আজহারুল ইসলাম বুলবুল: রাজশাহী রেলওয়ের ডিপো থেকে তেল চুরির সাথে জড়িত থাকার মূলহোতা রবিউল সরদার ইতিমধ্যে আত্মগোপনে রয়েছে। রবিউল সরদার যশোর জেলার নড়াইল উপজেলায় তার বাড়ি। তিনি রাজশাহী কোর্ট অঞ্চলের মোল্লা (মিল) এলাকায় বসবাস করেন। সে রাজশাহী জেলা ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এছাড়াও রাজশাহী জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সভাপতি তিনি।
গত (২৩এপ্রিল) বৃহস্পতিবার রাজশাহী রেলওয়ের কাজে বরাদ্দকৃত ওয়াগানে থাকা ৩০ হাজার লিটার ডিজেল কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সাথে আতাত করে পাচার করছিল রবিউল ইসলাম। এ সময় ৫ হাজার লিটার তেলসহ রবিউল সরদারের ট্যাংকার ট্রাক হাতেনাতে ধরে ফেলেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
এই ঘটনায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা করেন নিরাপত্তাবাহিনীর এসআই আসাদুজ্জামান। পরে সিনিয়র সাব-ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এস.এস.এ.ই/ ইলেক আবুল হাসানসহ ৪ জনকে আটক করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আরএনবি ইন্সপেক্টর আহসান হাবিব।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রবিউল ইসলাম মূলত একসময় রাজশাহীতে লেবারের সরদার ছিলেন। রেলের ডিপোতে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের ম্যানেজ করে স্বল্প মূল্যে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চোরায় তেল ক্রয় করে আসছেন। এ ভাবে অবৈধভাবে তিনি শতশত কোটি টাকা কামিয়েছেন। হয়েছেন আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ। সে বর্তমানে দুটি পেট্রোল পাম্পসহ গড়েছেন বিপুল ধন সম্পদ।এছাড়াও রাজশাহীতে রয়েছে তার ১৮ টি ট্রাক, ১২ টি লরি, ৩টি তেলের ডিপো। তেল পাচারের সুবিধার্তে করেছেন তিনটি লাইসেন্স। স্ত্রীর নামে তামান্না এন্টারপ্রাইজ, ম্যানেজারের নামে রিপন এন্টারপ্রাইজ ও নিজের নামে সরদার পেট্রলিয়াম এজেন্সি
।একটি সুত্রে জানায় , রবিউল সরদার বেশির ভাগ সময় দুটি চেম্বারে পে অর্ডারের মাধ্যমে তেল গ্রহণ করেন ও অবশিষ্ট একটি চেম্বারে চুরি করা তেল পাচার করেন। এতে ধরা পরার সম্ভাবনা থাকে খুবই কম বলে জানান। তেলের ডিপোতে যেসকল লেবার কাজ করে তারা সকলেই রবিউল সরদারের লোক।
শুধূ এখানেই শেষ নয়, এর আগে রাজশাহীতে বাফার গোডাউনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামীম হোসেনে সাথে যোগ-সাজস করে কৃষকের সার নিয়ে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন । এ ঘটনায় রবিউলের বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত করছে বলেও জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের একটি ওয়াগান থেকে তেল চুরির সময় একটি ট্যাংকার ট্রাক হাতেনাতে জব্দ করেন রেলওয়ের আরএনবির সদস্যরা। এ সময় তিনজনকে আটক করা হয়। ঘটনার সাথে জড়িত উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুল হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে আরএনবির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে আবদুল হাসানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলার ৩ আসামি এখনও পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন, যমুনা পেট্রোলিয়াম কোম্পানীর সহকারী ম্যানেজার আশফাকুল ইসলাম, তেল ক্রেতা (মুলহোতা) রবিউল সরদার ও ট্রাক চালক বাবু আলী খান। তাদেরকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে জানিয়েছেন আরএনবি।
এদিকে তেল চুরির ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে পশ্চিম রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।