নিজস্ব প্রতিবেদক :
পবিত্র মাহে রমজানের রোজাকে কেন্দ্র করে কত ধরণের আয়োজনই না থাকছে রাজশাহী মহানগরীর নামী-দামি রেস্তোঁরা ও ফাস্ট ফুডের দোকানগুলোতে। দামি রেস্তোঁরা ও ফাস্ট ফুডের দোকানগুলোতে ভিড় করেন সমাজের উচ্চবিত্তরা। সেখান থেকে তারা বেশি টাকা খরচ করে দামি ইফতার সামগ্রী ক্রয় করে ইফতারি আয়োজন সেরে থাকেন। অন্যদিকে, মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা দামী রেস্তোঁরা ও ফাস্ট ফুডের দোকানেতো ভিড় করা দুরের কথা ফুটপাতের বিভিন্ন হোটেল আর ভাসমান ইফতারির দোকান থেকে ক্রয় করা ইফতার সামগ্রী তাদের একমাত্র ভরসা। সাধ ও সাধ্যের মধ্যে কম টাকায়
মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হওয়ায় ফুটপাত দখল করে বসা অস্থায়ী ইফতারির দোকানগুলোতে ভিড় বেড়েছে। পবিত্র মাহে রমজানের রোজা উপলক্ষে রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজার মনিচত্বর, জিরোপয়েন্ট, নিউমার্কেট, লক্ষ্মীপুর, রেলগেট, বাস টার্মিনাল, নওদাপাড়া বাজার, তালাইমারি মোড়, বিনোদপুর বাজার, ভাটাপাড়া মোড়, ডিঙ্গাডোবা মিশন মোড়, কোর্ট স্টেশন মোড়, কাশিয়াডাঙ্গা মোড়, হড়গ্রাম বাজার, কাদিরগঞ্জ, উপশহরসহ বিভিন্ন এলাকায় বসেছে অস্থায়ী
এসব ইফতার সামগ্রীর দোকান। প্রতিদিনই ইফতারের আগে সাধারণ মানুষ এসব ভ্রাম্যমান অস্থায়ী ইফতারের দোকান থেকে ইফতার কিনতে ভিড় জমায়। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা এসব ইফতারির দোকানে গিয়ে, মুড়ি, ছোলা, পিয়াজু, সিঙ্গারা, চানাচুর, বুন্দিয়া, খেজুর, ডিমের চপ, আলুর চপ, বেগুনি ক্রয় করেন। তারা ইসব ইফতার সামগ্রী ক্রয় করেই খুশি থাকেন। দামি খাবারের প্রতি তাদের কোন ভ্রুক্ষেপই থাকেনা। অথচ তাদের সামনে দিয়েই বিত্তবান মানুষরা দামী ইফতার সামগ্রী ক্রয় করে নিয়ে যান। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১০০ গ্রাম ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়, বেগুনি ১ পিস ৫ টাকা, পিঁয়াজু ১ পিস ৫ টাকা, কিমা ১ পিস ৫ টাকা, ১০০ গ্রাম জিলাপি ১০ টাকা, বুন্দিয়া ১০০ গ্রাম ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাজশাহী মহানগরীর কয়েকজন নামী-দামি রেস্তোঁরা ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে হলে
তারা জানান, বাজারে তাদের বড় রেস্তোঁরা থাকলেও দোকানের সামনে ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসতে হয়। ফুটপাতে না দোকান করলে ভাল বিক্রি হয়না। আর এসব দোকানের ক্রেতারা হলেন নগরীর মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষরা। এদের জন্যই মূলত ভাল ব্যবসা হয়। নিম্ন আয়ের মানুষরা কম দামে ইফতার সামগ্রী ক্রয় করেন। তারা দামী কোন কিছু কিনতে পারেননা। ফলে তাদের জন্যই ফুটপাতের ব্যবসা ভাল হয়। নগরীর কয়েকজন নিম্ন আয়ের মানুষের সাথে কথা হলে এক ব্যক্তি জানান, রমজানের রোজায় ইফতারির সময়ে ছেলে-মেয়েসহ পরিবারের সবাই চায় ভাল কিছু দিয়ে ইফতার করতে কিন্তু সাধ্যের বাইরে তো কিছু করা যায়না। পাড়া-মহল্লার মোড়গুলোর ইফতারির দোকান থেকে পিয়াজু,
ছোলা, আলুর চপ, বুন্দিয়া, বেগুনি, মুড়ি, খেজুর ক্রয় করে ইফতারি সেরে নেওয়া যায়। এগুলোর দামও কম এবং মুখরোচক। তবে ভাজাপোড়া শরীরের জন্য ক্ষতিক্ষর হওয়ায় এবার আমও ইফতারি আয়োজনে যুক্ত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ইচ্ছে করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভাল কোন জিনিস খেতে কিন্তু সাধ্যের মধ্যে না হওয়ায় তা করা সম্ভব হচ্ছেনা। তাই আমরা এসব দিয়েই ইফতারি আয়োজন সারতে পেরে খুশিতেই আছি।
আরেক ব্যক্তির সাথে কথা হলে তিনি জানান, প্রতিদিনের ইফতারিতেই যে ভাজাপোড়া দিয়ে ইফতার করা হয় তা নয়। অনেক সময় সামান্য পানি দিয়েও ইফতারি করতে হয়। ফুটপাতে ইফতার বিক্রেতার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার একটু কম বিক্রি হচ্ছে। তারপরও খুব একটা খারাপ হচ্ছে। বেশি বিক্রি হলে বেশি লাভ হয়।
আর/এস