রাবি প্রতিনিধি: উত্ত্যক্তের শিকার হয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্নভাবে অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য জোর করা হচ্ছে তাদেরকে। তাই নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত জানিয়ে এরই মধ্যে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন তারা।
শুক্রবার দুপুরে নগরীর মতিহার থানায় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ওই দুই শিক্ষার্থী সাধারণ ডায়েরিটি করেন। ডিউটি অফিসার মাহমুদা আক্তার ডায়েরিটি লিপিবদ্ধ করেন। মতিহার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাদৎ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের দাবি, শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পর থেকে আতঙ্কে আছেন তারা। অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছে। এছাড়া ওই শিক্ষকের পক্ষের অনেক শিক্ষার্থী এসে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। ওই শিক্ষকের অনেক ক্ষমতার কথা বলে ছাত্রত্ব বাতিলের ভয় দেখানো হচ্ছে। নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত ছাত্রীরা, শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হবার ভয়ে তারা হল থেকে বের হতে পারছেন না।
মতিহার থানার ১১০৮ ও ১১০৯ নম্বর সাধারণ ডায়েরিতে তারা উল্লেখ করেন, বিভিন্নভাবে অভিযোগপত্রটি প্রত্যাহার করার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। এ কারণে আমি আমার নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত বোধ করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইইআরের প্রথম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, ক্লাসে স্যারের পক্ষের কিছু শিক্ষার্থী আছে যারা নানা কথা ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে। ভয়ে ও সংকোচে অন্য শিক্ষার্থীরা মুখ খুলতে পারছে না। এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছোট খাটো আরও অন্য অনেক ব্যাপার আছে। তদন্ত কমিটি শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইলে আরও অনেক কিছু বেড়িয়ে আসবে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
ছাত্রীদের অভিযোগের অনুলিপি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান। তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রক্টর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার ব্যাপারে প্রশাসন সব সময় সজাগ। আমরা ওই দুই শিক্ষার্থীকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়ার চেষ্টা করবো।
এরআগে গত মঙ্গলবার দুপুরে আইইআরের সহকারী অধ্যাপক বিষ্ণুকুমার অধিকারীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিকভাবে উত্ত্যক্তের অভিযোগ করেন ৪র্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী। পরে ওই দিনই ২য় বর্ষের এক শিক্ষার্থী আইইআরের পরিচালকের সামনে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্ত্যক্তের মৌখিক অভিযোগ করেন। পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে ডাক যোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইইআর পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার আইইআরে এক জরুরি সভা ডেকে বিষ্ণুকুমার অধিকারীকে ২য় ও ৪র্থ বর্ষের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যহতি দিয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়।
খবর২৪ঘণ্টা, জেএন