নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন পয়েন্টের চেকপোস্টগুলোতে পুলিশ মোটরসাইকেল ছাড়া অন্য কোন যানবহনের কাগজপত্র চেক করেন না। এ নিয়ে সাধারণ মানুষ ও মোটরসাইকেল চালকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। পুলিশ চেকপোস্টে শুধু রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী মোটরসাইকেল চালকদের থামিয়ে গাড়ীর কাগজপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও হেলমেট আছে কিনা তা চেক করে। কিন্তু রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, ইমা, থ্রি-হুইলার, সিএনজি, টেম্পু, মিশুক ও ট্রাকসহ বাসের কোন কাগজপত্র দেখেন না। আবার সব মোটরসাইকেল চালকদেরও তারা থামিয়ে গাড়ীর কাগজপত্র আছে কিনা তা চেক করেন না। হেলমেট পরিহিত থাকলেই সেই মোটরসাইকেলকে আর আটকানো হয় না। সেই মোটরসাইলের কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা বা তার ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে কিনা তাও দেখা হয় না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ নগরীর প্রবেশপথ ও গুরুত্ব এলাকাগুলোতে নিয়মিত চেকপোস্ট বসিয়ে যানবহনের কাগজপত্র দেখে। পুলিশ চেকপোস্ট হলেও শুধু তারা অন্য যানবাহন না ধরে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র পরীক্ষা করে।
নগরীর প্রবেশপথ ও নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা কাশিয়াডাঙ্গা মোড়, সিটি বাইপাস মোড়, রেলগেট, নওদাপাড়া মোড়, তালাইমারী মোড়, ফায়ার সার্ভিস মোড়, টিবিপুকুর মোড়, রাজশাহী চিড়িয়াখানা মোড়, কোর্ট ঢালান, কোর্ট স্টেশন মোড়।
এ ছাড়া নগরীর অন্যান্য এলাকাগুলোতে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনের কাগজপত্র দেখে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কোন চেকপোস্টেই পুলিশ মোটরসাইকেল ছাড়া অন্য যানবাহনের কাগজপত্র চেক করে না।
আবার চেকপোস্টে পুলিশ হেলমেট পরিহিত মোটরসাইকেল চালককে থামার সংকেত দেয় না। যে কারণে অনেক রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেল ও ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া চালক বিনা বাধায় পার পেয়ে যাচ্ছে।
এ ছাড়া চালকদের পক্ষ থেকে আরো অভিযোগ রয়েছে, চেকপোস্টে পুলিশ কনস্টেবলরা মোটরসাইকেল আরোহীর সাথে খারাপ আচরণ করেন। অনেক সময় চড়াও হন বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন মোটরসাইকেল চালক অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েকদিন আগে তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে নগরীর সিটি বাইপাস এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেখানে পুলিশের চেকপোস্ট চলছিল। আমাকে থামার সংকেত না দিয়েই একজন পুলিশ কনস্টেবল এসে মোটরসাইকেল থেকে চাবি নিয়ে চলে যায়। পরে আবার তর্কে জড়িয়ে পড়ে বিভিণ্ন ধরণের গালি-গালাজ করেন। তিনি আরো বলেন, আমাকে থামতে বলে আমি থেমে যেতাম। যেভাবে চাবি কাড়া হয়েছে মনে হয়েছে আমি একজন চোর।
আরেক ব্যক্তি নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, আমার সব কাগজপত্র ছিল। হেলমেট না থাকায় মামলা দেওয়া হয়েছে। সেটা সমস্যা নেই। কিন্তু হেলমেট পরিহিত কাউকে ধরা হয় না। যাদের কাগজপত্র নেই তাদেরও ধরা হয় না। যার কারণে বিনা বাধায় তারা পার পেয়ে যাচ্ছে। নগরীতে প্রাইভেট কারসহ অন্যান্য চালক ঘুরে বেড়ালেও তাদের হয় না। তাদের অদক্ষতার কারণে মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে। তাই তিনি তাদেরও গাড়ীর কাগজসহ ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে কিনা তা দেখার অনুরোধ জানান পুলিশ প্রশাসনের প্রতি।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হেমায়েত উল্লাহ বলেন, পুলিশ চেকপোস্টে সব ধরণের যানবাহনের কাগজ ও চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ঠিক আছে কিনা তা দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু মোটরসাইকেল নয় অন্য অন্য যানবাহনের কাগজ দেখার জন্য বলা হয়েছে। আর পুলিশ সদস্যদের মানুষের সাথে ভাল ব্যবহার করার জন্য প্রতিনিয়ত বলা হয়। হেলমেট পরিহিত থাকলে একটু কম ধরা হয়। তবে কাউকেই ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়নি।
খবর২৪ঘন্টা/নই