আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে মরণঘাতী করোনাভাইরাস। ভাইরাসটিতে এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ৮ লাখেরও বেশি মানুষ। প্রাণ গেছে সাড়ে ৩৯ হাজার মানুষের। গোটা বিশ্ববাসীই এখন করোনার ভয়ে আতঙ্কিত। অনেকেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় কোয়ারেন্টাইনে ও আইসোলেশনে আছেন, যার মধ্যে রয়েছে বিশ্বের অনেক দেশের শীর্ষ নেতারাও।
চলুন দেখে নেয়া যাক এমন কয়েকজন নেতাকে, যারা করোনাভাইরাসের কারণে কোয়ারেন্টাইনে বা আইসোলেশনে রয়েছেন।
১. বরিস জনসন (যুক্তরাজ্য)
করোনায় আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সম্প্রতি করোনা ধরা পড়ে তার। তবে কোয়ারেন্টাইনে থাকলেও ডিডিও কন্ফারেন্স ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
২. প্রিন্স চার্লস (যুক্তরাজ্য)
যুক্তরাজ্যের রাজ পরিবারের সদস্য প্রিন্স চার্লস। করোনায় আক্রান্ত হয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন তিনিও। তবে ধীরে ধীরে ৭২ বছর বয়সী এই যুবরাজ সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকেরা।
৩. রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ (যুক্তরাজ্য)
ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তিনি করোনায় আক্রান্ত হননি। কিন্তু ভয়াবহভাবে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা থেকে বাঁচতে বিশেষ করে তার নিজের ছেলে প্রিন্স চার্লস করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তিনি নিজেও কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
৪. রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন (থাইল্যান্ড)
করোনায় আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা পেতে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন। সম্প্রতি জার্মানির একটি গোটা হোটেল ভাড়া নিয়ে সেখানে নিজের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ২০ জন রক্ষিতাকে নিয়ে কোয়ারেন্টাইন পালন করছেন তিনি।
তবে তার এই ব্যতিক্রম উপায়ে কোয়ারেন্টাইন পালন নিয়ে নিজের দেশ থাইল্যান্ডে এরই মধ্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
৫. অ্যাঙ্গেলা মেরকেল (জার্মানি)
করোনা আতঙ্কে সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। তবে কোয়ারেন্টাইনে থাকলেও সেখান থেকে সব ধরনের দিক নির্দেশনা প্রদান করছেন তিনি।
৬. জাস্টিন ট্রুডো (কানাডা)
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তার স্ত্রী সোফি গ্রেগরি ট্রুডো সম্প্রতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি নিজেও কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। সেখান থেকেই সাধারণ জনগণকে করোনার বিরুদ্ধে লড়তে সাহসযুগিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
৭. বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু (ইসারায়েল)
কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সোমবার তার এক নিকট সহযোগীর করোনা ধরা পড়ার পর তিনি নিজেও কোয়ারেন্টাইনে চলে গেছেন।
৮. জেইর বলসোনারো (ব্রাজিল)
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বলসোনারোর যোগাযোগ সচিব করোনায় সংক্রমিত হওয়ায় প্রেসিডন্ট নিজের টেস্ট করিয়েছেন। তার টেস্টের ফল এখনো জানা যায়নি। বলসোনারোই কয়েক সপ্তাহ আগে করোনা সংকটকে ‘উদ্ভট কল্পনা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
৯. পিটার ডটন (অস্ট্রেলিয়া)
অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার ডটন করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। শুক্রবার জ্বর জ্বর অনুভব করায় দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরীক্ষার পর করোনা ধরা পড়ে। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে আছেন।
১০. ইভানকা ট্রাম্প (যুক্তরাষ্ট্র)
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কন্যা ও হোয়াইট হাউজের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ইভানকা ট্রাম্প গত শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার ডটনের সঙ্গে বৈঠক করেন। পিটার ডটনের করোনা ধরা পড়ার পর কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ইভানকাও।
১১. নাদিন ডোরিয়াস (যুক্তরাজ্য)
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং কনজারভেটিভ এমপি নাদিন ডোরিয়াস করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। নিজ বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে আছেন তিনি। তার সঙ্গে দেখা করায় লেবার এমপি মাস্কেলকেও কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে।
১২. ফ্রঁঙ্ক রিয়েস্তা (ফ্রান্স)
ফ্রান্সের সংস্কৃতিমন্ত্রী ৪৬ বছরের ফ্রঁঙ্ক রিয়েস্তা করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ফরাসি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কোয়ারেন্টাইনে তিনি ভালো আছেন।
এক মন্ত্রণালয়ে আক্রান্ত ২৪
দক্ষিণ কোরিয়ার সমুদ্র ও মৎস মন্ত্রণালয়ে ২৪ জন কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
এছাড়া ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ বেশ দেশটির কয়েকজন উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে।
খবর ২৪ ঘন্টা/ বিআ