নিজস্ব প্রতিবেদক :
মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সুযোগ্য সন্তান রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অন্যতম সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেছেন, তোমাদের বাবা-মা উচ্চ শিক্ষাগ্রহণের যে উদ্দেশে পাঠিয়েছে, সেটা ভালোভাবে করবে, সৎপথে থাকবে। তোমাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে উপাচার্য, উপ-উপাচার্যরা আছেন, সেটা তারা দেখবেন। আমি নগরপিতা হিসেবে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতসহ সার্বিক বিষয় দেখভাল করবো। শিক্ষার্থীদের যেকোন প্রয়োজনে পাশে আছি।
আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের (রাবি) কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে রাবি ছাত্রলীগের উদ্যোগে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন স্মৃতিচারণ করে বলেন, ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঈদের নামাজের পরে আমাদের ঢাকার বাড়িতে বাবা শহীদ কামারুজ্জামানের কাছে এসেছিলেন। আমরা দুই ভাই তখন বাড়ির সামনে সাইকেল নিয়ে খেলা করছিলাম। বঙ্গবন্ধু গাড়ি থেকে নেমে বাবার নাম ধরে ডাকলেন, বাবা দ্রুত উপর থেকে সিড়ি বেঁয়ে নিচে নেমে আসলেন। তাঁরা ঈদের কোলাকুলি করলেন। এরপর বঙ্গবন্ধু আমাদের দুই ভাইকে দেখে আমাদের বুকে জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করলেন। আজো বঙ্গবন্ধুর সেই স্মৃতি বুকে ধারণ করে আছি। আমি মনে করি আর যতদিন বেঁচে আছি, আরো একটু আপগ্রেড হয়ে বঙ্গবন্ধুর সাচ্চা সৈনিক হয়ে যদি মারা যেতে পারি, তাহলে আমার জীবন সার্থক হবে।
মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন করছেন। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামীতেও পাবে। উন্নয়নের এই ধারা অব্যহত রাখতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা এই দেশটি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের তরুণ প্রজন্মের হাতে তুলে দিয়ে যেতে চাই।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের যে জায়গা নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁর সঙ্গে তাল মিলিয়ে উন্নত রাজশাহীকে আরো উন্নত করতে চাই।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বঙ্গবন্ধুই বলেছিলেন, ‘ছাত্রলীগের ইতিহাস, বাঙালির ইতিহাস।’ ছাত্রলীগ ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার আগেই ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
মেয়র আরো বলেন, রাজশাহী আওয়ামী লীগের জন্য নেগেটিভ জায়গা ছিল। এখন সেটি আর নেই। এই অবস্থান আমাদের ধরে রাখতে হবে। আর বিএনপি-জামায়াত যে হারিয়ে গেছে সেটি মনে করার কিছু নাই। তাই সবাইকে সচেতন থাকতে হবে
প্রধান বক্তার বক্তব্যে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.এম আব্দুস সোবহান বলেন,
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরসলভাবে দেশের উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। নারী-পুরুষ উভয় মিলে কাজ করলে যে দ্রুতই উন্নয়ন হয়, তা প্রমান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর আমরা রাজশাহীর যত উন্নয়ন দেখছি, তা সব করেছেন মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন।
তিনি নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য আরো বলেন, তরুণদের সঠিক পথে চলতে হবে। তরুণরা বিপথগামী হওয়া যাবে না। গুনীজন এবং মহান নেতাদের অনুসরণ করে চলতে হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদ রাজশাহী মহানগরীর সহ-সভাপতি ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্না বলেন, আমরা যারা তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করছি, তাদের দায়িত্ব মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানা এবং জানানো। যাতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কেউ বিকৃত করতে না পারে।
তিনি আরো বলেন, আজকের তরুণার আগামী দিনের নেতৃত্ব দিবে। তারাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রাবির উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. আনন্দ কুমার সাহা ও উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. চৌধুরী মো. জাকারিয়া। সঞ্চালনায় ছিলেন রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু।
অনুষ্ঠানে নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। এরপর তাদের হাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বই ও শিক্ষা উপকরণ তুলে দেন মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন।
খবর ২৪ ঘণ্টা/আর