নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে অনলাইনে অশ্লীর ভিডিও চ্যাটিংয়ের দায়ে দুই নারীসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলো, নাটোরের আলাইপুরের খলিলুর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫), চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের হযরত আলীর মেয়ে হাবিবা খাতুন (১৮) ও একই উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের সুমন হোসেনের মেয়ে মোছা. সুরভী (১৮)। ৮ মে বুধবার রাত ১১টার দিকে পুলিশ গোদাগাড়ী পৌরসভার মেডিকেল মোড়ের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, তিন মাস আগে মেহেদী হাসান এবং ওই দুই নারী গোদাগাড়ী পৌরসভার
মেডিকেল মোড় এলাকার মজিবুর রহমান মাস্টারের বাড়িতে দু’টি কক্ষ ভাড়া নেয়। কিন্তু বাড়িতে ওঠার পর তারা বাইরে বের হতো না। আশেপাশের মানুষের সঙ্গেও মিশতো না। তবে তারা দু’টি কক্ষে ওয়াইফাই নেট কানেকশন নিয়েছিল। সন্দেহ হওয়ায় এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বিষয়টি পুলিশকে অবগত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ৮ মে রাত ১১টার দিকে সেখানে অভিযান চালায়। অভিযান চালিয়ে দুই নারীসহ তিনজনকে আটক করে। আটককৃতরা বিভিন্ন অপারেটরের ৩৫টি সিম ইন্টারনেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছে। সেখানে আগ্রহী কল করতে যৌন আকর্ষণ ছবি ও ছোট ভিডিও টিজার পোস্ট করে। বিকাশে টাকা দিলে তারা ভাইবার, ইমো, ম্যাসেঞ্জারসহ বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময় ভিডিও
চ্যাটিং করে। এমনকি তারা বিদেশিবিভিন্ন চ্যাটিং সাইটে যুক্ত হয়েও নগ্ন ভিডিও চ্যাটিং করে আসছিল। তাদের বহরে লোক বাড়াতে মোটা অংকের বেতনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করছিল এই চক্র। সেখানে গিয়ে তাদেরকে অশ্লীল ভিডিও চ্যাটিং করা অবস্থায় হাতেনাতে ধরি। তাদের কাছে থাকা দুইটি ল্যাপটপ, একটি কম্পিউটার, বিভিন্ন কোম্পানির ৩৫টি সিম কার্ড, ২৫টি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র জব্দ করা হয়েছে। তারা শুধু ভিডিওতে নয়, ইন্টারনেটে নম্বর ছড়িয়ে ফোনে অশ্লীল কথাবার্তা বলে মানুষের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিতো। এছাড়া বিদেশি বিভিন্ন সাইটে তারা ঘণ্টা অনুযায়ী চুক্তিভিত্তিক নগ্নভাবে চ্যাটিং করতো। তারা নতুন করে ‘চ্যাটিং জব’ এর জন্য
সুন্দরী নারী খুঁজতে বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছে; যাতে দিনে ১০ ঘণ্টা ভিডিও চ্যাটিংয়ের বিনিময়ে ২৩ হাজার ৮০০ টাকা বেতন দেওয়ার লোভনীয় অফার দেওয়া হয়েছে। এর কয়েক কপি ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ছেলেটির বিরুদ্ধে প্রতারণা ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করা হবে। তিনি আরো বলেন, আটক ছেলেটি টাকার লোভ দেখিয়ে প্রথমে হাবিবাকে নিয়ে আসে। তার বয়স কম ও সে প্রতিবন্ধী। এরপর সুরভীকে নিয়ে আসে। তারা দুজনই গরীব। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় রাখা হয়েছে। তাদের ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।
আর/এস