ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় গলিত ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিহীন অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ওই নারীর নাম রাবেয়া ইসলাম রাবু (৩৩)। তিনি জেলার নবীনগর উপজেলার রসুল্লাবাদ গ্রামের মৃত আলী আজম সরকারের মেয়ে ছিলেন। মাদক ব্যবসার জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (৭ জুলাই) সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের কাশিরামপুর গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার ছেলে সামসুল ইসলাম প্রকাশ মিন্টু (৪৮), একই ইউনিয়নের রঘুরামপুর দক্ষিণপাড়ার মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে মো. আবদুল আলীম (৪২) ও একই গ্রামের মৃত সামসু মিয়ার ছেলে মো. কুডু মিয়া (৩৮)।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) সোনাহর আলী বলেন, গত ২ জুলাই কসবা উপজেলার বায়েক ইউপির কাশিরামপুরে পাহাড়ের ঢালে বাঁশ ঝাড়ের ভেতর থেকে মাথাবিহীন অর্ধগলিত একটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহটির হাত ও পায়ের তালুতে চামড়া না থাকায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। দৈহিক গড়ন পর্যালোচনা করে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়, এটি এক নারীর মরদেহ। ৫ থেকে ৭ দিন পূর্বে হত্যা করা হয়েছে, এমন ধারণা করেই তদন্ত কার্যক্রম চালানো হয়। পরবর্তীতে ঘটনাস্থল তল্লাশি করে কিছু আলামত পাওয়া যায় এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নিহত নারীর নাম-পরিচয় পাওয়া যায়। তার পরিবারের লোকজনকে সংবাদ দিলে তারা এসে মরদেহ শনাক্ত করে। এই ঘটনায় অজ্ঞাত আসামি করে নিহত রাবেয়া ইসলাম রাবুর ভাই বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।’
তিনি বলেন, পুলিশ তদন্তে বায়েক ইউপির চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী সামসুল ইসলাম প্রকাশ মিন্টুকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কসবা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আব্দুল আলীম ও মো. কুডু মিয়াকে। শনিবার ৬ জুলাই বিকেলে তারা সবাই আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, পুলিশের কাছে তিন আসামি জানিয়েছেন তারা তিনজনই মাদক ব্যবসায়ী। নিহত রাবেয়া ইসলাম রাবু মাদক পরিবহন করে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতেন। বেশ কিছুদিন আগে রাবু তাদের কাছ থেকে ১২ কেজি গাঁজা নিয়ে যান সরবরাহ করতে। কিন্তু সেই গাঁজার টাকা আর ফেরত দেননি রাবু। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলে আসছিল। এরই জেরে রাবুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তারা।
গত ২৫ জুলাই রাবু কসবায় আবারও মাদক নিতে আসলে সামসুল ইসলাম প্রকাশ মিন্টু, আব্দুল আলীম ও মো. কুডু মিয়া তাকে ধরে বায়েকের সীমান্তবর্তী একটি পাহাড়ে নিয়ে যান। সেখানে রাবুকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে একটি বাঁশ ঝাড়ের ভেতর ফেলে চলে যান। নীরব এলাকা হওয়ায় মরদেহটি কারও নজরে পড়েনি। একসপ্তাহ পর স্থানীয়রা বাঁশ ঝাড়ে মরদেহটি দেখতে পেয়ে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে।
বিএ…