নিজস্ব প্রতিবেদক :
দীর্ঘ প্রতিক্ষা ও অনাবৃষ্টির পর ঘূণিঝড় তিতলির প্রভাবে অবশেষে রাজশাহী মহানগরসহ আশেপাশের উপজেলায় স্বস্তির বৃষ্টি হয়েছে। এতে আমন ধানসহ ফসলের ব্যাপক উপকার হয়েছে। বৃষ্টি নামায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। কারণ অনাবৃষ্টিতে রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলার রোপন করা আমন ধান পানির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছিলো। তবে নগর জীবনে কিছুটা সমস্যা হয়। দিনভর বৃষ্টির কারনে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অফিস-আদালতগামী মানুষ ব্যাপক সমস্যার মধ্যে পড়েন। গত বুধবার দিবাগত রাত ১টা ২মিনিট থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হয়। এ বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৬০ মিলিমিটার। বৃষ্টিতে রাজশাহীর আবহাওয়া উষ্ণ থেকে শীতলে পরিণত হয়। রাজশাহী মহানগর এলাকায় যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে তার থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় তুলনামূলক কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
গত একমাস ধরে রাজশাহী মহানগর ও আশেপাশের উপজেলায় বৃষ্টি হয়নি। বৃষ্টি না হওয়ার কারণে আমন ধানে বৃষ্টির অভাব দেখা দেয়। বৃষ্টির অভাবে আমন ধানের মাঠ শুকিয়ে ফেটে চৌচির হয়ে যায়। আর যেসব এলাকায় কৃত্রিমভাবে সেচের সুবিধা নেই সেসব এলাকার আমন শুকিয়ে লাল হয়ে যায়। মাঠের ধান অনাবৃষ্টিতে শুকিয়ে যাওয়ায় চিন্তার মধ্যে পড়েন। কারণ অনেক টাকা-পয়সা খরচ করে রোপন করা ধান অনাবৃষ্টিতে চোখের সামনে মরে গেলেও কিছু করতে পারেন নি। তবে যেসব এলাকায় কৃত্রিম সেচের ব্যবস্থা আছে সেসব এলাকায় সেচ দিয়ে ধান মরে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে পেরেছেন কৃষকরা। অনেক দিন বৃষ্টি না হওয়ায় রাজশাহীর তানোর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি প্রার্থনা করে নামায আদায় করেন মুসল্লিরা। নামায শেষে তারা ফসল বাঁচানোর জন্য বৃষ্টি প্রার্থনা করে আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। তবে গত বুধবার রাত থেকে ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টিতে আমন ধানের ব্যাপক উপকার হয়। এ সময়টাতে আমন ধানের শীষ ফুটন্ত অবস্থায় রয়েছে। শীষ ফুটন্ত অবস্থায় থাকায় বৃষ্টির প্রয়োজন ছিলো। বৃষ্টি হওয়াতে ধান মরার হাত থেকে বেঁচে যাবে ও ভাল ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সাইদুল ইসলাম নামের এক বলেন, বৃষ্টির জন্য আল্লাহর অনেক দোয়া করেছি। কারণ আমন ধানের উপর কৃষকের পরিবার অনেকটাই নির্ভরশীল। এ বৃষ্টিতে ধান মরে যাওয়ার হাত থেকে বেঁচে গেল। এদিকে, ভোর থেকে দিনভর থেমে বৃষ্টি হওয়ায় নগর জীবনে এর বিরুপ প্রভাব পড়ে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অফিস আদালতগামী মানুষ ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। কারণ বৃষ্টিতে মানুষের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় পথচারীরা পথিমধ্যে আঁটকা পড়ে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, গতরাতকে থেকে ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে এখনো খুব বেশি বৃষ্টিপাত হয়নি। তবে এই আবহাওয়া কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে।রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, গত বুধবার রাত ১টা ২ মিনিট থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। ঘুর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে এ বৃষ্টিপাত হয়। আগামী শনিবার পর্যন্ত এ অবস্থা চলতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস আরো জানায়।
খবর ২৪ ঘণ্টা/এমকে