নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী মহানগরীর প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্সের রাজশাহী রিজিওনাল অফিসে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারনের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, জয়পুরহাট জেলার সতিঘাটা এলাকার আব্দুল রহিম মোল্লা’র ছেলে সোহেল রানা ওরফে একরাম (২৫) ও বাগমারা উপজেলার শ্রীপুর এলাকার মানু কাজি’র ছেলে জয়নাল আবেদীন (৩৬)।
এদের মধ্যে জয়নাল আবেদীন প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্স লিমিটেডের রাজশাহী বিজিওনাল কো-অডিনেটর ও ইসলামী তাকাফুল বীমা ডিভিশনের রাজশাহীর ইনচার্জ
পদে কর্মরত আছেন। জয়নাল আবেদীনের সাথে বন্ধুত্ব থাকায় একরাম নগরীর আলোকার মোড়স্থ প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্স লিমিটেডের রাজশাহী বিজিওনাল অফিসের একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস করতো।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, বিগত প্রায় ৬ বছর আগে একরামের সাথে ওই কলেজ ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের সুবাদে একরাম তার
প্রেমিকা কলেজ ছাত্রীকে নিয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে ঘুরে বেড়াতো। বিষয়টি কলেজ ছাত্রীর পরিবারের লোকজন জানতে পেরে একরামকে নানা ভাবে বুঝিয়ে
সতর্ক করে দেয়া হয়।
তারপরেও একরাম কলেজ ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের কথা অমান্য করে তার সাথে সম্পর্ক চালিয়ে যায়। পরে এ ব্যাপারে স্থানীয় এক
ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছে মেয়ের পরিবারের লোকজন অভিযোগ দেয়।
এ প্রেক্ষিতে চলতি বছরের আগষ্ট মাসের ১০ তারিখে একরামকে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অফিসে ডাকা হলে সে ভবিষ্যতে ওই কলেজ ছাত্রীর সাথে কোন ধরনের যোগাযোগ রাখবেনা বলে অঙ্গিকার নামায় সাক্ষর করে।
আর অঙ্গিকার নামায় সাক্ষী হিসেবে সাক্ষর করেন ইন্সুরেন্স কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন।
এ ঘটনার জের ধরে একরাম ওই কলেজ ছাত্রীকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে ইন্সুরেন্স অফিসে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে এবং তা মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে।
ধর্ষণের ভিডিও একরাম পরবর্তীতে তার বন্ধু ইন্সুরেন্স কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনকে দেখায় ও তার মোবাইলে কপি করে রাখে।
এর আগেও একরাম ও জয়নাল শহরের বিভিন্ন মেয়েদের নানা প্রলোভন দিয়ে অফিসে নিয়ে গিয়ে তাদের সাথে অসামাজিক কার্যকলাপ করতো।
বিষয়টি গত শনিবার মেয়ের পরিবারের লোকজন জানতে পারলে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযোগটি তদন্ত করতে গিয়ে মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাছির আহম্মেদ ঘটনার সত্যতা পান ও গোপনে সেই ভিডিও ক্লিপটি সংগ্রহ
করে।
পরে গত রোববার রাতে ধর্ষক একরাম ও ধর্ষণের ঘটনায় সহায়তা প্রদানকারী ইন্সুরেন্স কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনকে গ্রেফতার করে থানায় পাঠিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমান উল্লাহ জানান, কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ ও তা ভিডিও ধারনের ঘটনায় রোববার রাতে দু’জনকে
গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছিলো। মেয়ের মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে, তাদের ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে
কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে