বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল সভা- সমাবেশ করছে। অন্যদিকে বিএনপি জামাতের নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রতিবাদে আওয়ামী লীগও সভা-সমাবেশ করছেন। দুই পক্ষের মধ্যেই বক্তব্যের মধ্যে হুঁশিয়ারি রয়েছে।
এ নিয়ে মহানগরীতে চলছে টানটান উত্তেজনা। সভা-সমাবেশ থেমে নেই জামায়াত ইসলামী ও তার অঙ্গ সংগঠনের। বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেছেন, এই সরকারের দেশ পরিচালনা করার কোনো অধিকার নেই। সরকারের পদত্যাগ জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। গত ১৪ বছর ধরে এই সরকার নির্মম নির্যাতন করেছে। যার জন্য তাদের পতন সুনিশ্চিত হয়ে গেছে।
গত সোমবার (৩১ জুলাই) বিকেলে রাজশাহী নগরীর ভুবন মোহন পার্কে বিএনপির জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মিজানুর রহমান মিনু বলেন, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বুক পেতে দিয়েছিলেন। কর্মীদের রক্ষায় বলেছিলেন আমার নিজের বুকে গুলি করো। তাকে সেখানে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে ডিবি কর্যালয়ে নিয়ে গিয়ে ছলনা ও প্রতারণা করা হয়েছে। এই সরকার বাংলাদেশের জনগণের মঝে আর নেই।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপি সাবেক সভাপতি ও রাসিকের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নাদিম মোস্তাফা, রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম মার্শাল ও সদস্য সচিব অধ্যাপক বিশ্বনাথ সরকার ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুন অর রশিদ মামুন।
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত আবারও অপতৎপরতা শুরু করেছে। তবে এবার তাদের অগুন সন্ত্রাসের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।
গত রোববার (৩০ জুলাই) বিকেল বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্র, নৈরাজ্য ও অগ্নিসন্ত্রাসের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল শেষে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
কর্মসূচির বিকেল ৫টায় মহানগরীর রানিবাজারে থাকা এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের রাজনৈতিক কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মিছিলে নেতৃত্ব দেন ও প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল।
এদিকে অনুমতি না পেলেও বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার (২৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মহানগরীর গোরহাঙ্গা রেলগেট এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়।
সেখান থেকে শালবাগান এলাকায় গিয়ে মিছিল শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিল থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারেরর অধীনে সংসদ নির্বাচনের দাবি জানানো হয়। এছাড়া জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ বিভিন্ন ঘটনায় কারাগারে আটক নেতাদের মুক্তি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর দাবিতে স্লোগান দেওয়া হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগরের আমির ড. কেরামত আলী। এছাড়াও জামায়াত ইসলামী ও ছাত্র শিবিরের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভ-সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে এর আগে গত মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) জামায়াত নেতারা রাজশাহী মহাগর পুলিশের (আরএমপি) সদর দপ্তরে আবেদন করেন।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোন অবনতি ঘটবে না। সে ব্যাপারে আমাদের কঠোর অবস্থান রয়েছে।
বিএ/