খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার যুদ্ধে যারা সরাসরি অংশ নিচ্ছেন তাদের অন্যতম পুলিশ। এরই মধ্যে পুলিশের নয় শতাধিক সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন ভাইরাসটিতে। মারা গেছেন পাঁচ সদস্য। বাহিনীটিতে করোনা সংক্রমণ এত বেশি কেন এর কারণ জানিয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর। তারা বলছে, ব্যারাকে স্বল্প জায়গার মধ্যে গাদাগাদি করে থাকা, পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে বাড়ছে সংক্রমণ।
এত ঝুঁকি সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের পাশে থেকে পুলিশের দুই লক্ষাধিক সদস্য কাজ করছেন জানিয়ে পুলিশ সদরদপ্তর বলছে, পুলিশিং একটি ইউনিক প্রফেশন। এই প্রফেশনে থেকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে থেকে যে মেলামেশার সুযোগ রয়েছে তা অন্য কোনো প্রফেশনে নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই দিকটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। কোয়ারেন্টাইন এবং আইসোলেশন নিশ্চিত করতে পুলিশকে মানুষের বাড়ি বাড়ি যেতে হয়েছে। কারণ এগুলো মানুষের খুব কাছে থেকে নিশ্চিত করতে হয়। পাশিপাশি যখন কোনো রোগীর চিকিৎসা প্রয়োজন তাকে হাসপাতালে নেয়া প্রয়োজন, সেগুলোও পুলিশকে করতে হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে যানবাহনের একটু সংকট রয়েছে, তাই পুলিশের গাড়িতে করে রোগীদের পৌঁছে দিতে হয়েছে। এমনকি তাদের চিকিৎসাটাও সুনিশ্চিত করতে পুলিশ কাজ করছে।
সদরদপ্তর আরও বলছে, দ্রব্যমূল্য, কালোবাজারি নিয়ন্ত্রণ করা দরকার তখনও খুব কাছে থেকে মানুষের জন্য পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠানে ব্যাপক মানুষের সমাগম, গার্মেন্টস কিংবা অন্য পেশার মানুষ যখন সমবেত হচ্ছেন, বিক্ষোভ করছেন সেই পাবলিক অর্ডার ম্যানেজ করতে মানুষের মাঝে যেতে হচ্ছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রেও খুব কাছ থেকে তাকে স্পশ না করে তাকে ধরা সম্ভব না। করোনায় কেউ মারা গেলে তার সৎকার, জানাজা, দাফনে পুলিশকে যেতে হচ্ছে। কিন্তু তাৎক্ষণিক নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।
পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) মীর সোহেল রানা মঙ্গলবার রাতে ভিডিও বার্তায় বলেন, আমাদের কোনো সদস্য যখন আক্রান্ত হচ্ছেন তখন অন্য সদস্যের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। ‘ফোর্স’ যারা ব্যারাকে থাকেন সেখানে স্বল্প স্পেসে থাকতে হয়েছে। তার মধ্যেও মান উন্নত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। একসঙ্গে থাকার কারণে পরিস্থিতিতে তাদের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। চেষ্টা করা হচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের নিরাপদ দূরত্বে বিছানাসহ প্রয়োজন সবকিছুর। তারপরও পেশাগত বৈচিত্র্যের কারণে বাড়তি কিছু ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। এসব কারণে পুলিশের করোনা সংক্রমনের হার বেশি। পুলিশ সদস্যরা দেশ ও মানুষকে ভালোবেসে ঝুঁকি নিচ্ছে। সুরক্ষা সামগ্রী পেতে বিলম্ব হচ্ছে একারণে তারা ঘরে বসে থাকছে না।
দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৯২৯ জনে। এরমধ্যে মারা গেছে ১৮৩ জন। আক্রান্তের সংখ্যার দিক দিয়ে মঙ্গলবারই সর্বোচ্চ ৭৮৬ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে।
খবর২৪ঘন্টা/নই