের তথ্যমতে চলতি বছরে এই জেলায় ৩৩টি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। এতে চরম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় রয়েছে নাটোরবাসি। তবে পুলিশের দাবি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। হত্যা মামলার তদন্তে আশানুরুপ অগ্রগতির কথাও জানিয়েছেন তারা।
জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উত্তপ্ত জনপদ হিসাবে আলাদা পরিচিতি পেয়েছে নাটোর। এখানে প্রায় প্রতি মাসেই নানা কারণে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আর বেশীরভাগ হত্যাকা-গুলো সংগঠিত হয় প্রকাশ্যেই। রাজনৈতিক হানাহানি, ছিনতাইকারী চক্র, মাদকের আগ্রাসন আর অভ্যন্তরীন বিরোধে প্রাণ হারাচ্ছে নারী, শিশুসহ খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। পুলিশের হিসেব অনুযায়ী, চলতি বছরেই এই জেলায় হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে ৩৩টি। যার মধ্যে নাটোর থানায় চারটি, সিংড়া থানায় আটটি, নলডাঙ্গা থানায় দুইটি, বড়াইগ্রামে চারটি, বাগাতিপাড়ায় তিনটি, লালপুরে তিনটি আর গুরুদাসপুর থানায় নয়টি হত্যা কমলা দায়ের হয়।
২০১৫ সালে ৩২ টি এবং ২০১৬ সালে ১৮টি হত্যাকান্ড সংগঠিত হয় হয় এই জেলায়। সার্বিক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে চলতি বছর হত্যাকান্ডের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩টি।
হত্যাকা- বিষয়ে সদরের তেবাড়িয়া এলাকার বাবুল মেম্বার জানান, একের পর এক হত্যার ঘটনা ঘটলেও বেশীর ভাগ হত্যা মামলার তদন্তে নেই তেমন কোন অগ্রগতি। বিচারহীনতায় ভুক্তভোগি পরিবারে বাড়ছে হতাশা। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তিকে হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন অনেকেই। হত্যাকাণ্ডের পর বিচারের আশ্বাস মিললেও তা অন্ধকারেই রয়ে গেছে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে।
এক্ষেত্রে খুনিরা অনুপ্রাণিত হয়ে হত্যার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটাচ্ছে।
স্থানীয় ইতিহাসবিদ খালিদ বিন জালাল বলেন, রাজনৈকিত অবক্ষয়, নেশাদ্রব্যের ব্যবহার, শাসন ব্যবস্থার ত্র“টির কারণে হত্যর ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে। এ থেকে উত্তরণের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যেমন প্রয়োজন। পাশাপাশি সমাজের সকল স্থরের মানুষের সচেতন হয়ে চলার মানষিকতা গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই হত্যাকাণ্ড রোধ করা সম্ভব হবে।
নাটোর সচেতন নাগরিক কমিটির (টিআইবি) সভাপতি রেজাউল করিম রেজা জানান, শুধু মাত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর দোষ চাপালেই হবে না। সবাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে হবে। দেখা যাচ্ছে প্রকাশ্যে খুন হলো। কিন্তু স্বাক্ষি দেবার কেউ নাই। এভাবেই অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। হত্যাকা- রোধে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সবার অংশগ্রহণ একান্ত প্রয়োজন।
নাটোর জজকোর্টে পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট্র বিষয় নিয়ে নাটোরে হত্যার ঘটনা বেড়ে গেছে। হত্যা বন্ধে সামাজিক সচেতনতা প্রয়োজন।
নাটোরের পুলিশ সুপার বিপ্ল¬ব বিজয় তালুকদার জানান, ‘২০১৭ সালে এ পর্যন্ত সাতটি থানায় ৩৩টি খুনের মামলা রেকর্ড হয়েছে। তার মধ্যে ১০টি খুনের মামলা কোর্ট থেকে প্রাপ্ত। এই ৩৩টি মামলার মধ্যে ১৩টি মামলা ডিটেক্ট হয়েছে এবং আদালতে পুলিশ রিপোর্ট প্রদান করেছে। বাকি ২০ টি মামলা তদন্তাধীন আছে। সেক্ষেত্রে খুনের মামলাগুলোর অগ্রগতি ভাল।’ হত্যাকা- রোধে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।