নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের সমাজসেবা উপপরিচালক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের চাকুরি হতে অপসারন দাবি করেছেন নাটোরের মুক্তিযোদ্ধারা। ২০ শে আগস্ট মুক্তিযোদ্ধাদের একটি জরুরী সভায় সমাজসেবা উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে নাটোর জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানহানী এবং ভাতা
বন্ধের অভিযোগ সহ অবহেলা ও অনীহার অভিযোগ করা হয়।
মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার, প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা ইমান মন্ডলের স্ত্রী হালিমা ও মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিলসহ ২৪ জন ভুক্তভোগি মুক্তিযোদ্ধারা অভিযোগে বলেন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ১৯৯৬ সাল থেকে তারা ৩শ টাকা ভাতা উত্তেলন করতেন যা পরবর্তীতে হয়েছিল ৫হাজার টাকা। কিন্তু বর্তমানে ৮ হাজার টাকা ভাতা উল্লেখ করে যে নতুন গেজেট প্রকাশ করা হয় সেখানে তাদের বয়সের তারতম্য দেখিয়ে গেজেটের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। তাদের ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অথচ মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের সকলের বয়স ছিল ১২ বছর ৬ মাস বা সাড়ে ১২ বছরের বেশি ছিল।
সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ’৭১ নাটোর সদর উপজেলা শাখার সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা বাস্তবায়ন কমিটি আহবায়ক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা শেখ
মোঃ আবুল হোসেন বলেন, জেলা সমাজসেবা উপ-পরিচালক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান নাটোরে যেদিন থেকে বদলী হয়ে এসছেন তারপর থেকে বিভিন্ন ভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানী বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বন্ধ ও তাদের বিভিন্ন ভাবে অসম্মান করেছেন। বন্ধ ভাতা চালুর ব্যাপারে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক পরিপত্র থাকা সত্বেও তাদের ভাতা বিভিন্ন অযুহাতে বন্ধ করে এবং জেলা প্রশাসক মহোদয় চেকপত্র বিলি করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তালিকা প্রেরণের পরও মুক্তিযোদ্ধাদের ঈদুল আযহার আগের দিন ভাতা বন্ধ করে যে নেক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তারজন্য মুক্তিযোদ্ধারা জেলা সমাজসেবা উপপরিচালকের আপসারন ও শাস্তি দাবি করেছেন।
এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর কন্যা ও নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি বলেন বয়সের তারতম্য দেখিয়ে যাচাই বাছাই না করেই মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা সমাজসেবা কার্যালয় কর্তৃক বন্ধ করে দেয়াটা ঠিক হয়নি। বিশেষ করে যাদের বয়স মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে সাড়ে ১২ বছর ছিল তাদের ভাতা বন্ধ করা সমীচীন হয় নাই। অনতিবিলম্বে সম্মানীত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের বন্ধ হয়ে যাওয়া ভাতা পুনরায় চালু করার দাবি করেন তিনি।
নাটোর সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ১৯৭১ সালের ৩০ শে নভেম্বর-এ যাদেরসাড়ে ১২ বছর বয়স ছিল শুধুমাত্র তারাই মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাওয়ার যোগ্য। যেসব মুক্তিযোদ্ধার বয়সের তারতম্য ধরা পরেছে তাদের অথবা প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের ভাতা প্রদান স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে মুক্তিযোদ্ধার সঠিক বয়স ও অন্যান্য কাগজপত্র দেখিয়ে সমাজসেবা কার্যালয়ের নির্ধারিত ফরমে আবেদন অথবা অনলাইনে নির্ধারিত ফরম পূরন করে পুনরায় ভাতা পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান। তবে যাদের বয়স ১৯৭১ সালের ৩০ শে নভেম্বর-এ সাড়ে ১২ বছর হয়নি তারা পূর্বে ভাতা পেলেও বর্তমান আইন অনুযায়ী ভাতা পাওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন সাবেক উপজেলা কমান্ডার ও সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ’৭১ নাটোর সদর উপজেলা ফুলবাগান শাখার সভাপতি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা শেখ মোঃ আবুল হোসেন, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক জেলা কমান্ডার মোঃ নইমুদ্দিন আহমেদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক উপদেষ্টা জেলা কমান্ডার অজিত দাস, সাবেক সহ কমান্ডার শ্রী অথিন চন্দ্র দাস, যুদ্ধকালীন প্লাটুন কমান্ডার আলী জুরান, সেক্টর কমান্ডার সহ -সভাপতি মোঃ শাহজাহান আলী মৃধা, মোঃ হাসানুজ্জামান ভুলু, মোঃ মুনছুর আলী, উপজেলা কমান্ড মোঃ আব্দুল কুদ্দুস, মোঃ জাহিদ খান চৌধুরী, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ’৭১ সাধারন সম্পাদক মোঃ নূরশেদ আলী, সহ-সম্পাদক মোঃ এ.এন এনায়েত রাব্বি, নাটোর সদর সাবেক ইউনিয়ন কমান্ডার মোঃ তছলিম উদ্দিন, বড় হরিশপুর সাবেক ইউনিয়ন কমান্ডার মোঃ হোসেন আলী, দিঘাপতিয়া সাবেক ইউনিয়ন কমান্ডার মোঃ মজিবর রহমান সহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্য বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
খবর২৪ঘণ্টা,কম/জন
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।