আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ পুনরুদ্ধার অভিযানে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার পর স্বাগতিক ভারতের কাছে হেরে বিদায়ের শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে দলটার নাম যখন অস্ট্রেলিয়া তখন এত সহজেই যে তারা হেরে যাওয়ার পাত্র নন, পরের দুই ম্যাচ জিতে তা বুঝিয়ে দেয় পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
শ্রীলঙ্কাকে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে জয়ের ধারায় ফেরার পর পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬২ রানে জিতেছিল অজিরা। এবার প্রোটিয়াদের হারিয়ে অঘটনের জন্ম দেওয়া নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বিশ্বকাপের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জিতল প্যাট কামিন্সের দল।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৯৯ রান করেছে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে রান তাড়ায় অ্যাডাম জাম্পার বোলিং তোপে মাত্র ৯০ রানেই গুঁটিয়ে যায় ডাচরা।
এতে নেদারল্যান্ডসকে ৩০৯ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জিতল অস্ট্রেলিয়া। এর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপে আফগানিস্তানকে ২৭৫ রানে হারিয়েছিল সেই অস্ট্রেলিয়াই। এবার জয়ের ব্যবধানটা বাড়ানোর সঙ্গে পয়েন্ট টেবিলে সেরা চারে উঠল অজিরা।
এদিন টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। এরপর ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে ১১৮ বলে ১৩২ রানের জুটি গড়েন স্টিভ স্মিথ। আউট হওয়া স্মিথ এদিন ফেরেন ৬৮ বলে ৯টি চার আর এক ছক্কায় ৭১ রান করে।
স্মিথ আউট হওয়ার পর মার্নাস লাবুশেনের সঙ্গে ৮৬ বলে ৮৪ রানের জুটি গড়েন ডেভিড ওয়ার্নার। ৪৭ বলে সাত চার আর ২ ছক্কায় ৬২ রান করে ফেরেন লাবুশেন। ১২ বলে মাত্র ১৪ রানে ফেরেন জশ ইনজিলস।
ইনিংসের শুরু থেকে ব্যাটিং তাণ্ডব চালিয়ে যাওয়া ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ফেরেন দলীয় ২৬৭ রানে। তার আগে ৯৩ বলে ১১টি চার আর ৩ ছক্কায় করেন ১০৪ রান। চলতি বিশ্বকাপে এটা তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।
আগের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে করেন ১২৪ বলে ১৬৩ রান। তবে বিশ্বকাপে শচীন টেন্ডুলকারের মতো যৌথভাবে ৬টি করে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ওয়ার্নার। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ৭টি সেঞ্চুরি করেছেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা।
ইনিংস শেষ হওয়ার মাত্র ১১ ওভার আগে ছয় নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে রীতিমতো তাণ্ডব চালাতে থাকেন ম্যাক্সওয়েল। সপ্তম উইকেটে প্যাট কামিন্সের সঙ্গে মাত্র ৪৪ বলে ১০৩ রানের জুটি গড়েন ম্যাক্সওয়েল।
এই জুটিতেই ৪০ বলে সেঞ্চুরি করে বিশ্বকাপে বিশ্ব রেকর্ড গড়েন ম্যাক্সওয়েল। তিনি ৪৯.৩ ওভারে দলীয় ৩৯৩ রানে আউট হওয়ার আগে মাত্র ৪৪ বলে ৯টি চার আর ৮টি ছক্কায় ১০৬ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন। এতে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৮ উইকেটে ৩৯৯ রানের পাহাড় গড়ে অস্ট্রেলিয়া।
এরপর ৪০০ রানের প্রায় অসম্ভব এক লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার বোলিং তোপের মুখে পড়ে নেদারল্যান্ডস। এতে ২১ ওভারে মাত্র ৯০ রানেই গুটিয়ে গেছে ডাচদের ইনিংস। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন ওপেনার বিক্রমজিৎ সিং। দলের বাকিরা কেউ বিশের ঘরও ছুঁতে পারেননি।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে লেগস্পিনার অ্যাডাম জাম্পা ৩ ওভারে মাত্র ৮ রান দিয়ে একাই নিয়েছেন ৪টি উইকেট। ২টি উইকেট শিকার মিচেল মার্শের। এছাড়া মিচেল স্টার্ক, জস হ্যাজেলউড ও প্যাট কামিন্স ১টি করে উইকেট পান।
বিএ…