নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী মহানগরীর লক্ষীপুরে অবস্থিত বেসরকারী সিডিএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মৃত মানুষকে ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) তে রেখে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে রোগীর স্বজন ও স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নিহতদের স্বজনরা লাশ নিয়ে দীর্ঘ সময় সেখানে অবস্থান করে।
মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে জানান, তিনি তার বাবা তোফাজ্জল হোসেনকে অসুস্থ অবস্থায় সিডিএম হাসপাতালের আইসিইউতে গত ১০ জুলাই রাত আনুমানিক ৮টার দিকে ভর্তি করেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তিন দিন পার হয়ে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিবারের কারো সাথে তার বাবাকে সাক্ষাত করতে দেন নি। বৃহস্পতিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃতের তাদের থেকে ৬৫ হাজার টাকাও বিল নেন। বিল নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার দুপুর হঠাৎ করে তারা জানায় যে, তার বাবার অবস্থা ভাল নয়। লাইফ সাপোর্ট দেওয়া লাগবে। কর্তৃপক্ষের এমন কথা শুনে তারা বলেন যে, লাইফ সাপোর্ট দিলে তার বাবা বাঁচবেন কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে তারা জানায় বাঁচবে কিনা তা জানিনা তবে বিল দেওয়া লাগবে।
কর্তৃপক্ষের এমন কথায় তারা জানান যে, ভাল না হলে লাইপ সাপোর্ট দেওয়ার দরকার নেই। বাড়ি নিয়ে চলে যাবো। কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কথা বলে দুপুর থেকে রাত ৮টা বাজিয়ে দেয়। এরপর বলে বাড়ি নিয়ে যেতে হলে, অক্সিজেন দেওয়া লাগবে বাইরে থেকে কিনে নিয়ে আসতে হবে। চিকিৎসকের কথামত তারা অক্সিজেন নিয়ে আসলে রোগীর কাছে কাউকে যেতে না দিয়ে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। এরপর অক্সিজেন লাগানো হলে দেখতে পান তার বাবা বেঁচে নেই। বিষয়টি সন্দেহজনক হলে তারা লাশ না নিয়ে রাজপাড়া থানায় কল দেয়। খবর পেয়ে থানার একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযোগ আমলে নিয়ে লাশ ময়নাতদন্ত করতে হবে বলে জানায়। কিন্ত রোগীর লোকজন ময়নাতদন্ত করবে না অভিযোগ না দিয়েই লাশ নিয়ে চলে যায়।
মৃতের ছেলে রফিকুল অভিযোগ করে আরো বলেন, তার বাবা দুপুরেই মারা গেছে। হয়তো শুধু টাকার জন্য লাইফ সাপোর্ট নাটক করছিলো। যাতে তারা আরো কিছু বিল পেতে পারে। তারা অন্যায় করেছে। এর বিচার দাবি করছি। ময়নাতদন্ত না করায় থানায় অভিযোগ করতে পারি নি। আল্লাহ যেন তাদের বিচার করে।
এদিকে, নাম না প্রকাশ করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, সিডিএম হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিষয়টি হস্তক্ষেপ করা দরকার। তাহলে অনেকে মানুষ প্রতারিত হওয়া থেকে বেঁচে যাবে। মৃত তোফাজ্জল হোসেন নগরীর বোয়ালিয়া থানার রামচন্দ্রপুর বাসার রোড এলাকার বাসিন্দা।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে থাকা এসআই হায়দার বলেন, থানায় অভিযোগ দিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হতো। কিন্ত তারা মৃতের ময়নাতদন্ত করবেনা এজন্য অভিযোগ নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে এ বিষয়ে সিডিএম হাসপাতালের চিকিৎসক ও ব্যবস্থাপকের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে