বিশেষ প্রতিবেদক :
রাজশাহীর পুঠিয়া থানার নাশকতা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিদর্শক এসআই পদে চাকুরী পেয়েছেন সিরাজুল ইসলাম ওরফে বাদল। তিনি বর্তমান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বেলপুকুর জামিরা গ্রামের শের আলীর ছেলে। তিনি বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এসআই পদে কর্মরত রয়েছেন। ২০১৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর রেলগেট এলাকা প্রায় ২০০ লোক নিয়ে গাড়ী ভাংচুর করার চার্জশিটভুক্ত আসামী তিনি। তৎকালীন পুঠিয়া থানার মামলা ৫২/১৩। তারপরও সিরাজুল রহস্যজনকভাবে ২০১৭ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদদপ্তরে উপ-পরিদর্শক এসআই পদে চাকুরী পান। নাশকতা মামলার আসামী
হওয়ার পরেও সরকারী চাকুরী পাওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী ইসলামী ঐক্যজোটের স্লোগান দিয়ে প্রায় ২০০ জঙ্গি গাড়ী ভাংচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইলে তারা পুলিশের উপর হামলা করে। পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় তৎকালীন পুঠিয়া থানার এসআই কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ওই দিনই পুঠিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৫২/১৩। মামলায় মোট ৩৩ জনকে আসামী করা হয়। মামলার ধারাগুলো হচ্ছে, ১৪৩. ১৪১, ৩৪৩, ৩২৩ ও ৩৩৩। এরমধ্যে সিরাজুল ইসলাম ১৩ নং আসামী। মামলাটি তদন্ত করেন এসআই মুরাদ হোসেন। মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। মামলার অভিযোগপত্র নং-১১৯ এবং প্রাথমিক তথ্য নং-২৮। আদালতে মামলা দাখিলকারী পুঠিয়া থানার এসআই ডেভিড হিমাদ্রী বর্মা। এদিকে, নাশকতা মামলার
আসামী হওয়ার পরেওই কিভাবে সিরাজুল মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে এসআই পদে চাকুরী পায় এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ সরকারী চাকুরী পাওয়ার সময় পুলিশ ভেরিভিকেশন হয়। কোনো সমস্যা থাকলে পুলিশ রিপোর্ট দেয়। কিন্ত পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এমন একটি পদে চাকুরী পাওয়া অসম্ভব। তারপরও তিনি ২০১৭ সালে চাকুরী পায়। নাশকতা মামলার আসামী হয়েও বর্তমানে তিনি কর্মরত রয়েছেন। জামিরা এলাকার সমির নামের একব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, নাশকতা মামলার আসামী হয়েও থানা পুলিশ এড়িয়ে কিভাবে সিরাজুল চাকুরী পেল তা বোধগম্য নয়। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। এ বিষয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এসআই সিরাজুল ইসলাম ওরফে বাদলের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আপনারাতো সবি জানেন এটাও জেনে নিয়েন। আমি কোনো কিছু জানাতে পারবো না। কিভাবে
চাকুরী পেলেন জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন। এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমান খান বলেন, সিরাজুল ইসলাম ২০১৭ সালে চাকুরী পেয়েছেন। বিষয়টি অবগত করা হলে তিনি বলেন, তিনি কিভাবে চাকুরী পেয়েছেন তা আমরা জানিনা। আমাদের তেমন কিছু করার নেই। আদালত যে রায় দেবেন তাই হবে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ইফতে খায়ের আলম বলেন, ওই এসআই’র বাড়ি আরএমপির মধ্যে হলে বেলপুকুর থানা সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিবে। এ বিষয়ে রাজশাহীর পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খবর ২৪ ঘণ্টা/আরএস